ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা ফিরিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া
ক্রমেই বেড়ে চলা উত্তেজনার মাঝে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া।
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সৈন্য মোতায়েকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিনের ঘটনাবলী আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি করেছে। রাশিয়ার সম্ভাব্য আক্রমণের আশঙ্কায় অনেক দেশই তাদের নাগরিকদের ইউক্রেন থেকে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে। কারণ সীমান্তে ক্রমেই সেনা মোতায়েনের সংখ্যা বাড়াচ্ছিল রাশিয়া। গতকাল দুপুর পর্যন্তও জানা গেছে, ইউক্রেন সীমান্তে দূর পাল্লার অস্ত্র ও রকেট লাঞ্চার নিয়ে প্রস্তুত হচ্ছিল রাশিয়া। তবে গতকাল দুপুরের পর রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রুশ সেনাদের বড় একটি অংশকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে।
ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছিল রাশিয়া। এই ইস্যুকে ঘিরে ক্রমেই বেড়ে চলা উত্তেজনা দেখে কয়েকদিন আগেই বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক মহল ধারণা করেছিল, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। এমনকি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সোমবার বলেছিলেন, পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনে শুরু হতে পারে আগ্রাসন।
এই ইস্যুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে ফোনও করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে আলাপ হয় প্রায় ১ ঘণ্টা। তবে, পুতিন সেদিন নিজের জায়গা থেকে সরে আসেননি বলেই জানা গিয়েছিল। পরে আমেরিকা জানায়, রুশ আগ্রাসন ঘিরে মস্কো আর একধাপ এগোলেই পদক্ষেপ নেবে আমেরিকা ও তার অন্যান্য পশ্চিমা সহযোগী দেশগুলো।
স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী সময়েও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যু ও নীতিতে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদেশগুলোর সংঘাত বাড়তে থাকে ক্রমেই। যার প্রমাণ গত কয়েক সপ্তাহে পেয়েছে পুরো বিশ্ব। কিছুদিন আগে পর্যন্তও মনে করা হচ্ছিল কিয়েভের ওপর মস্কোর আঘাত হানার ঘটনা যেকোনো সময়ই ঘটতে পারে।
এদিকে, মঙ্গলবারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রুশ গণমাধ্যকে মস্কোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রাশিয়ার সাউদার্ন ও ওয়েস্টার্ন সেনাদল নিজেদের কাজ সম্পন্ন করে ক্যাম্পে ফিরে আসার জন্য রেলপথে রওনা দিয়েছে। সেনাদের একাংশ সড়ক পথেও ফিরছে বলে জানানো হয়েছে। তবে, জানা যায়নি কত সংখ্যক সেনাকে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে ফিরিয়ে আনছে রাশিয়া।
গত কয়েক সপ্তাহের ঘটনার ধারাবাহিকতার পর রাশিয়ার নতুন এই সিদ্ধান্ত অনেকটাই স্বস্তি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলকে। মস্কোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে জার্মানি। উল্লেখ্য, রাশিয়ার গ্যাস রপ্তানির অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র জার্মানি। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাতের মাত্রা বাড়লে তা ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার সংঘর্ষকে উস্কানি দিতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
জানা গেছে, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ এরইমধ্যে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে গিয়েছিলেন। এরপরই সেনাদল ফিরিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে রাশিয়া প্রশাসন।
- সূত্র: দ্য হিন্দুস্তান টাইমস