করোনায় বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর মিছিল
প্রাণসংহারক করোনা ভাইরাসের প্রকোপে আতঙ্কিত এখন পুরো বিশ্ব। এই অবস্থায় বিশ্বজুড়ে মোট ১ লাখ ১৪ হাজার ৪৫৮ জনের মাঝে সংক্রমণ ছড়িয়ে, ৪ হাজার ২৭ জনের প্রাণহানি ঘটিয়েছে এই ভাইরাস।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আরও তিন ব্যক্তির দেহে ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়। এদের বয়স যথাক্রমে; ৩৯, ৭৭ এবং ৭৯ বছর। আক্রান্তরা কোথা থেকে ভাইরাসটির সংস্পর্শে প্রথম আসেন তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
এর মাঝে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এখনও করোনা ভাইরাস নির্ণয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়নি বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। কারণ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয় 'প্রেসিডেন্ট করোনা আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি এবং তার মাঝে এর ফলে সৃষ্ট উপসর্গগুলো অনুপস্থিত।'
চীনে গত কিছুদিন ধরে নতুন করে সংক্রমিতের হার অনেক কমছে। গত সোমবার দেশটি নতুন করে ১৯ জনের মাঝে সংক্রমণের খবর জানায়। এদিন আরও ১৯ জনের মৃত্যুর কথা জানায় গণচীন সরকার। এনিয়ে দেশটিতে মোট ৩ হাজার ১৩৬ জনের প্রাণহানি হলো।
করোনার উৎসস্থল চীনের উহান নগরীতে মঙ্গলবার বিশেষ সফরে গেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভি জানায়, করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধের নতুন পদ্ধতিগুলো সরেজমিন দেখেতেই শি'র এসফর।
সফরের মাধ্যমে শি ভাইরাস প্রতিরোধের যুদ্ধে তার ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততার বার্তা দিলেন। তবে এর মাধ্যমে উহানের পরিস্থিতি উন্নতির দিকে এমন দাবিও জোরালো হলো। এর আগে বাংলাদেশে অবস্থিত গণচীন দূতাবাস উহানের পরিস্থিতি উন্নতির দিকে এবং সেখানে কিছু অস্থায়ী হাসপাতাল বন্ধ করা হচ্ছে বলে জানায়।
তবে চীনে যখন সংক্রমণ কমছে বাকি বিশ্ব চলছে ঠিক তার বিপরীত দিকে। প্রতিবেশী ভারতে মঙ্গলবার সকাল নাগাদ মোট ৪৪ জনের মাঝে সংক্রমণ ছড়ানোর কথা নিশ্চিত করা হয়। খবর রয়টার্স ও সিএনবিসির।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আরও ১২ হাজার ব্যক্তি ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন। এদের সকলকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা হবে।
করোনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হচ্ছে এখন ইতালিতে। দেশটির প্রায় সকল নাগরিক বা ৬ কোটি মানুষকে এখন জনসমাগম পরিহার করে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জিসেপে কন্তে।
সোমবার আরও ৯৭ জনের মৃত্যু হলে এতে জাতীয় প্রাণহানির সংখ্যা ৪৬৩ জনে উন্নীত হয় দেশটির। ইউরোপের এই দেশে গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৯ হাজার ব্যক্তি কোভিড-১৯ নামক করোনা গোত্রের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
বিদ্যমান অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আঢানম ঘেব্রেইসুস বলেন, বহু দেশে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে এখন বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের মহামারি সৃষ্টির ঝুঁকি বাস্তব হুমকির রূপ নিয়েছে।
তবে তিনি ইতালির ভাইরাস বিস্তার রোধে নেওয়া কঠোর পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন। একইসঙ্গে, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি এবং ইরানেই বিশ্বের মোট সংক্রমিত জনসংখ্যার ৯৩ শতাংশ রয়েছে বলে জানান।
'এটাই হবে মানব ইতিহাসের প্রথম বৈশ্বিক মহামারি যাকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হব। অবশ্যই বিশ্ব ভাইরাসের করুনার আশায় হাত গুটিয়ে বসে থাকব না।'