সিনেটে ডেমোক্রেটদের আগমনের পর ডলারের সর্বোচ্চ দরপতন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট ডেমোক্রেটদের দখলে যাবার পর বিগত তিন বছরের মধ্যে ডলারের সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছে বৃহস্পতিবার।
তবে ডলারের এই পতন জো বাইডেনের সরকারের অর্থনৈতিক অবস্থা জোরদার করতে ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
ওয়াশিংটনে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের বিক্ষোভের পরও মুদ্রা বাজার স্থিতিশীল ছিল।
ডেমোক্রেট নিয়ন্ত্রিত সিনেট মূলত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এবং ঝূঁকিপূর্ণ সম্পদের হ্রাসে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে বলে ধারণা করেন বিশ্লেষকরা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট এবং বাণিজ্য ঘাটতির বৃদ্ধি করে বলে তা ডলার এবং বন্ডের জন্য হুমকিস্বরূপ।
এদিকে এশিয়ার বাজারে ডলার ইনডেক্স ০.১% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৮৯.৪৪৪ তে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তা সর্বনিম্ন মূল্য ৮৯.২০৬ টাকার কাছাকাছিই আছে।
মার্কিন পার্লামেন্টের দ্বৈত কক্ষে ডেমোক্রেটদের নিয়ন্ত্রণকে টোকিওর মিজুহো সিকিউরিটিজের প্রধান মুদ্রা বিশেষজ্ঞ মাসাফুমি ইয়ামামোতো 'মুদ্রার ভাগ্য বিভাজন' বলে মন্তব্য করেছেন।
মুদ্রার ঊর্ধ্বগামী বাজার এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো কমোডিটি মুদ্রার বিপরীতে ডলারের অবস্থান দুর্বল থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তবে যাদের ঝুঁকির আশঙ্কা আছে তাদের জন্য বিষয়টি লাভজনক হবে।
বাইডেনের অর্নৈতিক পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনায় ডলারের নিম্নগামী ভূমিকা রোধে কোষাগারের সমৃদ্ধি ডলারকে ইউরো এবং ইয়েনের চেয়ে এগিয়ে থাকতে সাহায্য করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মধ্য মার্চের উত্তপ্ত বাজার পরিস্থিতির পর কোষাগারের চালান ১০ বছরের মাপকাঠিতে প্রথমবারের মতো ১.০৪৫৬% থেকে ১.০৫৬% পর্যন্ত ওঠে।
বুধবার তিন বছরের সর্বোচ্চ মূল্য ৭৮.১৯৫ ইউএস সেন্টে পৌঁছে ঝুঁকিপূর্ণ অস্ট্রেলিয়া মুদ্রা ০.১% কমে ৭৭.৯৫০ ইউএস সেন্টে নেমে আসে।
২০১৮ সালের মার্চের পর থেকে ইউরোর মূল্য ১.২৩২৬০ ডলারে নেমে ছিল। বুধবার তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ১.২৩৪৯ ডলারে পৌঁছায়।
বুধবার ডলারের মূল্য ০.১% কমে ১০৩.১৪৫ ইয়েনে নেমে এসেছে।
২০২০ সালে ডলার ইনডেক্সের প্রায় সাত শতাংশ নামার পর নতুন বছরেই ০.৯% শতাংশের মত পতন ঘটে ডলারের। তবে বাণিজ্য বিস্তারের মাধ্যমে ডলারের মূল্যে স্থিতিশীলতা আসতে পারে।।
গত ছয় থেকে নয় মাস ধরে ডলারের মূল্য নিয়ে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারার সিলিকন ভ্যালি ব্যংকের প্রধান এফএক্স ব্যবসায়ী মিন ট্র্যাং। তিনি বলেন, অবশ্যই তোমার বিশ্রামের প্রয়োজন আছে।
চীনা কর্তৃপক্ষ ধীর গতিতে লাভের ইঙ্গিত দেওয়ার পর ইওয়ানের মূল্য স্বাভাবিক ভাবেই ডলার প্রতি ৬.৪৫৯৬ টাকায় থেমে ছিল।
স্টেট এডমিনিস্ট্রেশন অব ফরেন এক্সচেঞ্জের (সেফ) বক্তব্য অনুযায়ী গতবছরের মে থেকে চীনের অর্থনীতির পুনরুদ্ধার বৈশ্বিক অর্থনীতিকে রক্ষা করেছিল।
ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য ০.২ শতাংশ কমে ১.৩৫৮৯ ডলারে আসে। পাউন্ডের দাম কমার সাথে তা সোমবার তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১.৩৭০৩ ডলারে পৌঁছায়।
ব্রেক্সিটকে পেছনে ফেলে আমরা শর্ট-জিবিপি অবস্থানের দিকে পা ফেলছি বলে মন্তব্য করেন টিডি সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক ম্যাজেন ইসা।
অন্যদিকে ৬ জুন নেড রাম্পেলটিন লিখেন, "ইউএস ডলারের ক্রমাগত মূল্য হ্রাসের মাঝেও পাউন্ডের মূল্য ধরে রাখতে আমরা অস্ট্রেলিয়ান ডলার ও জাপানিজ ইয়েনের দিকে লক্ষ্য রাখছি।"
বৃহস্পতিবার বিটকয়েনের মূল্য সর্বকালের সর্বোচ্চ ৩৭,৪০০ ডলারে গিয়ে পৌঁছে। এরই মাধ্যমে মধ্য-মার্চের পর থেকে ৮০০% পর্যন্ত মূল্য বৃদ্ধির হারে নতুন মাত্রা যুক্ত হল। বিটকয়েনের সর্বশেষ বাজারমূল্য ৩৭,৩৩৭ ডলার।