পূর্ব ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর নির্দেশ দিলেন পুতিন
পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর, সেখানে সেনা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার দাবি, সৈন্যরা স্ব-ঘোষিত গণপ্রজাতন্ত্র দোনেৎস্ক এবং লুহানস্কের 'শান্তি রক্ষায়' সেখানে নিয়োজিত থাকবে।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনসহ পশ্চিমাজোট বলছে, 'শান্তিরক্ষার' তকমা দিয়ে সেখানে যুদ্ধের প্রস্তুতি আরও জোরদার করছে রাশিয়া; সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
এদিকে রোববার বেলারুশ জানিয়েছে, রাশিয়া সেদেশে তাদের সামরিক মহড়ার মেয়াদ বাড়াচ্ছে। এরপরই স্যাটেলাইটে ধারণকৃত চিত্রে দেখা যায়, ইউক্রেন সীমান্তে আরও বেশি সংখ্যক সৈন্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদ জড় করেছে রাশিয়া।
এর পাশাপাশি বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়া স্বীকৃতি দেওয়ার পরপরই দোনেৎস্কের রাস্তায় সামরিক ট্যাঙ্ক দেখা গেছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদক জানিয়েছেন, তিনি অন্তত ৭টি ট্যাঙ্ক দেখেছেন রাস্তায়। তবে ট্যাঙ্কগুলোর গায়ে কোনো লোগো না থাকায় নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না সেগুলো রাশিয়ার নাকি ইউক্রেনের; অথবা বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অংশ দখল করে নেয় রাশিয়া। একই বছর দোনেৎস্ক এবং লুহানস্কের ওপর থেকেও নিয়ন্ত্রণ হারায় ইউক্রেন। এরপর থেকে সেখানে রাশিয়া সমর্থিত বিদ্রোহীগোষ্ঠী ও ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর মধ্যে লড়াই চলছে। সম্প্রতি এই সংঘাত চরমে ওঠার পর, স্থানীয় সময় সোমবার রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে ওই দুই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া 'ইচ্ছাকৃতভাবেই' ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।
এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক। বৈঠক শেষে এক সংক্ষিপ্ত প্রেস কনফারেন্সে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন কূটনীতিক লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাদের 'শান্তিরক্ষার' দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, "আমরা জানি তারা আসলে কী চায়।"
তিনি বলেন, লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ইউক্রেন আক্রমণের পথকে আরও সুগম করতে চায় রাশিয়া। কারণ এতে চলমান সংকট আরও গভীর হয়েছে। সেইসঙ্গে মঙ্গলবার রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলেও জানান তিনি।
তবে, জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া জরুরি সভার বক্তব্যে দাবি করেছেন, পূর্ব ইউক্রেনে বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোর ওপর ইউক্রেনের 'কথিত অস্থিরতা' এবং দেশটির 'উস্কানিমূলক বক্তব্যের' কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে রাশিয়া।
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, "আমরা কূটনীতির জন্য উন্মুক্ত রয়েছি; ডনবাসে আমরা কোনো রক্তপাত চাই না।"
- সূত্র: বিবিসি/আল জাজিরা