আফগানিস্তান নিয়ে হিসাবে ভুল হওয়ার কথা স্বীকার করল বাইডেন প্রশাসন
তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের দ্রুত পতনে হতভম্ব হয়ে পড়েছে বাইডেন এবং তার প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। রোববার কাবুলে তালেবান যোদ্ধাদের প্রবেশের পর মার্কিন ও অন্যান্য বিদেশিরা আফগানিস্তান ছাড়তে হুমড়ি খেয়ে পড়ায় নতুন কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে হিমশিম খেতে হয় বাইডেন প্রশাসনকে।
মাত্র গত মাসে কাবুল সরকারের পতন ঘটাতে তালেবানের কয়েক মাস সময় লাগবে বলে জানায় মার্কিনিরা। ফলে, ধারণা করা হয়েছিল মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে।
প্রাথমিক ভাবে আগস্টের আগেই আড়াই হাজার সেনাকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলেও এখন নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রকে ছয় হাজার সেনা সদস্য পাঠাতে হচ্ছে।
হিসাবে গড়মিল করার কথা অকপটেই স্বীকার করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কথা উল্লেখ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সিএনএনকে বলেন, "বিষয়টি হলো, দেশ রক্ষার্থে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আমরা ব্যর্থ হতে দেখেছি। তবে, আমরা যা ধারণা করেছিলাম, তার থেকেও দ্রুত সব ঘটে গেছে।"
আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, শীর্ষ একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার মতে, বাইডেনের বক্তব্য এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। ক্যাম্প ডেভিডে প্রেসিডেন্টের গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণও এখন পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত করা হয়নি বলে জানান তিনি।
তবে, আফগানিস্তান পরিস্থিতি বাইডেনকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে কি না তা এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত। জনমত জরিপে অধিকাংশ আমেরিকান আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে। ২০ বছরের দীর্ঘায়িত যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছিলেন বাইডেনের সহযোগীরা।
তবে, কংগ্রেসের অনেক সদস্যই ইতোমধ্যে প্রশাসনের কাছে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের দাবি উত্থাপন করেছেন। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা কীভাবে মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি বিশ্লেষণে এত বড় ভুল করেছে তা জানতে চান তারা।
এছাড়া, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সরিয়ে আনার বিষয়ে কেন জোরালো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি সেই প্রশ্নও তুলেছেন তারা।
রোববার আইন প্রণেতাদের ব্রিফিং চলাকালে শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে কঠিন সব প্রশ্নের সম্মুখীন হন। আফগান দোভাষী এবং যুদ্ধে মার্কিনিদের সহায়তাকারী অন্যান্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রসঙ্গেও প্রশ্ন উত্থাপিত হয়।
- সূত্র: সিএনএন