ভারত-চীন সীমান্ত সংঘর্ষ, ১১ সেনা আহত
ভারত ও চীনের সেনাদের মধ্যে একটি আগ্রাসী আন্তসীমান্ত হাতাহাতি লড়াইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন সেনা সামান্য হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র।
লড়াই সংগঠিত হয় চীন অধিকৃত তিব্বতের কাছাকাছি দুর্গম পার্বত্য গিরিপথে। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ দুই প্রতিবেশীর মাঝে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সীমান্ত উত্তেজনার এটি অতি-সাম্প্রতিক ঘটনা।
ভারতীয় মুখপাত্র জানান, 'দুই পক্ষ থেকেই আগ্রাসী ব্যবহার করার ফলে কিছু সেনা সামান্য আহত হয়। এরপর স্থানীয় কমান্ড্যার পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে উভয়পক্ষ আরও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত থাকে। সীমান্ত বিরোধ নিরসনের প্রচলিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই সেনারা বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে।'
গত শনিবারের ওই সংঘর্ষে ১১ জন সেনা আহত হন। এদের মধ্যে চারজন ভারতীয় এবং বাকি সাতজন চীনা সৈনিক বলে জানায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। উত্তর সিকিমের সীমান্তে টহল দেওয়ার সময় নুকা লা নামক একস্থানে উভয়পক্ষ ওই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল।
মার্কিন বার্তা সংস্থা সিএনএনের ভারতীয় সহযোগী প্রতিষ্ঠান নিউজ ১৮ ঘটনাস্থলের কথা নিশ্চিত করে।
আলোচিত অঞ্চলে সীমান্তরেখা নির্ধারিত না থাকায় উভয়পক্ষের সেনা এবং সীমান্তরক্ষীদের মাঝে মুখোমুখি অবস্থানের ঘটনা প্রায়শই ঘটে, এবং এই উত্তেজনা খুবই স্বল্পস্থায়ী হয় বলে জানিয়েছে ভারতীয় সূত্র।
এই বিষয়ে সিএনএন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছেও প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করে। তবে চীন এই বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দিতে রাজী নয়।
ভারত এবং চীনের মাঝে বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ স্থলসীমান্ত বিদ্যমান। ১৯৬২ সালে দুই দেশ এক রক্তক্ষয়ী সীমান্ত যুদ্ধে জড়ায়। ওই যুদ্ধের কারণও ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দ্বারা নির্ধারিত বিতর্কিত পাহাড়ি সীমান্ত রেখা। এরপর থেকেই পরবর্তী কয়েক দশকে বেশ কয়েকবার উভয় দেশের সীমান্ত রক্ষীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
সর্বশেষ এমন ঘটনা ঘটেছে ২০১৭ সালে ভুটানের দোকলাম উপত্যকায়। নাথু লা চৌকিতে ভুটানের সঙ্গে চীনের সীমান্ত চিহ্নিত করার ওই বিরোধে জড়ায় সেখানে মোতায়েন থাকা ভারতীয় সেনারা। চিকেনস নেক নামে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ওই করিডর নিয়ে তখন বেশ তীব্র রণ-উন্মাদনা লক্ষ্য করা গেছে উভয় দেশে।
অবশ্য পরবর্তীতে পারমাণবিক শক্তিধর উভয় দেশ শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এই বিরোধের নিষ্পত্তি করে।