প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে মার্কিন আদালতে মনোনয়ন পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত নুসরাত জাহান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালতে বিচারক হিসেবে প্রথমবারের মতো একজন মুসলিম-আমেরিকান নারীকে মনোনীত করেছেন। বুধবার বিচার বিভাগীয় মনোনীতদের তালিকা ঘোষণার সময় এ তথ্য জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। খবর আল-জাজিরার।
মার্কিন সিনেটের অনুমোদন পেলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিক অধিকার আইনজীবী নুসরাত জাহান চৌধুরী নিউইয়র্ক রাজ্যের একটি ফেডারেল জেলা আদালতের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
বুধবার এক বিবৃতিতে নুসরাত চৌধুরীর কথা উল্লেখ করে হোয়াইট হাউস বলেছে, "তিনি প্রথম বাংলাদেশি-আমেরিকান, প্রথম মুসলিম-আমেরিকান নারী এবং দ্বিতীয় মুসলিম-আমেরিকান ব্যক্তি হিসেবে ফেডারেল আদালতের বিচারক হতে চলেছেন।"
নুসরাত চৌধুরী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ সম্পর্কিত সংগঠন 'আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন' (এসিএলইউ)-এর আইনী পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। এর আগে তিনি নিউইয়র্কে এসিএলইউ-এর জাতিগত বিচার কর্মসূচির উপপরিচালকের পদসহ বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।
তিনি ফেডারেল সরকারের 'নো ফ্লাই লিস্ট' এবং শহরের মুসলিমদের ওপর নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের নজরদারির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে মামলাসহ অসংখ্য নাগরিক অধিকারের মামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ডেমোক্র্যাটিক সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার আনুষ্ঠানিকভাবে নুসরাত চৌধুরীকে নিউইয়র্কের ফেডারেল বেঞ্চে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছিলেন; পাশাপাশি তাকে 'নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতার বিশেষজ্ঞ' বলে অভিহিত করেছিলেন।
একই বছর মুসলিম-আমেরিকান অ্যাডভোকেসি গ্রুপ 'মুসলিম অ্যাডভোকেটস' চাক শুমার এবং তার সহযোগী নিউইয়র্ক রাজ্যের সিনেটর কার্স্টেন গিলিব্র্যান্ডকে অনুরোধ করেছিল যেন নুসরাত চৌধুরীকে ফেডারেল আদালতের বিচারক হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
বুধবার নুসরাত চৌধুরীকে 'সেই ঐতিহাসিক মনোনয়ন দেওয়ায়' বাইডেন এবং শুমারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মুসলিম অ্যাডভোকেটস।
একও বিবৃতিতে তারা বলেছে, "নুসরাত চৌধুরী এমন এক সময়ে মুসলিম এবং অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নাগরিক অধিকার রক্ষার জন্য তার কর্মজীবন উৎসর্গ করেছেন, যখন বিচার ব্যবস্থায় বৈষম্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। তিনি বিচার ব্যবস্থাকে অবশ্যই ন্যায়বিচারের দিকে নিয়ে যাবেন।"
মার্কিন ফেডারেল আদালত ফেডারেল অপরাধ এবং দেওয়ানী মামলার আইনি প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করে থাকে। এছাড়া, বিচারিক পর্যালোচনার পাশাপাশি, মার্কিন সংবিধানের লঙ্ঘন করে এমন রাজ্য ও ফেডারেল আইনগুলোকে রদ করারও ক্ষমতা রয়েছে তাদের।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট সমস্ত ফেডারেল বিচারক নিয়োগ করেন। তবে তার মনোনয়নের পর সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে তাদের নিয়োগ নিশ্চিত হয়। সিনেটে নিশ্চিত হলে নুসরাত চৌধুরী দ্বিতীয় মুসলিম মার্কিন ফেডারেল বিচারক হবেন। গত বছর নিউ জার্সির জেলা আদালতের প্রথম মুসলিম বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন জাহিদ এন কুরাইশি।
- সূত্র: আল জাজিরা