পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষতা ব্যবহার করব: পররাষ্ট্র সচিব
ঢাকা সফররত মার্কিন প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন সংস্কার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। পাশাপাশি তাদের সঙ্গে আর্থিক খাতের সংস্কার নিয়েও ব্যাপক আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, 'ইতিমধ্যে সরকার যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, সে সম্পর্কে আমরা প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।'
'সরকারের সংস্কার পরিকল্পনা সম্পর্কে তারা জানার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়টি এ সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকার বিবেচনায় আর্থিক খাত ও রাজস্ব খাতে সংস্কার এবং এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্র, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শ্রম পরিবেশ, মানবাধিকার সুরক্ষা আর রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তাসহ নানা বিষয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি,' বলেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে জসীম উদ্দিন বলেন, 'আমরা খুব ব্রডলি ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টরের রিফর্ম নিয়ে কথাবার্তা বলেছি। পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের যে এক্সপার্টিজ (দক্ষতা) আছে, সেটা হয়তো আমরা ব্যবহার করব। কিন্তু এই আলাপটা কেবল শুরু হয়েছে, এর চূড়ান্ত রূপ পেতে একটু সময় লাগবে।'
তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে আজ বিকেলের বৈঠকে এই সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে আসতে পারে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, 'আমরা আর্থিক সংস্কারের যে সমস্ত বিষয় আইডেন্টিফাই করেছি, তারা এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।'
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ও ইউএসএআইডির মধ্যে বার্ষিক সহযোগিতা চুক্তি আজ স্বাক্ষরিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান, বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন, রাজনীতি ও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
শ্রম আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'শ্রম আইন নিয়ে আমরা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছি, সেটা প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছি। তারা এগুলোকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে রিকগনাইজ করেছেন। তবে এক্ষেত্রে কনভারসেশনটা আরও কন্টিনিউ করবে।'
পোশাক খাতের চলমান অস্থিরতা নিয়ে আজকের বৈঠকে কোন আলোচনা হয়নি। এছাড়া দুদেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়েও কোনো আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়নি বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।
জিএসপি সুবিধা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'জিএসপি নিয়ে একটি সাধারণ আলোচনা হয়েছে এবং এটার যে প্রসেস, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর বেশি কিছু কথা হয়নি।'
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, 'আজকের আলোচনা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিনিংফুল এনগেজমেন্টের জন্য একটি ফাউন্ডেশন। এটা একটি ফ্রুটফুল ডিসকাশন। ভবিষ্যতে এটাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব।'