চিনি আমদানির শুল্ক কমিয়ে অর্ধেক করলো এনবিআর
অপরিশোধিত ও পরিশোধিত চিনি আমদানির শুল্ক কমিয়ে আগের তুলনায় অর্ধেক নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এখন থেকে প্রতি টন অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে ১৫০০ টাকা শুল্ক দিতে হবে, যা আগে ছিলো ৩০০০ টাকা। আর পরিশোধিত প্রতি টন চিনি আমদানিতে শুল্ক দিতে হবে ৩০০০ টাকা, যা ছিলো ৬০০০ টাকা।
এনবিআর বুধবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নতুন করে নির্ধারণ করা এই শুল্ক ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
তবে চিনি পরিশোধন ও বাজারজাতকারী কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, চিনির দামে শুল্ক কমানোর বিশেষ কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ পণ্যটি আমদানি, পরিশোধন, বাজারজাতকরণের অন্যান্য খরচ একই থাকছে। শুধু ১০০০ কেজি চিনি আমদানিতে ১৫০০ টাকা শুল্ক কম দেওয়া লাগবে। এই শুল্ক কমানোর কারণে প্রতি কেজিতে দেড় টাকা খরচ কমবে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে দাম কমার পরিবর্তে বাড়তেও পারে বলে মনে করছেন তারা।
এ বিষয়ে মেঘনা গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) তসলিম শাহরিয়ার টিবিএসকে বলেন, শুল্ক কমানোর ফলে প্রতি কেজিতে দাম দেড় টাকা পর্যন্ত কমবে।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, বুধবার রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজি চিনি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০.৪৫% বেশি।
দেশে বছরে প্রায় ২০ লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। নিত্যদিনের এই পণ্যটি পুরোপুরিই আমদানিনির্ভর। সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, দেশবন্ধু গ্রুপ সহ হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি ব্রাজিল, আর্জেটিনা, ভারত থেকে অপরিশোধিত চিনি আমদানি করে বাজারজাত করে থাকে।
চাহিদার বেশিরভাগ চিনি ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন শিল্প খাতে। বিশেষ করে ওষুধ, বেকারি, মিষ্টি ও মিষ্টিজাত দ্রব্য, আইসক্রিম খাতে চাহিদার বড় অংশ চলে যায়।
বেসরকারি খাতের কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক সংস্থা টিসিবি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে চিনি সংগ্রহ করে সাশ্রয়ী দামে এক কোটি পরিবারকে মাসে ২ কেজি করে সরবরাহ করছে।
কিন্তু পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে টিসিবির সরবরাহ বিশেষ কোনো ভূমিকা রাখছে না বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষকরা। অনেকদিন ধরেই দেশে চিনির বাজার অস্থির। কোনো সময়ে ডলারের উচ্চ দর, কোনো সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি, কোনো সময়ে পরিবহন খরচ বৃদ্ধির মত অজুহাতে এর দাম বেড়ে যায়। সরকার দাম নিয়ন্ত্রণে শুল্ক কমানো, বন্দর থেকে দ্রুত খালাস, মার্জিন ছাড়া আমদানি এলসি খোলার সুযোগ সহ বিভিন্ন সুবিধা দিলেও জনসাধারণ তার সুবিধা পায় না।