নির্বাসন থেকে ক্ষমতা গ্রহণ করতে দেশে ফিরলেন তালেবান নেতা বারাদার
তালেবান গোষ্ঠী একটি বিজয়ী ভিডিও প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা যায়, গতকাল (১৭ আগস্ট) তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গনি বারাদারের কান্দাহার প্রত্যাবর্তনে তার সহকর্মীরা তাকে বীরের মর্যাদা দিয়ে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। দলটি দাবি করেছে, পশ্চিমাদের অভিযানের কারণে বারাদার ২০ বছর নির্বাসনে ছিলেন এবং এতদিন পর জনগণ তাকে ফিরে পেয়ে আনন্দ উল্লাস করছে।
বারাদার এবং অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় নেতারা আজ কিংবা আগামীকালের মধ্যেই কাবুলে পৌঁছাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত রোববার তার দল কাবুল দখল করে নেওয়ার পরেই আফগান সরকারের পতন হয় এবং তিনি আফগানিস্তানের নতুন রাষ্ট্রনায়ক হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৫৩ বছর বয়সী বারাদার তালেবান সংগঠিত হওয়ার সময় সাবেক প্রধান কমান্ডার মোল্লা মোহম্মদ ওমরের অধীনে ডেপুটি কমান্ডারের দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন।
তালেবানের মুখপাত্র কর্তৃক প্রকাশিত সেই ভিডিওতে দেখা যায়, মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) বারাদার কান্দাহারে বিমান থেকে নামলে উল্লাসিত সহকর্মী ও যোদ্ধারা তাকে অভ্যর্থনা জানায়।
তিনি লিখেছেন, "মোল্লা বারাদার আখুন্দের নেতৃত্বে 'আফগানিস্তান ইসলামী আমিরাত'-এর একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল কাতার থেকে আজ (গতকাল) বিকেলে আমাদের প্রিয় দেশে পৌঁছে কান্দাহার বিমানবন্দরে অবতরণ করে।"
নিষিদ্ধ আলেম হিসেবে প্যারিসে ১৪ বছরের নির্বাসন কাটিয়ে ১৯৭৯ সালে আয়াতুল্লাহ খোমেনি যেভাবে ইরানে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন, মোল্লা বারাদার অনেকটা সেভাবেই আফগানিস্তান প্রত্যাবর্তন করলেন।
১৯৬৮ সালে উজুরগানে জন্ম নেয়া বারাদার বেড়ে ওঠেন তালেবান আন্দোলনের কেন্দ্রভূমি কান্দাহার শহরে। ১৯৮০'এর দশকে তিনি দেশটির তৎকালীন দল মুজাহেদিনদের সঙ্গে সোভিয়েত অভিযানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগ দেন এবং ১৯৮৯ সালে সোয়েত সেনা প্রত্যাহার পর্যন্ত যুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
পরবর্তীতে, আফগানিস্তানে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ এবং এর মাঝেই বারাদার তার সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ ওমরের সঙ্গে কান্দাহারে একটি ইসলামিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।
সেই স্কুলকে কেন্দ্র করেই তারা দুইজন তালেবান আন্দোলনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সক্ষম হন। তালেবান আন্দোলন এমন একটি আদর্শে বিশ্বাসী যা, কট্টরপন্থী রক্ষণশীলতাকে গ্রহণ করে, ইসলামী আমিরাত তৈরির জন্য সংগ্রাম শুরু করেছিলো।
পরবর্তীতে, ১৯৯৬ সালে পাকিস্তান সিক্রেট সার্ভিসের আর্থিক সহায়তায় তালেবান বাহিনী রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসলেও আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে সমর্থন দেওয়া এবং সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে, ২০০১ সালের মার্কিন সামরিক অভিযানে উৎখাত হয়।
এ সময় বারাদার আত্মগোপনে চলে গেলেও নির্বাসনে থেকেই তালেবান নেতৃত্বে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
২০১০ সালে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ এবং পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস আইএসআই-এর যৌথ অভিযানে পাকিস্তানের করাচি শহর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আট বছর পর, ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের অনুরোধে কাতারে তালেবানদের সঙ্গে চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির শর্ত ছিলো বারাদার শান্তি আনয়নে কাজ করবেন।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সরকারের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে নেওয়া এবং বিনিময়ে মার্কিন বাহিনীর আফগানিস্তান ত্যাগ করবে, এমন শর্তে বারাদার তালেবানের পক্ষে চুক্তি সই করেন তিনি।
