শীর্ষ সামরিক অ্যাকাডেমিতে নারীদের সুযোগ দিতে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের রুল
ভারতের সর্বোচ্চ আদালত গত মাসে দেশের শীর্ষস্থানীয় সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ন্যাশনাল ডিফেন্ড অ্যাকাডেমিতে (এনডিএ) নারীদের প্রশিক্ষণের রুল জারি করেন।
সশস্ত্র বাহিনীতে জেন্ডার সমতা আনার চেষ্টা হিসেবে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সৈনিক স্কুলগুলোও উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এসব স্কুলে স্ট্যান্ডার্ড গ্রেড কারিকুলাম অনুসারে সশস্ত্র বাহিনীতে ক্যারিয়ার গড়তে ইচ্ছুক নারী শিক্ষার্থীরাও পড়ার সুযোগ পাবেন।
ভারতে বর্তমানে ৩৩টি সৈনিক স্কুল রয়েছে। ২০১৮-২৯ শিক্ষাবর্ষে নারীরা প্রথমবারের মিজোরাম সৈনিক স্কুলে ভর্তির সুযোগ পান। একই বছর আরও কয়েকটি স্কুল তাদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে পুরুষের আধিপত্যই বেশি। নতুন এই রুলিং সেনাবাহিনীতে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
মার্চে সংসদের নিম্নকক্ষে তৎকালীন প্রতিরক্ষা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েক বলেন, "মিজোরামের চিংচিপ সৈনিক স্কুলে নারী ক্যাডেটদের ভর্তির পাইলট প্রজেক্টের সফলতার পর সরকার ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে সকল সৈনিক স্কুলে নারী ও পুরুষদের একইসঙ্গে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।"
সশস্ত্র বাহিনীতে নারীর সংখ্যা নগণ্য
ভারতীয় সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌ বাহিনীতে নারীদের সংখ্যা যথাক্রমে মাত্র ০.৫৬ শতাংশ, ১.০৮ শতাংশ ও ৬.৫ শতাংশ।
তবে, গত ছয় বছরে সশস্ত্র বাহিনীতে নারীদের যোগদানের সংখ্যা বাড়ছে। ২০২১ সালে সক্রিয়ভাবে সশস্ত্র বাহিনীতে প্রায় নয় হাজার ১১৮ জন নারী কর্মরত রয়েছেন।
২০১৫ সালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র তিন হাজার। এরপর বিমান বাহিনী নারীদের যোগদানের অনুমোদন দেওয়ার পাশাপাশি নেভি পাইলটদের নিয়োগ দিতে শুরু করে।
সাবেক নারী আর্মি অফিসার সাজিতা নায়ের বলেন, "আধুনিক এই সময়ে এসে জেন্ডারের কারণে তরুণ নারীদের ক্যারিয়ার বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তে বাধাদান উচিত নয়।"
"নারী অফিসাররা এখন ফাইটার জেট উড়াচ্ছেন, কমান্ডেও আছেন তারা। রেগুলার আর্মিতে নারী জওয়ানদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে নারীদের আরও বৃহৎ পরিসরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন এখন সময়ের ব্যাপার," বলেন তিনি।
১৯৯২ সালে ভারতীয় নৌবাহিনীতে প্রথমবারের মতো নারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০২০ সাল পর্যন্ত মহিলাদের শুধুমাত্র শর্ট সার্ভিসে নিয়োগ দেওয়া হত। তবে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নারীরা স্থায়ী সার্ভিসে যোগদানের সুযোগ পান।
- সূত্র: ডয়চে ভেলে