বার্ষিক আয় ২ লাখ হলেও, ৮০ বছরের বৃদ্ধার সুইস ব্যাংক হিসাবে পাওয়া গেল ২০০ কোটি রুপি!
ভারতে ৮০ বছরের এক অশতিপর বৃদ্ধা রেণু থারানির ঘোষিত মাসিক আয় ১৪ হাজার রুপি। অথচ তার নামেই কিনা সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাওয়া গেছে ১৯৬ কোটি রুপি সম পরিমাণ অর্থবিত্ত! দেশটির গণমাধ্যমে প্রকাশ, করফাঁকি দিয়েই সুইস ব্যাংকে কালো টাকার পাহাড় জমিয়েছিলেন রেণু থারানি নামের এ বৃদ্ধা।
ভারতের আয়কর বিভাগের এক বৈদেশিক তদন্ত সূত্রে রেণু থারানির বিপুল বিত্তের কথা জানানো হয়। বৃদ্ধাকে এ ঘটনায় জরিমানা করে তার প্রকৃত সম্পদ অনুসারে আয়কর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির ট্যাক্স অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল- শীর্ষক কর আদালত।
ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস সূত্রে জানা গেছে, জেনেভার এইচএসবিসি ব্যাংকে রেণু থারানির একটি অ্যাকাউন্ট ছিল। আবার এ সুইস ব্যাংকটিই থারানির পারিবারিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা তহবিল- থারানি ফ্যামিলি ট্রাস্টের দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করতো।
২০০৪ সালে করফাঁকি দিতে অফশো'র উৎস কেম্যান আইল্যান্ডস থেকে জিডব্লিউ ইনভেস্টমেন্ট নামের একটি ভুয়া কোম্পানির নামে ব্যাংক হিসাবটি খোলা হয়। পরবর্তীতে, ওই কোম্পানিটি থেকেই এইচএসবিসির জেনেভা শাখার পারিবারিক ট্রাস্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা করা হয়। রেণু থারানিকে কোম্পানির একজন পরিচালক দেখিয়ে অর্থ স্থানান্তর করে কোম্পানিটি।
২০০৪-০৫ সালের আয়কর ট্যাক্স ফাইলিংয়ের সময় এ প্রসঙ্গে কিছুই জানাননি থারানি। তবে বৃদ্ধার পারিবারিক সম্পদ সম্পর্কে অবহিত থাকায় ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর তার প্রকৃত সম্পদ অনুসন্ধান লাভ করে আয়কর বিভাগ। এরপর তার বিরুদ্ধে কর আদালতের মুম্বাই শাখায় মামলা করা হয়।
মামলার প্রেক্ষিতে সুইস ব্যাংকে তার কোনও হিসাব নেই বলে ঘোষণা করেন থারানি। এফিডেফিডে- তিনি জিডব্লিউ ইনভেস্টমেন্ট নামের কোনো কোম্পানির উত্তরাধিকারী বা পরিচালক নন, বলেও জানিয়েছিলেন। এমনকি পরবর্তীতে তিনি নিজেকে অনাবাসী নাগরিক হিসেবেও দাবি করে জানান, একারণে তার কাছ থেকে আয়কর আদায় করা আইনত সম্ভব নয়।
তবে শেষোক্ত দাবি ধোপে টেকেনি। কারণ ২০০৫-০৬ সালের আয়কর রিটার্ন নথিতে রেণু নিজেকে বেঙ্গালুরুর অধিবাসী একজন ভারতীয় করদাতা বলে ঘোষণা করেছিলেন। এসময়, তিনি বাৎসরিক আয় এক লাখ ৭০ হাজার রুপি বলেও জানান। সেই সূত্র ধরেই তার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক জরিমানাসহ আয়কর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আদালতের রায়ে বলা হয়, রেণু কোনো বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব নন বা কোনো দাতব্য সংস্থাও পরিচালনা করেন না। তাই এত স্বল্প সময়ের ভেতরে এ পরিমাণ অর্থ কীভাবে তার ব্যাংক হিসাবে জমা হতে পারে, তা বোধগম্য নয়। এতে প্রমাণিত হয়, তিনি প্রথমবার আয়কর রিটার্নের সময়েই ইচ্ছাকৃতভাবে নিজ সম্পদ গোপন করেছেন।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস