সমুদ্রেই জাহাজ থেকে জাহাজে লোডিংয়ের মাধ্যমে তেল বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া ও চীন
মাঝসমুদ্রেই রাশিয়ার ছোট ছোট ট্যাঙ্কার থেকে চীনা জাহাজে বোঝাই হচ্ছে তেল। এভাবে রাশিয়ার সুদূর পূর্ব অংশ থেকে প্রতিবেশী চীনে জ্বালানি রপ্তানি বাধা মুক্তভাবে চলছে। সমুদ্রে তেল ভরা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হলেও চীনের অন্তত একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান সে ঝুঁকি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ নিউজ।
চীন ও রাশিয়া ঘনিষ্ঠ কৌশলগত মিত্র। তারা সরাসরি জাহাজে জ্বালানি বাণিজ্য করতেই পারে এবং করছেও। তবে রয়েছে জাহাজের স্বল্পতা। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক জাহাজ মালিক রাশিয়ান ক্রুড তেল বহনের ঝুঁকি চায় না। সেজন্য আকারে তুলনামূলক ছোট নৌযান ব্যবহারে ঝুঁকেছে রাশিয়া। পূর্ব অঞ্চলের কোজমিনো বন্দর থেকে ছাড়ছে এসব তেল বোঝাই নৌযান। দক্ষিণ কোরিয়ার ইউসু থেকে নিকটবর্তী সমুদ্রে চীনা জাহাজে তেল স্থানান্তর করা হচ্ছে। এরপর তা সরাসরি চলে যাচ্ছে চীনের বিভিন্ন বন্দরে।
এদিকে শিপব্রোকার বা জাহাজের এজেন্ট সংস্থাগুলোর বরাতে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, জাহাজের মালিকদের অনীহার কারণে সরবরাহ নিয়ে সমস্যার মুখে পড়ে রাশিয়া। বিশ্ববাজারে তেলের দাম চড়া থাকায় চীনও সস্তায় রাশিয়ান ক্রুড কিনতে চায়। এজন্য তেল বাণিজ্য বাধাহীন রাখতে তারা এ উপায় বেঁছে নিয়েছে। এভাবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ফাঁকি দেওয়ার পাশাপাশি ব্যবহারের জন্য সহজলভ্য নৌযানকেও কাজে লাগাচ্ছে তারা।
রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের একটি প্রধান ধরন এস্পো ক্রুড। এটি এভাবে রপ্তানির প্রক্রিয়া খুবই বিরল। আগে ট্যাঙ্কার জাহাজে করে এটি পাঁচদিনের সমুদ্রযাত্রা করে সরাসরি চীনে পৌঁছাত।
বর্তমান প্রক্রিয়ায় জাহাজের যাত্রার সময় ও খরচ সার্বিকভাবে কিছুটা বেড়েছে। তবে শিপব্রোকাররা বলছেন, ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়পক্ষ ছোট নৌযান ব্যবহারে ঝোঁকায় এই পদ্ধতি খুব সাধারণ ঘটনায় রূপ নিয়েছে।
বিশ্ববাজারে তেলের বর্তমান যা দাম, মূল্যছাড় দিয়ে তার চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রি করছে রাশিয়া। এর সুবিধা নিয়ে লাভবান হতে আগ্রহী চীনের অনেক ক্রেতা সংস্থা। তাছাড়া, চীনের নিজস্ব তেলের চাহিদাও বিপুল। সস্তায় তেল কিনে লাভবানই হচ্ছে বেইজিং।
চীনের মতো ভারতও রাশিয়ার তেলের আরেক বড় ক্রেতা হয়ে উঠেছে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই। এনিয়ে আন্তর্জাতিক চাপকে দেশদুটি গ্রাহ্য করেনি।
চলতি মাসে রাশিয়ার এস্পো ক্রুডের সব চালান খুব সম্ভবত চীনই পেতে চলেছে। আগে এ ধরনের তেল দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে বেশি রপ্তানি করতো রাশিয়া। দূরত্ব কম হওয়া এবং অবকাঠামোগত ব্যবস্থার কারণে এটি বেশ সাশ্রয়ীও ছিল।
আফ্রাম্যাক্স বা লং রেঞ্জ-২ শ্রেণির এক লাখ টনের বেশি ওজনের বেশি ট্যাংকার জাহাজ সরাসরি বন্দরের পাইপলাইনের মাধ্যমে তাদের চালান খালাস করতো।
- সূত্র: ব্লুমবার্গ