পুরুষদের প্রাণনাশের কারণ হতে পারে অসুখী দাম্পত্য জীবন: গবেষণা
অসুখী দাম্পত্য জীবনের ফলে পুরুষদের জীবনে ভয়াবহ বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে, এমনকি প্রাণনাশের আশঙ্কাও থাকে। সম্প্রতি জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, পুরুষদের মধ্যে উচ্চ মৃত্যুহারের সঙ্গে অসুখী দাম্পত্যজীবনের সম্পর্ক আছে।
তেল আবিব ইউনিভার্সিটির গবেষকরা তিন দশক ধরে প্রায় নয় হাজার জন পুরুষের স্বাস্থ্য বিশ্লেষণ করেন। দীর্ঘ তিন দশকের গবেষণা থেকে তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, যারা তাদের দাম্পত্যজীবন নিয়ে অসুখী ছিলেন তাদের মধ্যে স্ট্রোকসহ অন্যান্য জটিলতায় মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি থাকে।
এ ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যারেজ থেরাপিকে জনপ্রিয় করার আহ্বান জানান গবেষকরা।
গবেষকরা ৮ হাজার ৯৪৫ জন ইসরায়েলি পুরুষের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করেন। অংশগ্রহণকারীরা এর আগে ১৯৬৫ সালে শুরু হওয়া আরেকটি মৃত্যুহার সংশ্লিষ্ট গবেষণায়ও অংশ নিয়েছিলেন।
এসব পুরুষদের প্রত্যেকেই চল্লিশোর্ধ। তাদেরকে নিজেদের বৈবাহিক জীবনকে এক থেকে চারের মধ্যে র্যাংকিং করতে বলা হয়।
যারা তাদের বৈবাহিক জীবন সম্পর্কে র্যাংকিং-এ সবচেয়ে কম নম্বর দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে বেশি নম্বর দেওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় স্ট্রোকে মৃত্যুবরণ করার ঝুঁকি ৬৯ শতাংশ বেশি।
দাম্পত্য জীবনে অসুখীদের মধ্যে সার্বিকভাবে সব ঝুঁকির হার ১৯ শতাংশ বেশি।
কম বয়সীরা অধিক ঝুঁকিতে
গবেষকরা আরও আবিষ্কার করেন, তুলনামূলক কম বয়সীদের মধ্যে মৃত্যু ঝুঁকি আরও বেশি। ৫০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুহার ৩৯.৪ শতাংশ, এ বয়সীরা দাম্পত্যজীবনে সবচেয়ে অসুখী থাকার কথা জানিয়েছিলেন।
বয়স্কদের মধ্যে এ হার ছিল ৬.৫ শতাংশ।
গবেষণাটির প্রধান গবেষক ড. শাহার লেভ-আরি দ্য টাইমস অব ইসরায়েলকে বলেছিলেন, "আমরা আশ্চর্যজনক কিছু বিষয়ের সন্ধান পেয়েছি। দাম্পত্য জীবনে অসুখী হওয়ার ব্যাপারটি পুরুষদের মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকির কারণ হিসেবেও কাজ করতে পারে। ঠিক যেমনভাবে ধুমপান বা শরীরচর্চা না করা মৃত্যু ঝুঁকির কারণ হতে পারে,"
ড. লেভ-আরি জানান, তিনি ১৯৬৫ সালের গবেষণাটির তথ্যও পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বর্তমান সময়ের গবেষকদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের সংযোগ-সম্পর্কের ব্যাপারে আরও ভালো ধারণা থাকায় আগের গবেষণাটি পর্যালোচনা করতে চান তিনি।
সাধারণ জনগণের জন্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রচারণার অংশ হিসেবেই দাম্পত্য জীবনের সন্তুষ্টি মূল্যায়ন ও তরুণ দম্পতিদের জন্য বিয়ে সংক্রান্ত শিক্ষা কর্মসূচির বাস্তবায়ন প্রয়োজন," লিখেন গবেষকরা।
- সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