ইরানের উপর স্থগিত 'সব নিষেধাজ্ঞা' চালু হবে: ট্রাম্প
ইরানের উপর যুক্তরাষ্ট্রের স্থগিত করা পূর্বের সব নিষেধাজ্ঞা চালুর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (২০ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে এই নির্দেশ দেন তিনি। এর একদিন আগেই ইরান বিরোধী অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব বাতিল করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
ট্রাম্প বলেন, 'আমি সরাসরি আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জাতিংসংঘকে জানানোর জন্য নির্দেশ দিচ্ছি যে, 'ইরানের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে যত নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রয়েছে সেগুলো আমরা আবার চালু করতে চাই।'
এই নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের সঙ্গে ৬ জাতিগোষ্ঠীর হওয়া পরমাণু চুক্তির অন্তর্ভুক্ত। তাই এগুলো ফিরিয়ে আনলে সেই চুক্তি পুরোপুরি লঙ্ঘণ করা হবে বলে জানিয়েছে পোর্বস। যুক্তরাষ্ট্র বারাক ওবামা যুগের এই চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে বেরিয়ে এসেছে।
এর আগে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার মার্কিন প্রচেষ্টা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। আমেরিকার পক্ষ থেকে উত্থাপিত প্রস্তাবে ১১ দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থেকেছে। এর পক্ষে ও বিপক্ষে ভোট পড়েছে দু'টি করে। আমেরিকা ও ডোমিনিকান রিপাবলিক প্রস্তাবটির পক্ষে এবং চীন ও রাশিয়া এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। বাকি কোনো দেশ ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি।
মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় এখন পরমাণু সমঝোতার ভিত্তিতে চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ইরানের ওপর জাতিসঙ্ঘের আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। এর ফলে এখন ইরান আগামী অক্টোবর মাস থেকে বহির্বিশ্বের সাথে সমরাস্ত্র বেচাকেনা করতে পারবে।
তবে মাকিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে এই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে ওই সব নিষেধাজ্ঞার মেয়ার বাড়ানোর কথা বলছেন ট্রাম্প। ফলে পরমাণু সমঝোতা এবার শতভাগ ভেস্তে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। উল্লেখ্য ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সাথে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা হয়েছিল।
তবে, ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল প্রক্রিয়া খুব সহজ হবে না কারণ রাশিয়া, চীন এবং নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্য দেশগুলো আমেরিকার এই পদক্ষেপের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করবে। এসব দেশ বলছে, পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর আমেরিকায এখন পরমাণু সমঝোতার কোনো পক্ষ নয় এবং তারা ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের জন্য কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে না।
যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করার পর নিরাপত্তা পরিষদ ৩০ দিনের মধ্যে নতুন প্রস্তাব পাস করে ইরানকে নিষেধাজ্ঞা মুক্ত করবে অথবা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হবে। তবে এরই মধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার দেশের উপর নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা দিলে বা আগের নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনলে কঠোর জবাব দেবেন। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নিষেধাজ্ঞা আর ইরান মেনে চলবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন। একই সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘণ হলে পুরো দমে পরমাণবিক কার্যক্রম পরিচালনা করা ও ইউরোনিয়াম সমৃদ্ধ করণ কাজ এগিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন হাচান রুহানি।
সূত্র: রয়টার্স