চে গুয়েভারাকে হত্যাকারী সেই বলিভিয়ান সৈনিক মারা গেছেন
মার্কসবাদী বিপ্লবী নেতা আর্নেস্তো চে গুয়েভারাকে হত্যাকারী সেই বলিভিয়ান সৈনিক মারিও তেরান ৮০ বছর বয়সে মারা গেছেন। শুক্রবার (১১ মার্চ) দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
বলিভিয়ান সৈন্যদের যে দলটির হাতে ১৯৬৭ সালে চে গুয়েভারা ধরা পড়েন, তার নেতৃত্বে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল গ্যারি প্রাডো। তার মতে, তেরান সেসময় সেনাবাহিনীর একজন সার্জেন্ট হিসেবে স্রেফ নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন।
রেডিও কমপানেরা'কে প্রাডো জানান, দীর্ঘদিন অসুখে ভুগে মৃত্যু হয়েছে তেরান এর। মৃত্যুর সময় তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন।
চে গুয়েভারার জন্ম আর্জেন্টিনায়, কিন্তু তরুণ বয়সেই তিনি কিউবাসহ বিভিন্ন দেশে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৫৯ সালে কিউবার একনায়ক ফুলহেনসিও বাতিস্তাকে উৎখাতে চে'র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
কিউবান সরকারের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে কয়েক বছর দায়িত্ব পালনের পর তিনি আফ্রিকা ও দক্ষিণ আফ্রিকায় বিপ্লবে নেতৃত্ব দিতে যান।
কিন্তু ১৯৬৭ সালে এক মাসব্যাপী অনুসন্ধানের পর একদল বলিভিয়ান সৈন্যের হাতে তার ছোট দলটি ধরা পড়ে যায়। আহত চে'কে হত্যা করতে মারিনো তেরানকে বেছে নেওয়া হয়। ঘাতকের গুলিতে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন মহান বিপ্লবী নেতা চে গুয়েভারা।
চে গুয়েভারাকে হত্যার প্রসঙ্গে পরে সাংবাদিকদের তেরান বলেছিলেন, "এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ মুহূর্ত। আমি চে কে দেখেছিলাম, বিশাল, অনেক বিশাল একজন মানুষ! তার চোখদুটি ছিল উজ্জ্বল। আমার মনে হচ্ছিলো তিনি ক্রমশ আমার দিকে এগিয়ে আসছেন... তারপর যখন তিনি আমার উপর স্থির দৃষ্টি রাখলেন, আমার মাথা ঘুরে যাচ্ছিলো!"
তেরান আরও বলেন, "তখন আমি নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করলাম। নিজেকে স্মরণ করিয়ে দিলাম যে, তোমাকে একজন মানুষকে মারতে হবে! তারপর আমি দু পা পিছিয়ে যাই, আমার চোখ বন্ধ করি এবং গুলি করি।"
তবে চে গুয়েভারার জীবনী লেখকদের দাবি, তেরানের প্রথম কয়েকটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে শেষ পর্যন্ত তা চে'র বুকে গিয়ে আঘাত হানে এবং তিনি মারা যান।"
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান