সীমান্তে পরিস্থিতি অস্থির, মস্কোতে দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকের আগে বললেন ভারতীয় সেনাপ্রধান
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর ও সংবেদনশীল বলে জানালেন ভারতীয় সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নারবানে। দুই দিনের সফরে লেহ'তে গিয়েছেন তিনি। সেখানেই তিনি জানালেন যে, ভারতের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে লাদাখ সেক্টরে চীন ও ভারত, দুই পক্ষই ভারী অস্ত্রশস্ত্র ও প্রায় লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করে রেখেছে।
অন্যদিকে, গত চার মাস ধরে দুই পক্ষের মধ্যে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তার নিরসন করতে সুদুর রাশিয়ায় এদিন বৈঠকে বসতে চলেছেন ভারত ও চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। গালওয়ান পরবর্তী সময় এই প্রথম রাজনৈতিক নেতৃত্ব স্তরে আলোচনা হবে পরিস্থিতি ঠান্ডা করার জন্য।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, গত তিন মাস ধরেই পরিস্থিতি সংবেদনশীল। সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা হচ্ছে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। নারবানে জানান, তিনি আত্মবিশ্বাসী কথার মাধ্যমেই সমাধানের উপায় মিলবে।
কিন্ত, আলোচনার মধ্যেই নিজেদের প্রতিরক্ষা জোরদার করতে চাইছে ভারত। দেশটির সেনাপ্রধান বলেন, এই মুহূর্তে সীমান্তে পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত। লেহ সফরে এসে জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে জানান, জওয়ানরা একেবারে পূর্ণ উদ্যমে আছে ও যেকোনো রকম চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত।
গতকাল দেশটির চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত জানিয়েছিলেন যে, চীন ও পাকিস্তান যৌথ অপারেশন করতে পারে ও সেটি প্রতিহত করতে ভারত তৈরি। পাকিস্তানকে কোনও বাড়াবাড়ি না করার পরামর্শ দেন তিনি।
অন্যদিকে, শুক্রবার মস্কো-বৈঠকের ফাঁকে সীমান্তে অচলাবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে ভারত ও চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের। চীনের জেনারেল ওয়েই ফেং- এর সঙ্গে বৈঠক করবেন ভারতের রাজনাথ সিং। দুই দেশের সীমান্ত বিরোধের পর এই প্রথম এত উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক বৈঠক হবে। ইতিমধ্যেই, মস্কো পৌঁছে গিয়েছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (পূর্ব এশিয়া) নবীন শ্রীবাস্তব। এতদিন তিনিই ভারতের প্রতিনিধি ছিলেন সমস্ত কূটনৈতিক বৈঠকে।
ভারতে রাজনাথ সিং যেমন বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা, তেমনই চীনের জেনারেল ওয়েই নিজ দেশে সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের সদস্য। এ কমিশনটি চীনা গণমুক্তি ফৌজকে নিয়ন্ত্রণ করে। মস্কো আলোচনার সাইডলাইনে জয়শংকরের সঙ্গে ওয়েই ফেং-এর বৈঠক হতে পারে। এ দুই বৈঠকে লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর যে অচলাবস্থা রয়েছে, তা কাটে কিনা, সেটাই এখন দেখার।