আজাদি মার্চ: নির্বাচন ঘোষণার জন্য ৬ দিনের আলটিমেটাম ইমরানের
পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান নির্বাচন ঘোষণার জন্য পাকিস্তান সরকারকে ছয় দিনের সময়সীমা বেধে দিয়েছেন। অন্যথায় তিনি 'পুরো জাতিকে' নিয়ে ইসলামাবাদে ফিরবেন। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
আজ সকালে ইসলামাবাদের নাইনথ অ্যাভিনিউতে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে ভাষণে তিনি পিটিআই-এর মিছিল থামাতে 'বাইরে থেকে আমদানিকৃত সরকার' দ্বারা ব্যবহৃত 'কৌশল' (গ্রেপ্তার ও অভিযান) এর নিন্দা করেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে পাঞ্জাব প্রদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে ইসলামাবাদ উপচে পড়ে ইমরান খানের আজাদি মার্চের জোয়ারে। আর সেই মিছিল ঠেকাতে পাকিস্তানের রাজধানীতে সেনা নামান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
মূলত ইসলামাবাদের রেড জোনে যাতে কোনও আন্দোলনকারী ঢুকে না পড়তে পারে তার জন্যই সেনা মোতায়েন করা হয়। এই রেড জোনেই রয়েছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট, সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভবন।
দেশটির গণমাধ্যম সূত্র থেকে জানা গেছে, পাকিস্তান সময় সকাল ৯টায় পিটিআই চেয়ারম্যান এবং দলের শীর্ষ নেতারা ভাষণ দেওয়ার পরপরই কন্টেইনার ছেড়ে চলে যান। সেসময় কঠোর নিরাপত্তা সত্ত্বেও রেড জোনে প্রবেশ করতে সক্ষম হয় দলীয় কর্মীরা। এর কিছুক্ষণ পরই পিটিআই কর্মীরা ডি চকের কাছে অবস্থিত জিও ভবনে ঢিল ছুড়ে নিউজরুমের কাঁচ ভেঙে দেয়।
পাথর ছোঁড়ার কারণে বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়াও, ডি-চকের কাছে পার্ক করা ভ্যানগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, ইমরান খান ওই স্থান ত্যাগ করার পর পিটিআই কর্মীরা ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাসে যান।
প্রসঙ্গত, দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে এই মিছিল শুরু করেন ইমরান খান।
বৃহস্পতিবার ভোরে ইসলামাবাদের ডি চকে পৌঁছান ইমরান খান। তার দলের সমর্থকদের ঠেকাতে পুলিশের পক্ষ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়া হয়। পিটিআই সমর্থকরা পাল্টা ভাঙচুর করে রাস্তায়। সব মিলিয়ে গোটা পাকিস্তানি রাজধানী যেন এক বড় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
জানা গেছে, ইমরান খানের গাড়ি ইসলামাবাদে ঢোকার আগেই ইসলামাবাদের 'ব্লু এরিয়া'তে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হয়। এতে জায়গায় জায়গায় অগ্নিসংযোগ করে পিটিআই সমর্থকরা।
এদিকে পাকিস্তানের জিও নিউজের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পিটিআই সমর্থকরা তাদের অফিসে হামলা চালায় এবং এতে বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হন। হামলার সময় অফিসের বাইরে পুলিশি নিরাপত্তা ছিল না বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ইমরান খানকে ইসলামাবাদের পেশাওয়ার মোড়ের কাছে আজাদি মার্চের অনুমতি দেয়। সঙ্গে সঙ্গে সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনো পিটিআই সমর্থককে গ্রেপ্তার করা যাবে না। যদিও এরপরও পাঞ্জাবের বিভিন্ন জায়গা থেকে সহিংসতার খবর এসেছে। লাহোরের পাশাপাশি করাচিতেও সহিংসতার খবর মিলেছে।
পাকিস্তানের লাইভ টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ইমরান খানের সমর্থকদের সাথে লড়াই চলছে পুলিশের। মারধর করার পাশাপাশি অনেককেই পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
এছাড়া ভাষণে ইমরান খান দাবি করেন, মিছিলের পর সংঘর্ষে পাঁচজন পিটিআই বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
তবে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আমজাদ মালিক রয়টার্সকে বলেন, সংঘর্ষে কেউ গুরুতর আহত হয়নি।
এদিকে, দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ পরে বলেন, পুলিশ ইমরান খানের সমর্থকদের বাড়ি, অফিস এবং প্রতিবাদ সমাবেশে মোট ৪ হাজার ৪১৭টি তল্লাশি চালিয়েছে এবং প্রায় ১৭০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ২৫০ জনকে পরে খালাস দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ইসলামাবাদে ২০ লাখের বেশি লোক সমাবেশ করবেন বলে সতর্ক করেছিলেন ইমরান খান।
সানাউল্লাহ বলেন, "আমরা কাউকে সমাবেশ করার বা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার জন্য তাদের সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দিইনি। তবে আমরা কাউকে সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলার বীজ বপন করতে দিতে পারি না।"
(এটি একটি ডেভেলপিং স্টোরি এবং কিছুক্ষণ পরপর আপডেট করা হচ্ছে)