কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে ফের মার্কিন হস্তক্ষেপ চান ইমরান খান
ভারতের সঙ্গে কাশ্মীর ইস্যু মীমাংসার জন্য ফের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ চাচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। যদিও এমন পদক্ষেপের প্রতি নয়াদিল্লির সাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই।
এইচবিও-র নিউজ প্রোগ্রাম অ্যাক্সিয়োস-এ সাক্ষাত্কার দেওয়ার সময় কাশ্মীর সমস্যার বিষয়টি তোলেন ইমরান খান। এ সময় তিনি মার্কিন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান। আগের ট্রাম্প প্রশাসন তার আহ্বানে প্রতিবারই সাড়া দিয়েছে। কিন্তু, প্রতিবারই মার্কিন উদ্যোগ থামিয়ে দিয়েছে ভারত।
পাকিস্তানী প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেন যে, মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার সঙ্গে কথা বলেননি।
তবে ইমরান খান আরও বলেছেন যে, বাইডেনের সঙ্গে দেখা হলে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলবেন।
বাইডেনের সঙ্গে বৈঠককালে কী নিয়ে আলোচনা করবেন, এ প্রশ্নের জবাবে ইমরান খান বলেন, 'পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী জাতি হিসেবে আমেরিকার কাঁধে বড় দায়িত্ব আছে। উপমহাদেশে বসবাসকারী আমরা ১৪০ কোটি মানুষ কাশ্মীর ইস্যুর জেরে জিম্মি হয়ে আছি।'
তিনি আরও বলেন, 'নিজেদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কাশ্মীরের জনগণের ভোট নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি।'
ইমরান বলেন, আমেরিকা চাইলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।
পাকিস্তানী প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের ব্যাপারে ভারতীয় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। অতীতে যতবারই তৃতীয় কোনো পক্ষ কাশ্মীর ইস্যুতে হস্তক্ষেপ বা মধ্যস্থতার চেষ্টা করেছে, ততবারই ভারত সে চেষ্টা ভেস্তে দিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের যেকোনো সম্ভাব্য পরিবর্তনের বিরোধিতা করে ইসলামাবাদ সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছে, তার জবাবে নয়াদিল্লি বলেছে: এ অঞ্চল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
পাকিস্তানের এমন বক্তব্য ভারতের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে নয়াদিল্লি।
২০১৯ ও ২০২০-এ কমপক্ষে দুইবার কাশ্মীর ইস্যুটি ট্রাম্পের কাছে উত্থাপন করেছেন ইমরান খান। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই সমস্যা সমাধানে ভারত ও পাকিস্তানকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। নয়াদিল্লির প্রত্যাখ্যান সত্ত্বেও এমন সাহায্যের প্রস্তাব দিয়ে গেছেন ট্রাম্প।
এইচবিও অ্যাক্সিয়োসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান দাবি করেন, কাশ্মীর ইস্যুর মীমাংসা হলে ভারত-পাকিস্তানকে আর পারমাণবিক অস্ত্র রাখার দরকার হবে না।
দুই দেশকে পারমাণবিকভাবে নিরস্ত্র তার লক্ষ্য কিনা- তা জানতে চাইলে ইমরান জবাব দেন: 'আমি পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে। বরাবর তা-ই ছিলাম। ভারতের বিরুদ্ধে আমরা তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছি। তবে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হওয়ার পর আমরা দুই দেশ আর কোনো যুদ্ধে জড়াইনি।'
ইমরান আরও দাবি করেন, পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র রাখার একমাত্র উদ্দেশ্য নিজেকে রক্ষা করা। এরপর তিনি যোগ করেন, 'নিজের আয়তনের চেয়ে সাতগুণ বড় প্রতিবেশী থাকলে যেকোনো দেশেরই চিন্তিত হওয়ার কারণ আছে।'
এরপর ইমরান স্বীকার করেন যে জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে তার কথা হয়নি। দুজনের আলাপ কেন হয়নি, তার জবাবে তিনি বলেন, 'তার যখন সময় হবে, তখন আমার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। এই মুহূর্তে নিশ্চয় তার হাতে আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে।'
- সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস