ভারতের নির্ভয়া ধর্ষণ: ইট-পাথরের বস্তা ঝুলিয়ে ফাঁসির মহড়া কারাগারে
ভারতের নির্ভয়া ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির ফাঁসির মহড়া হয়ে গেল দিল্লির তিহার জেলে। আগামী ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় পবন গুপ্ত, অক্ষয় ঠাকুর, বিনয় শর্মা এবং মুকেশ সিংহকে ফাঁসি কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছে পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। তার প্রস্তুতি হিসাবেই রোববার (১২ জানুয়ারি) তিহার জেলে ফাঁসির মহড়া সারা হয়। চার জনের ওজন অনুসারে ইঁট-পাথর ভর্তি বস্তা ঝুলিয়ে ফাঁসিকাঠ পরীক্ষা করে দেখে নেন জেল কর্তৃপক্ষ।
২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ২৩ বছর বয়সী নির্ভয়াকে গণধর্ষণ করে হত্যার দায়ে ছয় আসামির মধ্যে চারজনের ফাঁসির আদেশ দেয় দিল্লির ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। ২০১৪ সালে দিল্লি হাইকোর্ট চারজনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখে।
আগামী ২২ জানুয়ারি পৃথিবীর বৃহত্তম কারাগার চত্বর তিহারের ৩ নম্বর জেলে ওই চারজনকে ফাঁসি কার্যকর করা হবে। সেখানেই ফাঁসির মহড়া করা হয় বলে জানা গিয়েছে। চারজনকে একসঙ্গে ফাঁসি দেওয়া হবে সেখানে, যা আগে কখনও ঘটেনি।
মেরঠের পবন জল্লাদই নির্ভয়ার খুনিদের ফাঁসি কার্যকর করবেন বলে জানিয়েছে ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই। এর পাশাপাশি, আসামিদের মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে নিয়মিত তাদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলছেন তিহার কারা কর্তৃপক্ষ।
এই মুহূর্তে ২ এবং ৩ নম্বর জেলে রাখা হয়েছে ওই চার জনকে। আদালত সাজা সংশোধনের আবেদন খারিজ করে দিলে তাদের ৩ নম্বর জেলে সরিয়ে আনা হবে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে তাদের।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯ টায় ডাক্তারি পড়ুয়া জ্যোতি সিং পাণ্ডে এবং তার বন্ধু অন্দ্র সিং পাণ্ডে ‘লাইফ অব পাই’ সিনেমাটি দেখে বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন।
পরে ঐ বাসের চালকসহ মোট ৭ জন অন্দ্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে আর তারপর গণধর্ষণ করে জ্যোতিকে। গণধর্ষণের পর শারীরিক নিপীড়ন চালিয়ে নগ্ন অবস্থায় চলন্ত বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয় তারা নির্ভয়াকে।
এর ১৩ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, নিউমোনিয়া এবং তলপেটে জীবাণু সংক্রমণে মারা যায় জ্যোতি।
এই ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে পুরো ভারত এবং ছড়িয়ে পড়ে ভারতের বাইরেও। জ্যোতিকে ‘নির্ভয়া’ এবং ‘ডটার অব ইন্ডিয়া’ উপাধি দেয়া হয়। সে বছর জেন্ডার বিশেষজ্ঞগণ জি-২০ দেশগুলোর মধ্যে ভারতকে নারীর জন্য সবচাইতে অনিরাপদ দেশ বলে ঘোষণা দেন।