স্বামীকে তিহার জেলে দেখতে গিয়ে প্রেম, শেষে বাধা সরাতে গিয়ে প্রেমিকার মাকেই হত্যা
তাদের প্রথম সাক্ষাৎ দিল্লির তিহার জেলের বাইরে। মেয়েটি প্রায়ই তার কারাবন্দি স্বামীকে দেখতে যেতেন। আরেক যুবক আসতেন তার কারাবন্দি ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে। স্বামী ও ভাইকে দেখতে যেতে যেতে সেখানেই ওই নারী ও যুবকের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তারা।
কিন্তু তাদের বিয়ের পথে বাধা ছিলেন ওই নারীর মা। এ সম্পর্কের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন তিনি। কাজেই পথের কাঁটা ওই নারীর মাকে 'সরিয়ে দেওয়ার' পরিকল্পনা আঁটেন যুবক।
মঙ্গলবার নয়ডা পুলিশ ওই নারীর মাকে হত্যার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে—৩১ বছর বয়সি সতীশ ও এক কিশোরকে।
গত ২৫ নভেম্বর ইকোটেক-১ এলাকা থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেটার নয়ডার অ্যাডিশনাল ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ডিসিপি) অশোক কুমার সিং বলেন, 'আমরা মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাই।'
অশোক সিং বলেন, ২৯ নভেম্বর পুলিশ নিশ্চিত হয়, নিহত নারী দিল্লির মঙ্গলপুরীর বাসিন্দা। বয়স ৪০ বছর। ওই নারীর মেয়ে ২৫ নভেম্বর তার নিখোঁজ হওয়ার খবর পুলিশে রিপোর্ট করেছিলেন। পরিবার মরদেহ শনাক্ত করার পর ১২ ডিসেম্বর পুলিশের পক্ষ থেকে হত্যামামলা দায়ের করা হয়।
পুলিশ বলে, তদন্তের সময় ঘটনাস্থলের কাছে একটি ইরটিগা গাড়ি চিহ্নিত করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ ও ইলেকট্রনিক প্রমাণ সংগ্রহের পর পুলিশ সতীশ ওরফে ভিকি ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করে।
অশোক সিং বলেন, 'জিজ্ঞাসাবাদে সতীশ জানান, তার ভাই একটি হত্যামামলায় তিহারে বন্দি রয়েছে। …জেলখানার বাইরে ওই মহিলার মেয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং তার প্রেমে পড়েন।'
পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, ওই তরুণীর মা তাদের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি। কারাবন্দি স্বামী জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর মেয়েকে তার কাছে ফিরে যেতে চাপ দিচ্ছিলেন তিনি। মৃতার মেয়েও পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেতে চাননি। এ কারণে সতীশ দুই সহযোগীকে নিয়ে মেয়েটির মাকে হত্যা করার পরিকল্পনা আঁটেন।
অ্যাডিশনাল ডিসিপি অশোক কুমার বলেন, সতীশ তার অপ্রাপ্তবয়স্ক সহকারীকে তরুণীর মাকে সোনার চেইন দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে আনতে পাঠান। তারা ওই নারীকে গাড়িতে তুলে নেন। তারপর কর্নাল বাইপাসের ভালসওয়া চৌক এলাকায় পৌঁছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মহিলাকে হত্যা করেন। হত্যার পর মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান তারা। বাড়ি ফিরে সন্দেহ এড়াতে সতীশ ও তার সহযোগীরা বাকিদের সঙ্গে নিহতকে খোঁজার ভান করেন।