দলে দলে বেইজিং ছাড়ছেন নগরবাসী
মধ্য জুনের মাঝামাঝি চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের একটি কৃষিপণ্যের পাইকারি বাজার থেকে ছড়ায় দ্বিতীয় দফার কোভিড-১৯ সংক্রমণ। এই অবস্থায় ভ্রমণ এবং চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করে স্থানীয় প্রশাসন। তবে সম্প্রতি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিলের পরপরই, বিপুল সংখ্যক বেইজিংবাসীর মধ্যে নগরী ছেড়ে যেতে রেলগাড়ি ও বিমানের টিকিট কাটার ব্যস্ততা লক্ষ্য করা গেছে।
প্রশাসনের সাম্প্রতিক শিথিলতার আওতায়, আজ ৪ জুলাই থেকেই বেইজিংয়ের অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত এলাকার বাসিন্দারা কোভিড-১৯ পরীক্ষা না করেই নগরী ত্যাগ করতে পারবেন, বলে জানানো হয়। গত শুক্রবার নির্দেশনাটি সম্পর্কে নিশ্চিত করেন বেইজিং মিউনিসিপাল ব্যুরো অব পাবলিক সিক্যিউরিটির উপ-পরিচালক প্যান জুহং। তিনি জানান, মধ্য এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত এলাকাবাসী এই ছাড়ের আওতায় পড়বেন না। তাদেরকে নিজ নিজ বাসস্থানেই অবস্থান করতে হবে।
প্যান জুহংয়ের ঘোষণার আধাঘণ্টা পর থেকেই বেইজিং ছেড়ে যাওয়া ফ্লাইটের আসন বুক করার সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় পাঁচগুণ বেড়ে যায়। এমনকি আগামী দুই সপ্তাহের জন্য থাকার হোটেল খোঁজার সংখ্যা বেড়ে যায় ৩৫০ শতাংশ। খবর ব্লুমবার্গের।
অনলাইনে ট্র্যাভেল বুকিংয়ের একটি বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম- টংচেং ট্র্যাভেলের বরাত দিয়ে এসব সংখ্যা নিশ্চিত করে বেইজিং ডেইলি'তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন। কিউনার নামের অপর আরেক ট্র্যাভেল সাইট জানায়, ঘোষণার মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই বিমান এবং ট্রেনের টিকিট বিক্রি দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
এর আগে গত এপ্রিলেও বেইজিং বহির্মুখী ভ্রমণ টিকিট বিক্রির আকস্মিক চাহিদা বাড়ার ঘটনা ঘটে। ওই সময় মহামারি শুরু হওয়ার পর চীনের রাজধানীতে প্রথম জরুরি অবস্থা শিথিল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলে। তারপর থেকেই নাগরিক জীবন স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসাও শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেখানেই বাঁধ সাধে জুন মাসে দেখা দেওয়া দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ। ওই সময় আবারও কড়া নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হয় নগরবাসীকে। বন্ধ করে দেওয়া হয় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এই অবস্থায় গত শুক্রবারের নির্দেশনা কম ঝুঁকিপূর্ণ অনেক এলাকার মানুষকে নগর ছাড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। অবশ্য বেইজিং থেকে আসা নাগরিকদের করোনা টেস্ট বা কোয়েরেন্টিনে রাখার উদ্যোগ অন্যান্য রাজ্যের প্রশাসনগুলো নিতে পারে। সংক্রমণ ঝুঁকি বিবেচনার বিশেষত যখন চীনের একেক অঞ্চলে একেক রকম নিয়মনীতি চালু রয়েছে।
বেইজিংয়ে গত জুনে গোষ্ঠীবদ্ধ সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়। যাতে আক্রান্ত ৩৩১ জনকে গণহারে পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করে নগর প্রশাসন। রাজধানীতে দ্বিতীয় দফার এই সংক্রমণ মহামারি পরিস্থিতি থেকে চীনের উত্তরণের বিষয়টিকেও প্রশ্নের সম্মুখীন করে। বিশেষ করে, দেশটির শীর্ষ নেতৃত্ব পশ্চিমের উন্নত দেশগুলোর তুলনায় সফলভাবে করোনা সংক্রমণ প্রতিহত করা গেছে- বলে যে দাবি করেছেন তাকেই চ্যালেঞ্জ করছে যেন সাম্প্রতিক পরিস্থিতি। এর আগে গত ২ জুলাইয়েও নতুন দুটি সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়।