অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ৫ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণ ৫% এর কম
দেশের ব্যাংকগুলো চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) কৃষি ঋণ বিতরণে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেকখানি পিছিয়ে রয়েছে, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর সময়ে কৃষকদের মাঝে ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করেছে ১১,৯৬০ কোটি টাকা, যা এ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার ৩৪.১৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে খাদ্য উৎপাদন প্রসারে কৃষিখাতে ৩৫,০০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রতিবেদন দেখা যায়, অর্থবছরের এই চার মাসে ৫টি ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার ৫ শতাংশের কম ঋণ বিতরণ করেছে। এরমধ্যে দুটি ব্যাংক কৃষি খাতে ঋণ বিতরণে পুরোপুরি ব্যর্থতা দেখিয়েছে। সিটিজেন ব্যাংক এবং বিদেশি ওরি ব্যাংক কৃষি ও পল্লী খাতে কোনো ঋণ বিতরণ করতে পারেনি।
এছাড়া, তিনটি ব্যাংক এখন পর্যন্ত ৫ শতাংশও ঋণ বিতরণে ব্যর্থ হয়েছে। এ ব্যাংকগুলো হচ্ছে– পদ্মা ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।
চলতি অর্থবছরের প্রথম চারমাসে (জুলাই-অক্টোবর) বিতরণকৃত কৃষি ও পল্লী ঋণের মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৩,৭৬৯ কোটি টাকা। এছাড়া, বিদেশি ব্যাংকগুলো ৮৪৪ কোটি এবং বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৭,৩৪৫ কোটি টাকা।
আলোচিত সময়ে লক্ষ্যমাত্রার সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে বিদেশি ব্যাংকগুলো। এই ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার ৮০.৬৮ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলো করেছে ৩৩.৫১ শতাংশ এবং সরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ লক্ষ্যমাত্রার ৩১.৩৩ শতাংশ বিতরণ করেছে।
ব্যাংকাররা বলছেন, কৃষি ঋণ বিতরণে পরিমাণের পাশাপাশি মানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। যাতে সব ব্যাংক কৃষি ঋণ বিতরণ করে। যে সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের পল্লী অঞ্চলে নিজস্ব শাখা নেই, যেসব ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থার বা এনজিও মাধ্যমে বিতরণ করে– সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার কারণে সামগ্রিকভাবে কৃষিঋণ বিতরণ ভালো বলে জানান তারা।
কৃষি ঋণ বিতরণের পাশাপাশি কৃষকের ফেরত দেওয়া ঋণের হার সন্তোষজনক। আবার কৃষি ঋণে খেলাপি কৃষকের হারও তুলনামূলক কম। তথ্য বলছে, কৃষি ঋণে খেলাপির হারও ৭.২৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, "কৃষকেরা কখনও ঋণ জালিয়াতি করেন না। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়েন তারা। কিন্তু দেশের বৃহৎ শিল্প গ্রুপের মত ঋণ খেলাপির প্রবণতা তাদের মধ্যে একেবারেই নেই।"