পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য অর্জনে ইনস্টিটিউশনাল স্ট্রেংদেনিং খুবই জরুরি
২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ৯ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এর কনসেপ্ট পেপারে ২০টি প্রধান খাত নির্বাচন করা হয়েছে।
তবে লক্ষ্য পূরণে ইনস্টিটিউশনাল স্ট্রেংদেনিং (প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণ) খুবই জরুরি। সক্ষমতা না থাকার কারণে মন্ত্রণালয়গুলো তাদের টার্গেট পূরণ করতে পারছে না।
এবার নগরায়ণ, কৃষি, আর্থিক খাত, দারিদ্র্য হ্রাস ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু দেশে দারিদ্র্য কমলেও আয়-বৈষম্য বাড়ছে। এটি কমাতে কোনো সাফল্য দেখছি না।
৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যেসব ম্যাক্রো-ইকোনমিক ইন্ডিকেটর প্রাক্কলন করা হয়েছিল, সেগুলো অর্জিত হয়নি। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতেও সে অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
নগরায়ণের অংশ হিসেবে আমরা একের পর রাস্তা, ব্রিজ করছি। এতে যানজট ও দূষণ কমছে না এবং গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। শহুরে নাগরিকদের জন্য যথেষ্ট কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে কি না, সেটাও দেখতে হবে।
উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হতে হলে সেখানে আয়ের বিষয়টাই মুখ্য, সামাজিক ইন্ডিকেটরগুলো মুখ্য নয়। কিন্তু বর্তমানে দেশে যে মজুরি বা মাথাপিছু আয়, তা দিয়ে দিয়ে ২০৩১ সালে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া সম্ভব নয়।
স্মার্ট নাগরিক হওয়ার জন্য যে শিক্ষা ও দক্ষতা দরকার, তা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য জ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নয়ন দরকার হবে। এটি করতে হলে শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দিয়ে হবে না, সামগ্রিকভাবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রয়োজন হবে। তা না পারলে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো যাবে না।
৯ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে চায়। কিন্তু এখানে স্মার্ট-এর অর্থ কী, তা স্পষ্ট নয়।
উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে অনেক বিনিয়োগ দরকার, পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য শিল্পের মূল্য সংযোজন বাড়ানোর পাশাপাশি রপ্তানিমুখী শিল্পকে বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনে সংযুক্ত হতে হবে।
এখন আমরা কম দামের পোশাক রপ্তানি করি। এখান থেকে আমাদের উচ্চমূল্যের পোশাক রপ্তানিতে যেতে হবে। এজন্যও প্রযুক্তি, দক্ষতা ও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
কনসেপ্ট পেপারে আর্থিক খাতের সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। এজন্য সরকারের সর্বাত্মক সহায়তা লাগবে, শুধু নীতি প্রণয়ন করলেই হবে না। সুখবর হলো, সরকার ব্যাংকসহ আর্থিক খাতের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করেছে। বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হলেও এ খাতে সংস্কার প্রয়োজন।