কি ঘটেছিল সেদিন মোল্লা বারাদার ও হাক্কানীর মধ্যে
কাবুলের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে তখন চলছে সরকার গঠন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। হাজির কার্যকরী উপ-প্রধানমন্ত্রী তথা তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আব্দুল গনি বারাদারসহ অন্য প্রভাবশালী তালেবান নেতারা। মন্ত্রিসভা কেমন হবে তা নিয়ে চলছিল গভীর আলোচনা।
এমন সময় নিজের চেয়ার ছেড়ে বারাদারের দিকে তেড়ে যান আফগানিস্তানের মন্ত্রী খলিলুর রহমান হাক্কানি। তারপর বেমক্কা ঘুষি মেরে বসেন মোল্লা বারাদারকে! বারাদারকে মারধরের ঘটনায় চমকে উঠে হাক্কানিদের দিকে বন্দুক তাক করেন তার নিরাপত্তারক্ষীরা। পাল্টা হাক্কানির নিরাপত্তারক্ষীরাও গুলি চালাতে শুরু করেন। মন্ত্রিসভা ঠিক করার বৈঠকে এমন গোলাগুলিতে হতচকিত হয়ে ওঠে সকলে। এরমধ্যেই প্রাসাদ ছেড়ে বেরিয়ে যান মোল্লা বারাদার। গন্তব্য কান্দাহার। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষীর। তবে নেতৃস্থানীয় কারও মৃত্যু হয়েছে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
প্রাসাদে এমন গুলি চালনার ঘটনা জানাজানি হতেই নানা ধরনের খবর ছড়াতে শুরু করে ঝড়ের গতিতে। রটে যায় বারাদারের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু পরে জানা যায়, আহত হলেও প্রাণে বেঁচে আছেন মোল্লা বারাদার। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে এই ঘটনা ঘটেছিল। ঘটনার পর প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে বারাদার সোজা চলে যান কান্দাহার। সেখানেই থাকেন তালেবানের প্রধান নেতা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হলো, এই ঘটনার পরে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোল্লা মোহাম্মদ হাসানকে আনা হয়।
অন্য দিকে, সরকারি টেলিভিশনে বিবৃতি দিতে দেখা যায় মোল্লা বারাদারকে। তিনি জানান, ''আমি অক্ষত এবং ভাল আছি। আমাদের মধ্যে বিতর্ক নিয়ে যে খবর বেরিয়েছে তা পুরোপুরি সত্য নয়।''
সব মিলিয়ে পুরোদস্তুর সরকার গড়ার আগেই নিজেদের মধ্যে গোলমালে জড়িয়ে পড়ে তালেবান।
- সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা