ডলার পাওয়া যাচ্ছে না মানি চেঞ্জারে, খোলা বাজারে দাম বেড়ে ১২৫ টাকা
দেশে গত দুই সপ্তাহ যাবৎ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সারাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে খোলা বাজারে ডলারের দামও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাজধানীর একাধিক এলকায় মানি চেঞ্জারগুলোতে ডলার বিক্রি কম ছিল। এদিনে সর্বোচ্চ ১২৫ টাকায় ডলার কিনতে হয়েছে গ্রাহকদের।
বৃহস্পতিবার গুলশানের মানি চেঞ্জার ঘুরে ও মতিঝিলের মানি চেঞ্জারে খবর নিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
যদিও গতকাল বুধবার মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এমসিএবি) পক্ষ থেকে সব মানি চেঞ্জারকে চিঠি দিয়ে ডলারের দাম ১১৯ টাকায় বেধে দেওয়া হয়। তবে কোথায়ও এই রেটে ডলার বিক্রি হয়নি।
ডলার বিক্রিতা নাদির হোসেন বলেন, দেশের খোলা বাজারে জুলাইয়ে ১৬ তারিখে ডলারের দাম ছিল ১২০ টাকা। এরপর সরাদেশে আন্দোলনের কারণে বিদেশ থেকে প্রবাসী খুবই কম এসেছে। যার কারণে খোলা বাজারে ডলারের ফ্লো কমে যাওয়ায় দামও বাড়ছে।
২৭ জুলাই খোলা বাজারে ডলারের দাম ছিল ১২২ টাকা। এছাড়া ৩০ জুলাই প্রতি ডলার সর্বোচ্চ বিক্রি হয়েছে ১২৩.৫০ টাকা। যদিও গতকাল ৩১ জুলাই ১২৪.৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২৫ টাকায় ডলার বিক্রি হয়েছে।
মতিঝিলের ডলার বিক্রিতা রিপন হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (টিবিএস)-কে বলেন, 'আমাদের হাতে এখন ডলার সংগ্রহ কম রয়েছে। গত এক সপ্তাহে ধারাবাহিক ডলারের দাম বাড়ছে। বুধবার সর্বোচ্চ ১২৫ টাকায় বিক্রি করেছি।'
তিনি বলেন, 'একজন গ্রাহক বেশি কিছু ডলার চেয়েছে। আমি বলেছি আগামী রবিবার মার্কেটে যে দর থাকে সেই রেটে নিতে হবে। কারণ এখন দর বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি।'
পল্টনে একাধিক মানি চেঞ্জারে সরেজমিনে গেলে বিক্রেতারা জানান, ১১৯ টাকায় বিক্রি করার মতো কোনো ডলার নেই।
তারা জানান, গ্রাহকদের থেকে ১২০ টাকার বেশি রেটে ডলার সংগ্রহ করেছেন।
জানতে চাইলে সংগঠনটির সভাপতি এম এস জামান বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে আমরা চিঠি দিয়েছি। আমাদের কিছু করার নেই। বিদেশ থেকে যারা আসেন, তারা আমাদের কাছে ডলার বিক্রি করে থাকেন। বিদেশ থেকে মানুষ আসা কমে গেছে, এ জন্য ডলারের সরবরাহ নেই। ফলে মানি চেঞ্জারে ডলার মিলছে না। এটাই বাস্তব অবস্থা। ব্যাংক আমাদেরকে কোনো ডলার দিচ্ছে না। ব্যাংক আমাদের কাছে ১১৮ টাকায় ডলার দিলে ১১৯ টাকার মধ্যে বিক্রি করা সম্ভব ছিল।'
সদ্যবিদায়ী জুলাই মাসে যে রেমিট্যান্স এসেছে, তা গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৯১ বিলিয়ন ডলার। যা আগের মাসের তুলনায় ২৫% কমেছে। জুনে রেমিট্যান্স ছিল ২.৫৪ বিলিয়ন ডলার।
ব্যাংকাররা বলেন, কোরবানি ঈদের পরবর্তী মাস হওয়ার কারণে রেমিট্যান্স কিছুটা কমেছে। তবে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে দেশের চলমান ইস্যুতে অনেক প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স না পাঠানোর জন্য গুজব প্রচারণা চালাচ্ছে।