আমদানির পরও অস্থিরতা কাটছে না কাঁচামরিচে
ধীরে ধীরে আমদানি বাড়লেও কাঁচামরিচের বাজার স্বাভাবিক হচ্ছে না। একবার কমে যাবার পর আবারও ঢাকায় ৪০০-৫০০ টাকা কেজি দরে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকার খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে জানা যায়, দু'দিন আগেই আমদানি ও ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানের চাপে পাইকারী বাজারে কাঁচামরিচের দাম নেমে আসে ২০০-২২০ টাকার মধ্যে, যা গত বুধবার থেকে আবারও বাড়তে বাড়তে ২৫০-২৮০ টাকায় পৌঁছে। পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধির প্রভাবে খুচরা বাজারেও পণ্যটির দাম ২৮০-৩৫০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৪০০-৫০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারের চিত্র এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে, যে যেভাবে পারছে, সেভাবেই দাম নিচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা আরিফুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, 'দেশে কাঁচামরিচের সরবরাহ কম, আমদানি করা মরিচের দামও বেশি পড়ছে। যে কারণে দাম বাড়ছে।'
অবশ্য আরেক পাইকারি বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিবিএসকে বলেন, 'দেশে সরবরাহ কম থাকায় আমদানিকারকরা সুযোগ থাকা সত্ত্বেও দ্রুত আমদানি করছে না এবং তারা আমদানি কম হওয়ার বিষয়টি ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রচার করার চেষ্টা করছেন। যে কারণে দ্বিতীয় দফায় মরিচের বাজার অস্থির হচ্ছে।'
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং এর তথ্য বলছে, ২৫ জুন থেকে শুরু করে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৫১৩৮০ মে. টন কাঁচামরিচ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর বিপরীতে মরিচ আমদানি হয়েছে ৫২৮.৫৯ মে. টন। ধারাবাহিকভাবে সরবরাহ বাড়লেও বাজারে উল্টো চিত্র বিরাজ করছে।
ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খান বলেন, 'ঢাকা ও চট্টগ্রামের বড় ব্যবসায়ীরা কাঁচামরিচ আমদানি করে নিয়ে যাচ্ছেন। যে কারণে স্থানীয় বাজারগুলোতে সরবরাহ ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। যখন কোন একটা স্থানীয় বাজারে ঘাটতি হচ্ছে সেখানে দাম বাড়ছে এবং এই খবর ছড়িয়ে পড়লে তার প্রভাব সারাদেশেই পড়ছে।'
জানা যায়, ঈদের আগে হঠাৎ করেই সারাদেশে কাঁচামরিচের দাম বাড়তে শুরু করে। ১৪০-১৫০ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে কাঁচামরিচ ঢাকায় প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হয়, ঢাকার বাইরে কোথাও কোথাও গুজবের কারণে দাম উঠে যায় ৭০০-৮০০ টাকায়।
এই বাজার সামাল দিতেই কৃষি মন্ত্রণালয় গত ২৫ জুন মরিচ আমদানির অনুমতি দেওয়া শুরু করে। তবে ঈদের ছুটিতে স্থলবন্দরগুলো ৫ দিন বন্ধ থাকায় আমদানিও বন্ধ হয়ে যায়। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা বাজারে চরম অস্থিরতা তৈরি করে।
প্রতিদিনের মতো ভোক্তা অধিদপ্তর বৃহস্পতিবারও কাঁচামরিচের বাজারে মনিটরিং করে। সারাদেশে কাঁচামরিচের দাম বেশি নেওয়ার কারণে ৯০টি প্রতিষ্ঠানকে ৬ লাখ ৫৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। তারপরও বাজারে অস্থিরতা কাটছে না।