প্রতিনিধি নিয়ে বিতর্কে সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিতে পারবে না আফগানিস্তান, মিয়ানমার
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে নিজেদের বক্তৃতা স্লট থেকে শেষ মুহূর্তে সরে এসেছে আফগানিস্তান এবং মিয়ানমার। অধিবেশনে এই দুটি দেশের প্রতিনিধিত্ব কে করবে তা নিয়ে বিতর্কের জেরে এ সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
চলতি বছরের শুরুতে আফগানিস্তানের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে তালেবান।অন্যদিকে মিয়ানমারের সরকারকে উৎখাত করে দেশটির সেনাবাহিনী।
গত সোমবার সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখার কথা ছিল জাতিসংঘে আফগানিস্তানের প্রতিনিধি গোলাম ইসাকজাইয়ের।
ইসাকজাই আফগানিস্তানের প্রাক্তন গণতান্ত্রিক সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতিনিধি। কিন্তু গত মাসে তালেবান দেশটিকে দখলে নিলে ভেঙে পড়ে সেখানকার রাজনৈতিক কাঠামো। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফেন দুজারিকের মতে, ইসাকজাইয়ের কর্মীরা গত সপ্তাহের শেষে জাতিসংঘকে জানান যে তিনি অধিবেশনে ভাষণ দেবেন না।
দুজারিক বলেন, "অধিবেশনে ভাষণ না দিলেও তিনি এখনও আফগানিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবেই আছেন।"
আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্বকারী নিয়ে গত সপ্তাহে বিতর্ক শুরু হয়। সিএনএন এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ইসাকজাইয়ের পরিবর্তে তালেবান তাদের নিজস্ব দূত মোহাম্মদ সুহেল শাহীনকে জাতিসংঘে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছিল।
এদিকে, তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরও ইসাকজাই তার দেশের পক্ষ থেকে বিদেশি দূতদের সাথে বৈঠক চালিয়ে গেছেন। এমনকি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তালেবানকে আরও গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের জন্য জোর দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
জাতিসংঘের শংসাপত্র কমিটি আগামী নভেম্বরের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আফগানিস্তান ছাড়াও এ বিতর্কের মধ্যে রয়েছেন জাতিসংঘে মিয়ানমারের প্রতিনিধি কিয়াও মো তুন। দেশটির সাবেক সরকার দ্বারা নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি।
গত সোমবার ভাষণ দেবার কথা থাকলেও তিনি সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন বলে সিএনএনকে নিশ্চিত করেন কিয়াও মো তুন।
তিনি বলেন, "গত সপ্তাহে আমরা স্পিকারের তালিকা থেকে মিয়ানমারের নাম প্রত্যাহারের বিষয়টি সচিবালয়কে জানিয়েছি। সংশোধিত তালিকা অনুযায়ী আমরা ভাষণ দিচ্ছি না।"
এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। তবে একটি পররাষ্ট্র নীতির প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, আপাতত ইউএস-চায়না-ব্রোকার্ড চুক্তি অনুযায়ী জান্তাকে (মিয়ানমারের সামরিক শাসক বাহিনী) জাতিসংঘের ক্রেডেনশিয়াল দেওয়া হবে না।
জাতিসংঘের একজন কূটনীতিক সিএনএনকে জানান, রাষ্ট্রদূত কিয়াও মো তুন তার পদে বহাল থাকা পর্যন্ত রাশিয়া, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মিয়ানমারের বিষয়ে বোঝাপড়া চলবে।
- সূত্র- সিএনএন