ভারতের উত্তরপ্রদেশে গঙ্গার তীরে মাটিচাপা কয়েক হাজার দেহ
গত বেশ কয়েকদিন ধরেই উত্তরপ্রদেশে গঙ্গায় বহু মৃতদেহ ভাসতে দেখা গিয়েছে। এরপর গঙ্গারপাড়ে মিলেছে প্রচুর কবর। মৃতদেহগুলো কোভিড আক্রান্তদের বলে মনে করা হচ্ছে।
দেশটিতে চলমান কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই গঙ্গা পাড়ে মিলছে প্লাস্টিকে মোড়ানো শবদেহ, কয়েক হাজার দেহ বালিচাপা দেওয়া। এই মৃতদেহগুলোও করোনা আক্রান্তদের বলে মনে করা হচ্ছে। শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশের উন্নাওতেই মিলেছে ৮০০টি কবর।
জানা গেছে, ভারতের উত্তরপ্রদেশের যে ২৭ জেলা দিয়ে গঙ্গা বয়ে গিয়েছে, সেখানে নদীর তীরে করোনা আক্রান্তদের দেহ কবর দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০০ কবর মিলেছে। উত্তরপ্রদেশের উন্নাও ছাড়া বিজনৌর, মেরঠ, মুজফ্ফরনগর, বুলন্দশহর, হাপুর, আলিগড়, বদায়ুঁ, শাহজাহানপুর, কনৌজ, কানপুর, রায়বরেলী, ফতেপুর, প্রয়াগরাজ, প্রতাপগর, মির্জাপুর, বারাণসী, গাজিপুর, বালিয়াতে এই হৃদয়বিদারক চিত্র দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে সবথেকে বেশি সংখ্যক কবর মিলেছে উন্নাও, কানপুর, কনৌজ, গাজিপুর এবং বালিয়ায়।
উন্নাওয়ের শুক্লাগঞ্জ ও বক্সার ঘাটে মিলেছে ৮০০'রও বেশি কবর। এছাড়া কনৌজের মহাদেবী গঙ্গাঘাটের কাছে ৩৫০'র বেশি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কানপুরের শেরেশ্বর ঘাটে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে ৪০০'র বেশি মৃতদেহ। গাজিপুরে গঙ্গার তীরে ২৮০টির বেশি মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়েছে।
ভারতের করোনা পরিস্থিতি দিনদিন ভয়ংকর হচ্ছে। দৈনিক সংক্রমণ বাড়ছে। হাসপাতালগুলোতে বেড নেই। অক্সিজেনের অভাব। প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কে রয়েছে দেশটির নাগরিকেরা। এই আবহে দেশের আতঙ্ক বাড়িয়েছে নদীতে ভেসে যাওয়া শবদেহ এবং নদীর পাড়ে কবর।
কখনও উত্তরপ্রদেশ, কখনও বিহার বা কখনও মধ্যপ্রদেশ। গত চার-পাঁচদিন ধরে নদীতে মৃতদেহ ভেসে যাওয়া এবং নদীর তীরে মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার খবর আতঙ্ক ছড়িয়েছে দেশজুড়ে। জানা গিয়েছে, শ্মশনে যত শবদেহ নিয়ে আসা হয়, তার মধ্যে অধিকাংশ দেহ পোড়ানো হয়। বাকি দেহগুলো বালিতে পুঁতে দেওয়া হয়। কাঠের ঘাটতি থাকার কারণে দেহগুলো এভাবে চরে পুঁতে দেওয়া হচ্ছে। এতে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। গঙ্গার তীরে বসবাসকারীদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ এসে দেহগুলো সৎকারের ব্যবস্থা করলেও প্রতিদিন নতুন নতুন মরদেহ পোঁতা হচ্ছে মাটিতে।