নিয়ম ভেঙ্গেছে ভারত, সীমান্ত শান্ত করার দায় তাদের: চীন
সীমান্ত সংঘাত নিয়ে এশিয়ার দুই পরাশক্তি ভারত ও চীনের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ফের ভারতের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগ তুলেছে প্রতিবেশি দেশ চীন।
লাইন অব একচ্যুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) পেরিয়ে ভারতীয় বাহিনীই স্থিতাবস্থা নষ্ট করেছে বলে বুধবার নতুন করে দাবি করল চীন। সেই কারণে ভারত ও চীনের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় শান্তি ফেরানোর দায় ভারতের ওপরেই বর্তায় বলে দাবি করেছে তারা।
ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি মাসের গোড়ার দিকে মস্কোয় ভারত ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং ওয়াং ই-র মধ্যে বৈঠকে পাঁচ দফা ঐকমত্যকে স্বাগত জানিয়ে ভারতের চীনা দূতাবাস বিবৃতি জারি করেছিল। এর পরে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে সিনিয়র কম্যান্ডার পর্যায়ে পরবর্তী বৈঠকের জন্য চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ভারতের বিরুদ্ধে ফের আগ্রাসনের অভিযোগ তুলল চীন। এভাবে সীমান্তে সেনাবাহিনীর সক্রিয়তা রোধ করে উত্তেজনা প্রশমন করার জন্য বল কার্যত ভারতের কোর্টেই ঠেলে দিল চীন।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মঙ্গলবার লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে বিবৃতি দেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই বিবৃতির জেরেই ফের নিজেদের বক্তব্য প্রকাশ করেছে চীন। সামরিক, কূটনৈতিক স্তরে এত আলোচনা সত্ত্বেও লাদাখ সীমান্ত যে অশান্তই, মঙ্গলবার সংসদে দাঁড়িয়ে সেই কথা স্বীকার করে নেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং!
মঙ্গলবার লোকসভায় দাঁড়িয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, সীমান্ত সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানই চায় ভারত, কিন্তু সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রশ্নে আপোস করে নয়। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চীন একপাক্ষিক ভাবে স্থিতাবস্থা নষ্টের চেষ্টা করলে ভারত তা মানবে না। সীমান্তে যে কোনও কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত ভারতীয় সেনা।
লাদাখ সীমান্তের অশান্তি মিটছে না কেন?
এই সময়ের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এর পুরো দায় চীনের ঘাড়েই চাপান রাজনাথ। তার দাবি, ঐতিহাসিক ভাবে নির্ধারিত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা চীন মানে না বলেই অশান্তি।
ইতিহাসের প্রসঙ্গ টেনে রাজনাথ বলেন, লাদাখের ৩৮,০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখল করে রয়েছে চীন। ১৯৬৩ সালের চীন-পাকিস্তান সীমান্ত চুক্তিতে পাকিস্তান বেআইনি ভাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৫,১৮০ বর্গকিলোমিটার ভারতীয় ভূখণ্ড চীনের হাতে তুলে দিয়েছে। তারপরও অরুণাচল প্রদেশে ৯০,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে নিজের বলে দাবি করছে বেজিং! সেই দাবি যে ভুল নয়, অরুণাচল সীমান্তের সাম্প্রতিক চীনা আগ্রাসনই তা বুঝিয়ে দিচ্ছে।