বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও সুশাসন উন্নয়নে এডিবির ৬০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা অনুমোদন
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশ সরকারকে ৬০০ মিলিয়ন ডলারের নীতি-ভিত্তিক ঋণ (পিবিএল) সহায়তা প্রদান করবে।
এই ঋণ ব্যবস্থার আওতায় রাজস্ব আদায় বাড়ানো, সরকারি বিনিয়োগ প্রকল্পের কার্যকারিতা উন্নত করা, বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার এবং স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।
এডিবির আঞ্চলিক প্রধান অর্থনীতিবিদ আমিনুর রহমান বলেন, 'এডিবির পলিসি-ভিত্তিক ঋণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরবর্তী সময়ে ত্বরিতভাবে উন্নয়নমূলক আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে। এই সংস্কারগুলোতে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও শাসনব্যবস্থার উন্নতি, পাশাপাশি অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণ ও প্রতিযোগিতার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এডিবির এই কর্মসূচি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে তৈরি করা হয়েছে।'
বাংলাদেশের রাজস্ব আদায়ে দীর্ঘদিন ধরেই দুর্বলতা রয়েছে। বর্তমানে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন, মাত্র ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এ পলিসি-ভিত্তিক ঋণ বাংলাদেশের রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ নীতি পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে সহায়তা করবে, পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা উন্নত করবে।
এসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে ডিজিটালাইজেশন, কর সুবিধার সংস্কার এবং করদাতাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি।
সরকারি বিনিয়োগ প্রকল্পগুলোতে কার্যকারিতা ও স্বচ্ছতা বাড়ানোর পাশাপাশি বেসরকারি খাত ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাকে সহজ করার ওপরও জোর দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৩০টিরও বেশি সেবা অনলাইনে এক প্ল্যাটফর্মে আনা হয়েছে, যা ব্যবসা পরিচালনা আরও সহজ করবে।
এছাড়া, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী করা, বিদেশি বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সরলীকরণ এবং বাণিজ্যের খরচ কমানোর জন্য সরকার পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে রপ্তানির বৈচিত্র্যকরণেও ভূমিকা রাখা হবে।
১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এডিবি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে দারিদ্র্য দূর করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই ও স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। সংস্থাটির ৪৯টি সদস্য দেশ এ অঞ্চলে অবস্থিত।