'স্কুইড গেম' এর কপি বিক্রি করায় উত্তর কোরিয়ায় এক ছাত্রের মৃত্যুদণ্ড
জনপ্রিয় নেটফ্লিক্স সিরিজ স্কুইড গেমের কপি চোরাচালান ও বিক্রির দায়ে একজন উত্তর কোরিয়ান হাইস্কুল ছাত্রকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে দেশটির সরকার। একটি লুকানো ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভে করে চীন থেকে দক্ষিণ কোরিয়ান সিরিজটির ডিজিটাল সংস্করণ নিয়ে তিনি দেশে ফিরেছিলেন বলে জানা গেছে।
দেশে তার বেশ কিছু সহপাঠীসহ আরও কয়েকজনের কাছে সিরিজের কপি বিক্রি করার পর উত্তর কোরিয়ার নজরদারি পরিষেবার হাতে ধরা পড়েন তিনি। ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ভয়ঙ্কর পদ্ধতিতে সিরিজের চরিত্রগুলোকেও হত্যা করা হয়েছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়া ও চীনের সীমান্তবর্তী উত্তর হামগিয়ং প্রদেশে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। উত্তর কোরিয়ায় নেটফ্লিক্সের অনুমোদন না থাকায় পেশাদার চোরাচালানকারীরা প্রায়ই ইউএসবি বা ডিভিডিতে করে সিরিজটি দেশে নিয়ে আসে।
রেডিও ফ্রি এশিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, সিরিজের কপি কেনা একজন ছাত্রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সিরিজটি দেখা অন্য ছয়জনকে পাঁচ বছরের কঠোর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বাইরের কোনো দেশ থেকে, বিশেষ করে পশ্চিম ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ায় কোনো সামগ্রী নিয়ে আসার অনুমতি নেই। এক্ষেত্রে মানা হয় কঠোর নিষেধাজ্ঞা। এ ঘটনার পর অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তারা এখন বিদেশি মিডিয়া খুঁজে পেতে স্কুলগুলোতে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।
মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ছাত্রটির স্কুলের কিছু শিক্ষককে ইতোমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেককে শাস্তি হিসাবে প্রত্যন্ত খনিতে কাজ করার জন্য নির্বাসিত করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একটি সূত্র রেডিও ফ্রি এশিয়াকে জানায়, "গত সপ্তাহে একজন ছাত্র গোপনে দক্ষিণ কোরিয়ান সিরিজ স্কুইড গেম সম্বলিত একটি ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ কিনে দেশে আনে। ক্লাসে তার বন্ধুদের একজনের সাথে এটি দেখে সে।"
এরপরই ছাত্ররা সরকারের নজরদারি পরিষেবা '১০৯ সাংমু' এর হাতে ধরা পড়ে তারা।
এই সাতজন ছাত্রের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো সরকার অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্ধারিত নতুন আইন প্রয়োগ করলো। 'প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা ও সংস্কৃতির নির্মূল' বিষয়ে সম্প্রতি একটি আইন পাস করেছে উত্তর কোরিয়া।
এই আইন অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া দেখা, সেগুলো সংগ্রহে রাখা বা বিতরণের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে।