৫০ বছরে বিদেশি ব্র্যান্ডকে হটিয়ে দেশি ব্র্যান্ডগুলো জায়গা করে নিল যেভাবে
স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশে ব্যবসা আর বাঙালি বলতে বোঝাত কিছু ক্ষুদ্র খুচরা বিক্রেতা আর কৃষিপণ্যের ব্যবসায়ী।
স্থানীয় ব্র্যান্ড গড়ে তোলা তখন ছিল কল্পনাতীত। তবে স্বাধীন বাংলাদেশে বড় উদ্যোক্তাদের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্যপট বদলে গেছে। স্থানীয় উদ্যোক্তারা ধীরে ধীরে একটি সমৃদ্ধ বেসরকারি খাত গড়ে তুলে অর্থনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে।
তাদের কল্যাণে শত শত স্থানীয় ব্র্যান্ড জয় করে নিয়েছে ভোক্তাদের আস্থা। বর্তমান সময়ের শীর্ষ ব্র্যান্ডের অনেকগুলোই স্থানীয়।
শীর্ষ ৫০ ব্র্যান্ডের অর্ধেকই দেশি
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বাজার গবেষণা সংস্থা কান্টার ওয়ার্ল্ডপ্যানেল-এর ২০১৮ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশের শীর্ষ ৫০ ব্র্যান্ডের অর্ধেকই স্থানীয়। দেশি ব্র্যান্ডের এই শক্তিশালী অবস্থান অর্থনীতিতে স্থানীয় 'সফট অ্যাসেটে'র উত্থানের দিকেই ইঙ্গিত করে।
বর্তমান বাংলাদেশে অন্তত কয়েক ডজন স্থানীয় ব্র্যান্ড রয়েছে যারা হয় বিদেশি প্রতিদ্বন্দ্বীদের ছাড়িয়ে গেছে নয়তো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলেছে।
ফার্মাসিউটিক্যালস, খাদ্য, লবণ, সিমেন্ট ও ইস্পাতের বাজারেও দাপট দেখাচ্ছে করছে স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো।
পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সময়ের সাথে সাথে বাংলাদেশি ব্র্যান্ডগুলো বিদেশি ব্র্যান্ডের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে দেশের জিডিপিতে। বাংলাদেশকে যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে উল্লেখ করা হয়, তার পেছনেও দেশি ব্র্যান্ডগুলোর অবদান রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আব্দুর রাজ্জাকের মতে, শক্তিশালী বেসরকারি খাতের উত্থানের ফলে বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক রূপান্তর অনেক সহজ হয়েছে।
'তুলনামূলকভাবে অধিক বিকশিত বেসরকারি খাত অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশ এবং অনেক নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবধান গড়ে দিয়েছে,' বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের উৎপাদন-জিডিপির অনুপাত বেশ বড়—প্রায় ২০ শতাংশ। যা এলডিসি গ্রুপের গড় অনুপাতের দ্বিগুণ—এমনকি ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়েও বেশি। এই অনুপাতের সুবাদে এদেশের ব্র্যান্ডগুলো বিকশিত হতে পেরেছে।
স্বাধীনতা: ভিত গঠন
পাকিস্তান আমলে বাঙালি মালিকানাধীন ব্যক্তিগত শিল্পের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। তখন ঢাকার আনোয়ার গ্রুপের মালা শাড়ি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল যে বাঙালিরাও বড় ব্যবসায় উন্নতি করতে পারে।
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ কেবল মৌলিক চাহিদা, মূলত খাদ্যের পূরণের দিকে মনোনিবেশ করে। ওই সম্ম পশ্চিম পাকিস্তানিদের রেখে যাওয়া সমস্ত শিল্প রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নিয়ে নেওয়া হয়।
মুষ্টিমেয় কিছু স্থানীয় উদ্যোক্তা—যাদের ব্যবসার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে—তারা তাদের ব্যবসায়িক প্রচেষ্টা এগিয়ে নেন। তখনও পূর্ণ মাত্রায় বেসরকারিকরণ শুরু হয়নি।
নাবিস্কো বিস্কুট ও তিব্বত বল সাবানের মতো বিদ্যমান ব্র্যান্ডগুলোর দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেন বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা।
নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরির মাধ্যমে তারা বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে।
সময়ের সাথে সাথে তারা বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর একচেটিয়া ব্যবসার বৃত্ত ভেঙেছে। বাংলাদেশি ব্র্যান্ডগুলো এখন অনেক ক্ষেত্রে বাজারে আধিপত্য দাপটের সাথে ব্যবসা করছে। কিছু খাতে বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো প্রতিযোগিতামূলক বাজার থেকে সরে আসাকে লাভজনক মনে করেছে।
প্রথমে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, তারপর এগিয়ে যাওয়া
পর্যাপ্ত মানবসম্পদ থাকায় বাংলাদেশ মূলত পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও আরও কিছু ক্যাটাগরিতে বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলোর রপ্তানির দিকেই বেশি মনোযোগী ছিল।
এরপর দ্রুত বর্ধনশীল ভোক্তাশ্রেণি ও তাদের ক্রমবর্ধমান ক্রয়ক্ষমতার সুবিধা নিতে ধীরে ধীরে মনোযোগ সরে আসে স্থানীয় বাজারের দিকে।
স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যালস শিল্পের কিংবদন্তিতুল্য উত্থান শুরু হয় ১৯৮০-র দশকে, আমদানি প্রতিস্থাপন নীতির মাধ্যমে। ১৯৮০-র দশকে ঢাকার কাছে একটি কারখানা স্থাপন করে পাবনাভিত্তিক একটি ছোট ওষুধ প্রস্তুতকারক।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথমদিকের উদ্যোক্তাদের অন্যতম বেক্সিমকো। প্রতিষ্ঠানটি ওষুধ শিল্পে প্রবেশ করে এবং নিষ্ঠা ও উৎকর্ষের মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করে।
নতুন সহস্রাব্দের আগে স্থানীয় কোম্পানির কাছে তাদের ব্যবসা বিক্রি করে বাজার ছাড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মা জায়ান্ট ফাইজার। বর্তমানে এটি রেনাটায় পরিণত হয়েছে। বিশ্বমানের স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের—যেমন টিকায় ইনসেপটার—উত্থানে ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে নিজেদের ওষুধ কারখানা বন্ধ করে দেয় ভ্যাকসিনের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন।
এখন ওভার-দ্য-কাউন্টার (যেসব ওষুধ কিনতে প্রেসক্রিপশন লাগে না) থেকে শুরু করে ক্যান্সার প্রতিরোধী ওষুধ সর্বত্রই বাংলাদেশি জেনেরিক ব্র্যান্ডগুলোর উপস্থিতি রয়েছে।
কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশি ভোক্তাদের কাছে জুতার অপর নাম ছিল বহুজাতিক বাটা। বাটার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো দেশি কোনো ব্র্যান্ড ছিল না।
১৯৯০ সালে জাপানি ও ইতালীয় ব্র্যান্ডের চুক্তিভিত্তিক প্রস্তুতকারক হিসেবে যাত্রা শুরু করে স্থানীয় উদ্যোগের অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার। দীর্ঘদিন জুতা রপ্তানির পর ২০১০-এর দশকের শুরুতে কোম্পানিটি স্থানীয় বাজারের দিকে মনোযোগ দেয়।
বাংলাদেশের বাজারে শতাব্দীপ্রাচীন বৈশ্বিক ব্র্যান্ড বাটাকে ছাড়িয়ে যেতে এক দশকও সময় নেয়নি অ্যাপেক্স।
এদিকে গত এক দশকে দেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটনের কাছে ফ্রিজ ও টেলিভিশন সাম্রাজ্যের দখল হারিয়েছে আরেক শতাব্দীপ্রাচীন বিদেশি ব্র্যান্ড সিঙ্গার।
ইউসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ২০২১ সালের একটি গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, রেফ্রিজারেটরের বাজারের ৭২ শতাংশ এখন ওয়ালটনের দখলে। আর সিঙ্গারের দখলে বাজারের মাত্র ১২ শতাংশ। এছাড়া যমুনা, মিনিস্টার এবং অন্যান্য অনেক স্থানীয় ব্র্যান্ডও সিঙ্গারের বাজারে ভাগ বসিয়েছে।
টেলিভিশনের বাজারও সিঙ্গারের দখলে ছিল। কিন্তু ওয়ালটন এখন এ বাজারে ২৭ শতাংশের দখল নিয়ে বাকিদের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে, আর ১১ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সিঙ্গার।
স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো এয়ার কন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন এবং নানা রকমের রান্নাঘরের সরঞ্জামের ক্যাটাগরিতে এখনও বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। তবে এসব বাজারেও আধিপত্য বিস্তার করতে বেশি সময় লাগবে না। ওয়ালটন এখন বৈশ্বিক বাজারের দিকে লক্ষ রেখে গবেষণা ও উন্নয়ন এবং বিপণনে বড় বিনিয়োগ করছে।
২১ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে স্যামসাংয়ের পরেই বাংলাদেশি কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স ব্র্যান্ড মিয়াকোর অবস্থান।
ওয়ালটন ২০০০-এর দশকের শেষের দিকে একটি স্বল্পমূল্যের বাজারের প্রতিযোগী হিসেবে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটির চিফ অভ বিজনেস অপারেশন সোহেল রানার বিশ্বাস, সহায়ক সরকারি নীতিমালা আর স্থানীয় ভোক্তাদের প্রয়োজনীয়তা ও সামর্থ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পণ্য উৎপাদন ও বিপণন কোম্পানিটিকে বড় হতে সহায়তা করেছে এবং এখন তাদের বৈশ্বিক স্বপ্নের পেছনে ছুটতে সাহায্য করেছে।
কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশিরা ভারতীয় হিরো ও চীনা ফিনিক্স সাইকেল চালাচ্ছিল। কিন্তু এখন মেঘনা ও আরএফএল-এর দুরন্তর মতো বিশ্বমানের বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা স্থানীয় সাইকেলের বাজারের একটি বড় অংশ দখল করে বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
১৯৯০-এর দশকে স্থানীয় মিষ্টান্ন ব্র্যান্ড হিসেবে যাত্রা শুরু করে অলিম্পিক। ওই সময়ে এই বাজারের দখল স্থানীয় এবং আমদানি করা বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর হাতেই ছিল।
প্রায় তিন দশক পর অলিম্পিক এখন বড় ব্যবধানে বাজারের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
ব্যাংককভিত্তিক ফ্রোজেন রেডি মিল জায়ান্ট সিপি ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং ২০১০-এর দশকে বাজারে রিটেইল আউটলেটগুলোর সম্প্রসারণ করে। তবে শক্তিশালী স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বী কাজী ফার্মস কিচেন সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দৃশ্যত সিপির বাজারকে ছাড়িয়ে গেছে।
ব্যস্ত জীবনে বাংলাদেশি ভোক্তারা এখন প্রস্তুত মশলা মিশ্রণের জন্য রাঁধুনি আর প্রাণকে প্রথম পছন্দের ব্র্যান্ড হিসেবে বেছে নিয়েছে।
স্থানীয় ব্র্যান্ড এসিআই সল্ট ও এসিআই অ্যারোসল সংশ্লিষ্ট বাজারের শীর্ষস্থানীয়।
চায়ের ক্ষেত্রে লিপটন ও টেটলির মতো বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোকে প্রতিযোগিতায় পেছনে ফেলে শীর্ষস্থানের দখল নিয়েছে স্থানীয় ব্র্যান্ড ইস্পাহানি।
এখনও যেখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের আধিপত্য
২০১৮ সালে কান্তার ওয়ার্ল্ডপ্যানেল মার্কেট ইন্টেলিজেন্সের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের বাজারে শীর্ষ নয় ব্র্যান্ড ছিল বহুজাতিক ব্র্যান্ড। দশম স্থানটি ছিল তিব্বত বল সাবানের দখলে। ব্র্যান্ডের শক্তি এবং মূল্যের দিক থেকে সব বাংলাদেশি ব্র্যান্ডের নেতৃত্বে ছিল তিব্বত।
সবচেয়ে শক্তিশালী তিনটি ব্র্যান্ড হলো ইউনিলিভারের সানসিল্ক শ্যাম্পু, লাক্স সাবান এবং রিন ডিটারজেন্ট।
স্থানীয় 'হালাল সাবান' অ্যারোম্যাটিক-এর আকস্মিক উত্থান ও পতন, স্থানীয় বাজারের সাবান মেরিল ও কেয়া কিংবা প্রিমিয়াম সাবান স্যান্ডালিনার প্রতি বাংলাদেশি ভোক্তাদের একটি বড় গোষ্ঠীর ঠিকই নজর আছে।
তামাক, রং, চুলের প্রসাধনের বাজারে এখনও ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বার্জার এবং ম্যারিকোসহ ব্র্যান্ডগুলো শীর্ষস্থান দখল করে আছে। তবে স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো এসব বাজারেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
বিদেশি হাইজিন প্রোডাক্ট ব্র্যান্ড—ডেটল ও স্যাভলন—দীর্ঘদিন ধরে বাজারে রাজত্ব করছে। তবে স্কয়ারের সেপনিলের মতো স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চালিয়ে যাচ্ছে।
এফবিসিসিআই-এর সহসভাপতি এমএ রাজ্জাক খান বলেন, স্বাধীন-পরবর্তী ব্যবসার পরিবেশ এবং সুবিধা স্থানীয় ব্র্যান্ডের বিকাশে সহায়তা করেছে। মেড-ইন-বাংলাদেশ এখন এই বিকাশে গতি আনছে।
বাংলাদেশি কর্পোরেটদের কাছে এখন প্রয়োজনীয় অর্থায়ন-সক্ষমতা এবং ভ্যালু প্রপোজিশন আছে। সেইসঙ্গে আছে একটি ব্র্যান্ডকে প্রতিযোগিতা-সক্ষম রাখার এবং শীর্ষস্থানে ওঠানোর মতো মস্তিষ্ক।
এমএ রাজ্জাকের বিশ্বাস, আগামী বছরগুলোতে দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর বড় একটা অংশ দেশে-বিদেশে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
পোশাক খাতসহ অনেক শিল্পেই বাজার এখনও ব্র্যান্ড নিয়ে খুব একটা ভাবে না। তবে পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে। দেশে বৈশ্বিক লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডের উপস্থিতি না থাকায় এ খাতে ভাগ বসানোর জন্য বিনিয়োগ করছে আড়ং, ইয়েলো ও সারার মতো স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো।
একদিন হয়তো এটাই বাংলাদেশের বাজারকে রিটেইল ব্র্যান্ডগুলোর জন্য নতুন যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করবে।