সীমান্ত বিবাদের ১০০ দিন পরও, চীনের প্রকৃত উদ্দেশ্যে বুঝতে পারেনি ভারত
এতকিছু হয়ে গেল। লাদাখে সীমান্ত বরাবর বড় সংখ্যায় ফৌজি সমাবেশ করে ফেলল চিন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বেজিংয়ের প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝে উঠতে পারেননি খোদ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর। তিনি নিজেই সে কথা স্বীকারও করেছেন।
নিজের আসন্ন বই 'দ্য ইন্ডিয়া ওয়ে : স্ট্র্যাটেজিজ ফর অ্যান আনসার্টেন ওয়ার্ল্ড' নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম 'হিন্দুস্তান টাইমস'-এর শিশির গুপ্ত এবং আর সুকুমারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার দেন জয়শংকর।
সেখানে চীনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ''আমরা কূটনৈতিক ও সামরিক উপায়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা করছি। এটা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি ১৯৯৩ সালে শুরু হয়েছিল এবং কয়েক বছর ছাড়া (চীনের সঙ্গে) আমাদের একাধিক বৈঠক হয়। সেগুলির বিষয় হল যে; দু'পক্ষই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ন্যূনতম বাহিনী রাখবে। কিন্তু, এখন পরিস্থিতি সেরকম নয়। বড় সংখ্যায় চীনের বাহিনী মোতায়েন করা আছে এবং সত্যিটা হচ্ছে- আমরা চীনের প্রকৃত উদ্দেশ্যে বুঝে উঠতে পারিনি। স্পষ্টতই আমরা যদি সীমান্তে শান্তি ও স্থিরাবস্থা চাই, তাহলে আমাদের এই চুক্তিগুলি মেনে চলতে হবে।''
যদিও লাদাখ সীমান্তে চীনের সঙ্গে বিবাদ দিনকয়েক আগে শুরু হয়নি, বরং গত মে'র গোড়া থেকেই চলছে। অর্থাৎ সাড়ে তিন মাস বা ১০০ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। তারমধ্যে গালওয়ান সংঘর্ষে জড়িয়েছে দু'দেশের সেনাবাহিনী, একাধিকবার বৈঠকেও বসেছে। তা সত্ত্বেও নয়াদিল্লি চীনের প্রকৃত উদ্দেশ্যে বুঝতে না পারায় বিস্মিত অনেক ভারতীয় বিশেষজ্ঞ। বিশেষত প্রশ্ন উঠছে, চীনের মতলব যদি না বুঝতে পারে নয়াদিল্লি, তাহলে দেশটির থেকে কীভাবে এক কদম এগিয়ে থাকা যাবে?
অবশ্য এবিষয়ে অবশ্য বিস্তারিত ব্যাখ্যার পথে হাঁটেননি ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু তাঁর পরবর্তী মন্তব্যে আরও একটি প্রশ্ন উঠে আসছে। জয়শংকর বলেন, 'দ্বিতীয়ত, আমি মানছি যে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে কয়েকটি ভিন্ন ধারণা আছে। কিন্তু, আবার একটা স্পষ্ট বোঝাপড়া আছে যে কোনও পক্ষই একতরফাভাবে (সীমান্তের) প্রকৃত অবস্থার পরিবর্তন করবে না।'
জয়শঙ্করের এ বক্তব্যের পর একটি মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে বেইজিং কী একতরফাভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার স্বাভাবিক অবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিল? যদিও গালওয়ান সংঘর্ষের পরই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, লাদাখে একতরফাভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার স্বাভাবিক অবস্থা পরিবর্তনের 'চেষ্টা' করেছিল চীন। পাশাপাশি ভারতীয় ভূখণ্ডে চীনা সেনা প্রবেশ করতে পারেনি বলেও দাবি করেছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
- সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস