স্থাপনের দু’ঘন্টা না পেরোতেই সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের মূর্তিকে ডিম নিক্ষেপ
মার্গারেট থ্যাচার, ব্রিটিশ ইতিহাসের এক লৌহমানবী। ২০ শতকে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থাকার রেকর্ড তারই। ১৯৭৯ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত শক্তহাতে শাসন করেছেন দেশ। এজন্য তিনি বিশেষ জনপ্রিয় যে নন, তা বলাই বাহুল্য। উল্টো সমর্থককূলের চেয়ে হয়তো তার বিরোধীতাকারীর সংখ্যা মোটেও কম নয়।
থ্যাচারের শৈশব কাটে গ্রান্টহাম শহরে। সেখানে তার একটি মূর্তি স্থাপনের উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, তা করলে মহাময়ী থ্যাচার 'ডিম খাবেন' মানে ডিম বর্ষণের শিকার হবেন এমন হুঁশিয়ারিও দেন অনেকে। কিন্তু, তাতে কান না দিয়েই কোনো প্রকার আয়োজন-অনুষ্ঠান না করে থ্যাচারের একটি ব্রোঞ্চমূর্তি ১০ ফুট লম্বা একটি পিলারের ওপর স্থাপন করা হয়, যাতে কারো পক্ষে এটির কোনো ক্ষয়ক্ষতি করা সম্ভব না হয়।
কিন্তু, ডিমের গতি কে রোধ করে! আজ রোববার (১৫ মে) স্থাপনের দুই ঘণ্টার না পেরোতেই টাটকা ডিমের কুসুমে সিক্ত হয়েছে থ্যাচারের মূর্তি।
এসময় অস্থায়ীভাবে নির্মিত একটি বেষ্টনীর বাইরে দাঁড়ানো এক পুরুষকে ডিম ছুঁড়তে দেখা গেছে। তিনি রীতিমতো ভৎসর্ণা ধ্বনি দিয়েই ছুড়ে চলেছিলেন 'ডিম্ব-স্তবক'। তিনি ব্রিটিশদের চিরায়ত ভাষায় বলছিলেন 'ওই'- যার বাংলা করলে দাঁড়ায় 'এই নে' (এবার মজাটাও বুঝে নাও)।
ডিম নিক্ষেপের ঘটনায় অবশ্য গ্রান্টহামবাসী বিস্মিত হননি। থ্যাচারের জন্মভূমি হিসেবে তারা গর্বিত, কিন্তু একইসাথে তিনি যে একজন জাতীয়ভাবে বিতর্কিত রাষ্ট্রনায়ক এবিষয়েও কারো মনে সংশয় নেই।
রোববার থ্যাচারের মূর্তিটি স্থাপনের পর অনেককে এটির সামনে দাঁড়িয়ে 'সেলফি' তুলতে দেখা যায়। একইসময়, রাস্তা দিয়ে যাওয়া অনেক গাড়িচালককে তিরস্কার ধবনি দিতে শোনা গেছে।
তবে পৌর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়ে বিচলিত নন। সাউথ কেস্টেভান কাউন্সিলের কাউন্সিলর এবং থ্যাচারের দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেলহ্যাম কুক সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে বলেছেন, অদ্বিতীয় এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে সম্মান জানাতে মূর্তিটি স্থাপন ছিল যথাযথ।
"মার্গারেট সব সময় গ্রান্টহামের ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়েই থাকবেন। তাদের পরিবারের ছিল এ শহরের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তিনি এখানেই জন্মান, বেড়ে ওঠেন এবং বিদ্যালয়ে যান।"
তিনি আরো বলেন, "এজন্য আমরা তাকে তার নিজের শহরে স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছি। তার শাসনকাল নিয়ে নানান বিতর্ক গ্রান্টহামেও হয়। তাই বলে আমাদের কখনো নিজ ইতিহাস থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া উচিত হবে না। তার স্মরণে স্থাপিত এই মূর্তি আগামী প্রজন্মগুলির মধ্যে একটি আলোচনার বিষয়বস্তু হয়েই থাকবে।"
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান