নির্ভয়ার ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
অবশেষে ভারতে নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে দোষী চার জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে কঠোর নিরাপত্তায় নয়াদিল্লির তিহার জেলে তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দণ্ড নিশ্চিত করা হয়।
দণ্ডিতরা হলেন- অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্তা, বিনয় শর্মা ও মুকেশ সিংহ।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে চলন্ত বাসে ওই প্যারামেডিকেল শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের পর রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দেয় ৬ ব্যক্তি। নির্মম অত্যাচারের শিকার হয়ে ১৩ দিন পর মারা যান নির্ভয়া। নৃশংস এ ঘটনা পুরো ভারতজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। দিল্লির সাকেত আদালতে গঠন করা হয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
ধর্ষণ, খুন, অপহরণ, প্রমাণ লোপাট এবং নির্ভয়ার বন্ধুকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে দণ্ডিতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় সংশোধনাগার থেকে ৩ বছর পর মুক্তি পেয়ে যায়।
আরেক আসামি রাম সিং জেলে আত্মহত্যা করে।
২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ২৩ বছর বয়সী নির্ভয়াকে গণধর্ষণ করে হত্যার দায়ে ছয় আসামির মধ্যে চারজনের ফাঁসির আদেশ দেয় দিল্লির ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। ২০১৪ সালে দিল্লি হাইকোর্ট চারজনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখে।
অতঃপর দীর্ঘ ৭ বছর পর বহু নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে বাকি চার অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো। রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করে ভারতের মেয়েদের জন্য ন্যায় বিচারের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় নির্ভয়ার পরিবার।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯ টায় ডাক্তারি পড়ুয়া জ্যোতি সিং পাণ্ডে এবং তার বন্ধু অন্দ্র সিং পাণ্ডে 'লাইফ অব পাই' সিনেমাটি দেখে বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন।
পরে ঐ বাসের চালকসহ মোট ৭ জন অন্দ্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে আর তারপর গণধর্ষণ করে জ্যোতিকে। গণধর্ষণের পর শারীরিক নিপীড়ন চালিয়ে নগ্ন অবস্থায় চলন্ত বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয় তারা নির্ভয়াকে।
এর ১৩ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, নিউমোনিয়া এবং তলপেটে জীবাণু সংক্রমণে মারা যায় জ্যোতি।
এই ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে পুরো ভারত এবং ছড়িয়ে পড়ে ভারতের বাইরেও। জ্যোতিকে 'নির্ভয়া' এবং 'ডটার অব ইন্ডিয়া' উপাধি দেয়া হয়। সে বছর জেন্ডার বিশেষজ্ঞগণ জি-২০ দেশগুলোর মধ্যে ভারতকে নারীর জন্য সবচাইতে অনিরাপদ দেশ বলে ঘোষণা দেন।