সিনোফার্মের কোভিড-১৯ টিকার সুরক্ষার তথ্যে আস্থা কম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা- সিনোফার্ম তাদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ট্রায়ালের তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (হু) দিয়েছে। কিন্তু, তথ্য পর্যালোচনার পর এটি গ্রহণকারী কিছু রোগীর মধ্যে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার ঝুঁকি আছে উল্লেখ করে, সেব্যাপারে 'অত্যন্ত কম আস্থা' পোষণ করেছেন হু'র বিশেষজ্ঞরা। তবে তারা টিকাটির সার্বিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাতে আস্থা রেখেছেন। পর্যালোচনা মূলক ওই নথিটি দেখেই এব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সিনোফার্মের বিবিআইবিপি-করভি নামক টিকা নিয়ে নিজস্ব বিশেষজ্ঞদের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে হু' তাৎক্ষনিক কোনো জবাব দেয়নি। এছাড়া, দাপ্তরিক কাজের সময় পেরিয়ে যাওয়ায় সিনোভ্যাকেরও প্রতিক্রিয়া পায়নি রয়টার্স।
চলতি সপ্তাহেই সিনোফার্মের ভ্যাকসিন পর্যালোচনার সময় নির্ধারণ করেছে হু, এজন্য 'প্রমাণ বিশ্লেষণ'মূলক নথিটি প্রস্তুত করে সংস্থার কৌশলগত পরামর্শক বিশেষজ্ঞ গ্রুপ (সেজ)। অবশ্য, হু'র পর্যালোচনার আগেই ৪৫টি দেশ ও অঞ্চল এটি প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেওয়ার অনুমোদন দেয়। এর মধ্যেই দেওয়া হয়েছে টিকাটির সাড়ে ৬ কোটি ডোজ।
হু'র বিশেষজ্ঞ কমিটি ট্রায়াল ও টিকাদানের তথ্য-প্রমাণ আমলে নিয়ে কোনো ভ্যাকসিনের ব্যাপারে তাদের নীতিগত অবস্থান প্রকাশ করে বা এটির ডোজগ্রহণ সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়েও থাকে।
সিনোফার্মের টিকার ব্যাপারে চীন, বাহারাইন, মিশর, জর্ডান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে চালানো মানব ট্রায়ালের সংক্ষিপ্তসার তথ্যাবলী হু'র বিশ্লেষণী নথিতে উল্লেখ করা হয়।
একাধিক দেশে চালানো তৃতীয় ট্রায়ালে দুই ডোজ দেওয়ার পর ৭৮.১ শতাংশ কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে হু। যা ইতোপূর্বে চীনা সংস্থাটির দাবীকৃত ৭৯.৩৪ শতাংশ কার্যকারিতা হারের চাইতে কিছুটা কম।
নথিতে বলা হয়, "আমরা সুনিশ্চিত বিবিআইবিপি-করভি ভ্যাকসিন ১৮-৫৯ বছরের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।"
কিন্তু সেখানে আরও বলা হয়, "তৃতীয় ট্রায়াল চলাকালে নানা রকম রোগে আক্রান্তদের অংশগ্রহণ কম হওয়ায়, তাদের মধ্যে টিকার সুরক্ষার পরীক্ষা কম করা হয়েছে।
অন্যান্য প্রামাণিক ঘাটতির মধ্যে কোভিডের কারণে মারাত্মক অসুস্থতা ঠেকানো, প্রদত্ত সুরক্ষার মেয়াদ এবং গর্ভবতী নারীসহ বয়োবৃদ্ধদের এটি দেওয়া নিরাপদ কিনা- এমন কিছু বিষয়ের অনুপস্থিতি উল্লেখ করা হয়। একইসঙ্গে, টিকাদানের পর গ্রহণকারীদের মধ্যে বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শনাক্তকরণ এবং বিশ্লেষণে নিরাপত্তা মনিটরিংয়ের অভাব ছিল বলেও হু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
"ভ্যাকসিনটি নেওয়ার পর বয়োবৃদ্ধদের (৬০ বছর ও তদুর্দ্ধ) দেহে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি রয়েছে কিনা- সে সম্পর্কে ট্রায়ালের তথ্যে মান সম্পন্ন প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এজন্যই প্রতিষেধকটির সুরক্ষার ব্যাপারে আমাদের আস্থা খুবই কম।"