জি২০: বিশ্বনেতাদের সম্মেলনে প্রধান এজেন্ডা জলবায়ু ও কোভিড
আজ ইতালিতে মিলিত হচ্ছেন বিশ্বের প্রধান অর্থনীতিগুলোর নেতারা, যেখানে তাদের প্রধান দুই এজেন্ডা হতে চলেছে জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড।
চলমান করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এবারই প্রথম সামনাসামনি সাক্ষাৎ করবেন জি২০ নেতারা।
অবশ্য চীনের শি জিংপিং ও রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন রোমে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে সশরীরে অংশ নিচ্ছেন না। তারা ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন এই সম্মেলনে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষজ্ঞ মহল নিয়মিতই সতর্কবার্তা দিয়ে চলেছে যে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ যদি কমানো না হয় তাহলে বিশ্বব্যাপী চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে। ঠিক এরকম একটি সময়েই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সম্মেলনটি।
জি২০-এ রয়েছে ১৯টি দেশ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। সব মিলিয়ে জি২০-এর সদস্যরাই বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের ৮০ শতাংশের পেছনে দায়ী।
দুই দিনের সম্মেলনকে সামনে রেখে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, কার্বন নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে যদি অচিরেই যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে "আমাদের সভ্যতা" পেছনের দিকে হাঁটতে শুরু করবে, এবং "ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সৃষ্টি করবে আমাদের চেয়েও অনেক কম গ্রহণযোগ্য একটি জীবন"।
তবে তিনি এ কথাও স্বীকার করেছেন যে জি২০ সম্মেলন কিংবা গ্লাসগোতে আগামী সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া কপ-২৬ সম্মেলন, কোনোটিই বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধ করতে পারবে না। তার মতে, "আমাদের পক্ষে কেবলই উষ্ণতা বৃদ্ধির গতিকে একটু কমানো সম্ভব।"
রয়টার্স নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটি ড্রাফট কমিউনিকে উল্লেখ করা হয়েছে, জি২০-এর পক্ষ থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে (২ দশমিক ৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট) সীমাবদ্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে। অবশ্য এ ব্যাপারে কোনো আইনি চুক্তি করা হবে না।
এছাড়া যুক্তরাজ্য প্রধানমন্ত্রীর সম্মেলনে করোনাভাইরাস টিকা নিয়ে বৈষম্য প্রসঙ্গেও কথা বলবেন। জানা গেছে, তিনি অন্যান্য বিশ্বনেতাদের বলবেন "পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের বিষয়টি নির্ভর করছে আমরা কত তাড়াতাড়ি কোভিড কাটিয়ে উঠতে পারি তার উপর," এবং এক্ষেত্রে প্রথম প্রাধান্য হওয়া উচিত "বিশ্বব্যাপী করোনা ভ্যাকসিনের দ্রুতগতির, ন্যায়সঙ্গত বিতরণ"।
বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত ছয় বিলিয়নের বেশি কোভিড ভ্যাকসিন ডোজ বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও, জি২০ সম্মেলনের আয়োজক, ইতালিয়ান প্রধানমন্ত্রী মারিও ড্রাগিকে উদ্দেশ্য করে লেখা এক চিঠিতে ১৬০ জনের বেশি সাবেক বিশ্বনেতা ও বৈশ্বিক প্রখ্যাত জানিয়েছেন, নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মাত্র ২ শতাংশ ব্যক্তি করোনার এক ডোজের টিকা পেয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাবেন শক্তি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে এ খাতের বাজারদর ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া জো বাইডেন ভবিষ্যৎ মহামারিসমূহ কীভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব, সে বিষয়ক পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করবেন।
জি২০-এ বৈশ্বিক করপোরেট কর অন্তত ১৫ শতাংশ করার ব্যাপারেও সমর্থন জানানো হতে পারে। এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ১৪০টি দেশ এ প্রস্তাবে সায় দিয়েছে।
- সূত্র: বিবিসি