দোহা চুক্তির সময় ট্রাম্প প্রশাসন আমলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও তালেবানের প্রতি রাজনৈতিক সমঝোতা গড়ে তোলার এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর সুযোগকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি সেই চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বারাদারের সঙ্গে ছবিও তুলেন।
তবে, সেই দোহা চুক্তিটি তখন একটি গুরুত্বপূর্ণ শান্তি ঘোষণা হিসেবে প্রচার করা হলেও এটা যে তালেবানদের একটি ছলনা ছাড়া আর কিছুই ছিলো, এখন সেটাই প্রমাণিত হলো।
যাইহোক, নতুন শাসনের অধীনে নারীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। বিজয়ী এলাকাগুলোয় ১২ বছরের কম বয়সী শিশু এবং অবিবাহিত বা বিধবা নারীদের যুদ্ধে পাওয়া 'খনিমাত' হিসেবে আখ্যা দিয়ে তালেবান সদস্যরা জোর করে বিয়ে করছে কিংবা যৌন দাসত্বে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে, মঙ্গলবার এক প্রেস কনফারেন্সে তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নারীদের বোরকা নয় বরং বাধ্যতামূলকভাবে হিজাব পরতে হবে। এছাড়া নারীদের উপর আর কোনো কঠোরতার কথা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ না করলেও মুজাহিদ বলেছেন, আফগানিস্তান 'শক্তিশালী ইসলামী মূল্যবোধ'-এর দ্বারা পরিচালিত হবে।
মুজাহিদ দাবি বলেন, "আমরা শরিয়া ব্যবস্থার অধীনে নারীদের অধিকারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। তারা আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করতে চাই যে এখানে কোনো ধরণের বৈষম্য থাকবে না।"
যৌন দাসত্বের বিষয়টি তিনি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে বলেন, এই ধরনের কাজ ইসলাম পরিপন্থী।
তিনি আরও বলেন,"আমরা কি ধরনের আইন জাতির সামনে উপস্থাপন করবো, তা নির্ধারণ করতে যাচ্ছি। এখানে সব মানুষের অংশগ্রহণে একটি সরকার গঠন করা হবে।"
পশ্চিমা শক্তি সমর্থিত সরকারকে যারা সমর্থন করেছিলো তাদের প্রতি প্রতিশোধ নেওয়া হবে এমন একটি ভয় সবার মনে বিরাজ করলেও প্রেস কনফারেন্সে সেই ভয়কে উড়িয়ে দেন মুজাহিদ। তিনি বলেন, তালেবান এখন আর কোনো অভ্যন্তরীণ কিংবা বাহ্যিক শত্রু চায় না।
এর পূর্বে তালেবান মুখপাত্র সুহাইল শাহিন স্কাই নিউজকে বলেন, "হাজার হাজার স্কুলে মেয়েদের পড়াশোনা অব্যাহত থাকবে। যারা আগে আফগান সরকারের পক্ষে কাজ করেছিল তাদের জন্য 'সাধারণ ক্ষমা' ঘোষণা করা হয়েছে এবং তাদের সম্পত্তি রক্ষা এবং তাদের সম্মান করা হবে। এবং আফগানিস্তানে তাদের জীবন নিরাপদ।"
মুজাহিদ নতুন তালেবান শাসনের অধীনে জনগণের নিরাপদ থাকার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন এবং দুই দশক আগের সেই সময়ের চেয়ে বর্তমানটা ভিন্ন হবে বলেও দাবি করেন।
কাবুলের আতঙ্কিত পরিবারগুলো তাদের শহর দখল করে নেওয়া তালেবান যোদ্ধাদের হাতে লাল ও সাদা গোলাপ তুলে দিয়েছে। কারণ তারা এখন তালেবানদের সঙ্গের বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়। আফগান সংস্কৃতিতে লাল গোলাপ বন্ধুত্বের প্রতীক এবং সাদা ফুলের অর্থ হলো ক্ষমা।
১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান শাসনের অধীনে মেয়েদের স্কুল বন্ধ ছিল, নারীদের ভ্রমণ ও কাজ করা নিষিদ্ধ ছিলো, এমনকি নারীদের জনসম্মুখে আসতে হলে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে একটি বোরকায় আবৃত করে আসতে হতো।
পোশাককে কেন্দ্র করে উদ্বেগের পাশাপাশি অসংখ্য দেশ এবং মানবাধিকার গোষ্ঠী আফগানিস্তানে নারী শিক্ষার সুযোগ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে। তবে তালেবান মুখপাত্র সুহাইল শাহিন তাদেরকে এসব বিষয়ে ইতিবাচকভাবে আশ্বস্ত করেন।
তালেবানরা হয়তো পুরো বিশ্বকে এটা বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, গত তালেবান শাসনের তুলনায় এবারের শাসন ব্যবস্থা সহনশীল হবে; তবে যে নেতারা এমন দাবি করছেন তারাই আফগানিস্তান দখল করতে এক রক্তক্ষয়ী দীর্ঘ যুদ্ধের ইতিহাসের মধ্যে দিয়ে বর্তমান সময়ে পৌঁছেছেন।
তালেবানের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অনেকে আজও নেতৃত্বস্থানীয় পদে আছেন, যাদের নির্দেশনায় জঙ্গিরা আজ আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। আর এই যুদ্ধে যেসব নেতারা মারা গেছে তাদের পুত্ররাও পরবর্তীতে দলে যোগ দিয়েছে।
হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা, আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ আমীর
হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা তালেবানের 'বিশ্বস্ত নেতা' হিসেবে পরিচিত। তালেবানের রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সামরিক নীতির সর্বোচ্চ কমান্ডার তিনি।
আখুন্দজাদা আফগানিস্তানের আমির উপাধি গ্রহণ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি ১৯৫৯ সালের দিকে কান্দাহার প্রদেশের পাঞ্জওয়াই জেলার একজন ধর্ম পণ্ডিতের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। সোভিয়েত আক্রমণের সময় তার পরিবার তাদের বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় এবং তিনি একজন যুবক হিসেবে প্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দেন।
১৯৯৪ সালে তালেবান গড়ে ওঠার সময় তিনি তালেবানে যোগ দেওয়া প্রথম দলের যোদ্ধাদের একজন।
মোল্লা আবদুল গনি বারাদার, তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান
আফগানিস্তানের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নেতা বারাদার। ১৯৬৮ সালে উরুজগনে জন্ম নেন। কিন্তু বেড়ে ওঠেন কান্দাহারে। তিনি ১৯৯৪ সালে তালেবানে যোগদান করেন।
১৯৯০ এর দশকে সাবেক তালেবান প্রধান মোল্লা ওমরের প্রচেষ্টায় যে স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো মূলত সেখান থেকেই তালেবান গোষ্ঠী সম্প্রসারিত হতে থাকে।
এছাড়া তিনি তালেবানের প্রধান চার নেতার মধ্যে একজন এবং তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোহম্মদ ওমরের পুত্র ইয়াকুবের ঘনিষ্ঠজন।
সিরাজউদ্দিন হাক্কানি, সোভিয়েত বিরোধী জিহাদের খ্যাতিমান কমান্ডারের পুত্র
হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধানের দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে তালেবানের ডেপুটি কমান্ডারের দায়িত্বেও নিয়োজিত আছেন সিরাজউদ্দিন হাক্কানি। তিনি ২০০০ সালে তালেবানে যোগদান করেন।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার মতে, হাক্কানি নেটওয়ার্ক হল একটি দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর প্রধান কর্মসূচী আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো। এছাড়া ধারণা করা হয়, গত কয়েক বছরে কাবুলে বেশ কয়েকটি হাই-প্রোফাইল হামলা চালিয়েছে তারা।
মোল্লা ইয়াকুব, তালেবান প্রতিষ্ঠাতার পুত্র
তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের পুত্র মোল্লা ইয়াকুব। তিনি গোষ্ঠীটির শক্তিশালী সামরিক কমিশনের নেতৃত্ব দেন। যুদ্ধে বিদ্রোহীদের কৌশলগত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নিয়োজিত ফিল্ড কমান্ডারদের একটি বিশাল নেটওয়ার্কের তত্ত্বাবধায়ক হলেন ইয়াকুব।
প্রতিষ্ঠাতার পুত্র হিসেবে ত্রিশ বছর বয়সী ইয়াকুব সংগঠনটির মাঝে সবার কাছে বিশেষ মর্যাদার পাত্র। ধারণা করা হয়, তালেবানের সাম্প্রতিক অভিযানে তিনি বড় ভূমিকা রেখেছেন।
আব্দুল হাকিম হাক্কানি, ঊর্ধ্বতন বিচারক এবং তালেবানের আলোচনাকারী দলের প্রধান
৫৪ বছর বয়সী আবদুল হাকিম হাক্কানি দলটির সর্বোচ্চ কমান্ডার আখুনজাদার অতি বিশ্বাসভাজন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।
২০০১ সালের মার্কিন অভিযানে অন্য সব নেতাদের মত তিনিও পাকিস্তানে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। তবে এখন তিনি ফিরে এসেছেন এবং আফগান সরকারের মধ্যস্ততাকারী দলের প্রধানের পদ গ্রহণ করেছেন।
শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই, তালেবানের দোহা অফিসের প্রধান
৫৮ বছর বয়সী শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাইও ১৯৯৪ সালেই তালেবানে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি দোহায় তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান এবং ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণ করার সময় এই গোষ্ঠীর সাবেক উপমন্ত্রী ছিলেন।
কাবুল দখল করে নেয়ার পর লাখ লাখ আফগানী এবং বিদেশী নাগরিক আফগানিস্তান ত্যাগ করতে মরিয়া হতে ওঠে। মার্কিন বিমান বাহিনীর ফ্লাইটগুলোয় ছিলো উপচেপড়া ভিড়। ধারণ ক্ষমতার চারগুণ যাত্রী নিয়ে আকাশে উড়েছিলো একটি বিমান। এছাড়া জোরপূর্বক বিমানে ওঠার সময় মার্কিন বাহিনীর গুলিতে দুই জন, বিমানের চাকায় পিষ্ট হয়ে তিনজন এবং ঝুলন্ত অবস্থায় বিমান থেকে পড়ে দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
- সূত্র- ডেইলি মেইল