জলবায়ু সংকট নিরসনে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান ২ শতাধিক স্বাস্থ্য জার্নালের
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ২০০টিরও বেশি স্বাস্থ্য জার্নাল জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করছে।
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল (বিএমজে) জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো এতগুলো প্রকাশনা একত্র হয়ে কোনো বিবৃতি দিতে যাচ্ছে, যা মূলত পরিস্থিতির ভয়াবহতাকেই ফুটিয়ে তোলে।
নভেম্বরে গ্লাসগোতে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন এবং কোপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনের আগে প্রকাশিত হতে যাওয়া এই সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, "এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলোর আগে আমরা, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সব স্বাস্থ্য জার্নালের সম্পাদকরা, বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার, প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস বন্ধ করা এবং স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই।
"বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসের কারণে (মানুষের) স্বাস্থ্য ইতোমধ্যেই বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা গত কয়েক দশক ধরেই বলে আসছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
"এখানে বিজ্ঞান একেবারেই দ্ব্যর্থহীন। বৈশ্বিক তাপমাত্রার গড় বৃদ্ধি ১.৫ সেলসিয়াস থেকে বেড়ে গেলে এবং জীববৈচিত্র্যের ক্রমাগত ক্ষতি চলতে থাকলে (মানুষের) স্বাস্থ্যের যে মারাত্মক ক্ষতি হবে তা আর ফেরানো যাবে না।
"এর (জলবায়ু সংকটের) তীব্রতা বোঝাতেই বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য জার্নালগুলোয় এই সম্পাদকীয় প্রকাশিত হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এটা বলতে চাই যে, কেবল মৌলিক এবং ন্যায়সঙ্গত সামাজিক পরিবর্তনই আমাদের বর্তমান গতিপথকে বদলাতে পারবে।"
সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়েছে, "বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে এবং প্রকৃতি পুনরুদ্ধারে বিশ্বনেতাদের অব্যাহত ব্যর্থতাই এখন বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকির বিষয়। আমাদের এখনই জরুরী, সমাজব্যাপী পরিবর্তন আনতে হবে, যা সবাইকে একটি সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর বিশ্বের দিকে পরিচালিত করবে।
"স্বাস্থ্য জার্নালের সম্পাদক হিসাবে আমরা, (সব দেশের) সরকার এবং অন্যান্য নেতাদের কাজে নামার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। ২০২১ সালে এসেই শেষ পর্যন্ত বিশ্বের গতিপথ পরিবর্তিত হোক।"
বিএমজে'র প্রধান সম্পাদক এবং এ সম্পাদকীয়র অন্যতম সহ-লেখক ড. ফিওনা গডলি বলেন, "কোভিড -১৯ সংকটে প্রথম সারির যোদ্ধা হিসেবে লড়াই করে গেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এখন তারাই একত্র হয়ে সবাইকে সতর্ক করে দিচ্ছে, ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর তাপমাত্রা বাড়লে এবং প্রকৃতি ধ্বংসের ধারা অব্যাহত থাকলে তা সামনে আরও মারাত্মক সংকট বয়ে আনবে।
"ধনী দেশগুলোকে অবশ্যই দ্রুত কাজে নামতে হবে। ইতোমধ্যে উচ্চ তাপমাত্রায় ভুগতে থাকা দেশগুলোকে সাহায্য করতে হবে। ২০২১ সালকেই হতে হবে বিশ্বের গতিপথ পরিবর্তনের বছর, কেননা আমাদের স্বাস্থ্য এর উপরই নির্ভর করছে।"
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান