ভুটান, বাংলাদেশের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করবে ভারতের দীর্ঘতম সেতু
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার দেশটির দীর্ঘতম সেতু নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন। ব্রহ্মপুত্র নদের উপরে নির্মিতব্য সেতুটি মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং বারাক উপত্যকার জন্য তৃতীয় আরেকটি বিকল্প সংযোগ পথ তৈরী করবে।পাশাপাশি এই সেতুটি নির্মাণ হলে ভুটান ও বাংলাদেশে ভ্রমণের সময় এবং দূরত্ব হ্রাস হবে।
এই ধুবরি-ফুলবাড়ী সেতুটি ব্রহ্মপুত্র নদের উপর নির্মিত অষ্টম সেতু।
পাঁচ হাজার কোটি রূপি ব্যয়ে নির্মিত ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই চার লেনের সেতুটির নির্মাণ সম্পন্ন হলে এটি বর্তমান দীর্ঘতম সেতু, ঢোলা-সাদিয়া সেতুর চাইতেও দ্বিগুণ দৈর্ঘ্যের হবে। এতদিন পর্যন্ত এটিই ছিল ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘতম সড়ক সেতু। ঢোলা থেকে সাদিয়া পর্যন্ত ৯.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য জুড়ে ব্রহ্মপুত্রের উপরে তৈরি এই সেতু প্রতিবেশী দুই রাজ্য আসাম আর অরুণাচল প্রদেশকে যুক্ত করেছে। তবে সেতুটি ভূপেন হাজারিকা সেতু নামেই বেশি পরিচিত।
নবনির্মিত সেতুটি ভ্রমণের দূরত্ব কমিয়ে ২০৫ কিমি থেকে ১৯ কিমি এ নামিয়ে আনবে; ভ্রমনের সময় কমে আসবে ছয় ঘন্টা থেকে মাত্র ২০ মিনিটে! ফলে সেতুটির ওপর যাতায়াতকারী বিশ লাখ মানুষের সময় ও শ্রম বাঁচবে। শহরাঞ্চলের বাজার এবং সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নতের পাশাপাশি এই সেতুর মাধ্যমে আঞ্চলিক যোগাযোগের পথ প্রশস্ত হবে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মেঘালয়ে ঢালুর মাধ্যমে এটি বাংলাদেশ ও ভুটান, এবং ভারত-ভুটান সীমান্তে আসামের হাতিসর হয়ে এটি তুরা, ফুলবাড়ি, ধুবড়ি, শ্রীরামপুর এবং সামথাইবারির মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে।
এ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের মন্ত্রী নীতিন গডকড়ি বলেন, 'ব্রহ্মপুত্র নদের উপর দিয়ে আসামের ধুবড়ি এবং মেঘালয়ের ফুলবাড়ির মধ্যে আজ প্রায় ১০ বছর যাবত একটি সেতুর চাহিদা ছিল'।
"এর মধ্য দিয়ে ধুবড়ি এবং ফুলবাড়ির মাঝে ২০৩ কিলোমিটার দূরত্ব হ্রাস করা সম্ভব হবে। তার চেয়েও বড় কথা, আসাম এবং মেঘালয়ের এখন পশ্চিমবঙ্গের সাথে সরাসরি যোগাযোগ থাকবে। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুর থেকে আসামের ধুবড়ি পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণের কাজ এই অক্টোবরে শুরু হবে যা ভুটান এবং বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় দূরত্ব এবং সময় সাশ্রয় করবে"।
১০০ কিলোমিটার নকশার গতি সম্পন্ন ধুবরি-ফুলবাড়ী সেতুটি ভূমিকম্প প্রতিরোধী এবং এতে সৌর গ্রিডের আলো ব্যবহৃত হবে। জরুরী ভিত্তিতে সাড়া দেওয়া, বন্যা নিরীক্ষণ এবং দ্রুততম সময়ে টোল আদায়ের জন্য সেতুটিতে কন্ট্রোল রুম থাকবে। এছাড়াও এটি ২৪ ঘন্টা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
- সূত্রঃ টাইমস অফ ইন্ডিয়া