এক সময় আমার দেহরক্ষী ছিল ৩ জন, এখন একজনেই চলে: ওরহান পামুক
তুরস্কের নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক ওরহান পামুক কখনো একটানা চার ঘণ্টার বেশি ঘুমান না। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে সালমান রুশদির ওপর হামলার ঘটনাটা মাঝরাতে জানতে পেরেছিলেন তিনি। ১৯৮৯ সালে 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' প্রকাশিত হওয়ার পর রুশদির ওপর ফতোয়া জারি হয়েছিল। তারপর থেকে বাড়তি নিরাপত্তার দরকার হয়েছিল তার।
১৯১৫ সালে আর্মেনিয়ান ও কুর্দিদের ওপর গণহত্যার বিষয়ে ২০০৫ সালে এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছিলেন ওরহান পামুক। এরপর দীর্ঘ ১৫ বছর দেহরক্ষীর প্রয়োজন হয়েছিল তারও। ২০০০-এর দশকের শুরুতে পামুক ও রুশদি নিউইয়র্কে বসবাসের সময় দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়েছিল।
সম্প্রতি দ্য গার্ডিয়ানের জন্য ওরহান পামুকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন লিসা অ্যালার্ডিস। নতুন একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে পামুকের। ২০ শতকের শুরুতে অটোমান সাম্রাজ্যের ক্রান্তিলগ্নে একটি কাল্পনিক দ্বীপের পটভূমিকে কেন্দ্র করে 'নাইটস অব প্লেগ' শীর্ষক উপন্যাসটির আবর্তন। সাক্ষাৎকারে উপন্যাস নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন পামুক।
দেহরক্ষী থাকার কারণে ক্যাফে, রেস্তোরাঁয় বসতে পারতেন না তিনি। প্রিয় শহর ইস্তাম্বুলেও একা হাঁটার সুযোগটাও ক্রমে সংকুচিত হয়ে এসেছিল। পামুক আশঙ্কা করেছিলেন, নিরাপত্তার এ চক্র দৈনন্দিন জীবন থেকে তার দূরত্ব বাড়িয়ে দেবে। অথচ এ যাপিতজীবনের সূত্রেই তিনি লেখার উৎসাহ পান। কিন্তু বেশ কয়েক বছর পার হওয়ার পর এখন দেহরক্ষী সমভিব্যাহারে চলাচলে মোটামুটি অভ্যস্ত হয়ে গেছেন তিনি। 'আমার একসময় তিনজন দেহরক্ষী ছিল, এখন আছে একজন। মানে তুরস্কের উন্নয়ন ঘটেছে,' কৌতুক করেন পামুক।
তবে রুশদির মতো পামুকের সবচেয়ে বড় হুমকিটি মৌলবাদীদের কাছ থেকে নয়, বরং তুর্কি জাতীয়তাবাদীদের কাছ থেকে এসেছে (তবে পামুকের মতে এ দুই দলের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই। কারণ, তুরস্ক এখন একটি ইসলামিক-জাতীয়তাবাদী জোটের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে)। ২০২১ সালের মার্চে 'নাইটস অব প্লেগ' প্রকাশিত হওয়ার পর তুরস্কেই ইতিমধ্যে তিনি দুবার তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আধুনিক তুরস্কের জনক মোস্তফা কামাল আতাতুর্ককে অপমান ও তুরস্কের পতাকা নিয়ে হাস্যরস করার মাধ্যমে 'ঘৃণা ও বিদ্বেষ' সৃষ্টি করেছেন।
পাবলিক প্রসিকিউটরকে পামুক জিজ্ঞেস করেছিলেন, 'কোন পৃষ্ঠায়?' 'অবশ্যই তারা কোনো উত্তর দিতে পারেনি,' জুম সাক্ষাৎকারে কণ্ঠে বিস্ময় নিয়ে বলেছিলেন পামুক। ওই তদন্ত শেষ পর্যন্ত কোনো কূলকিনারায় পৌঁছাতে পারেনি বলে জানান পামুক। 'তারা আমাকে অভিযোগ থেকে না দিয়েছে মুক্তি, না নিয়েছে কোনো পদক্ষেপ। সুতরাং, আমরা এখন একটা মাঝামাঝি অনিশ্চিত অবস্থায় ঝুলে আছি।'
জীবনের বেশির ভাগ সময় ইস্তাম্বুলে কাটিয়েছেন ৭০ বছর বয়সী পামুক। নিজের সাহিত্যকর্মগুলোতে বারবার ঘুরেফিরে এসেছে ইস্তাম্বুল। 'আমি যদি ইস্তাম্বুলের পটভূমি ছাড়াও কোনো একটা উপন্যাসও লিখি, সেটার কোনো না কোনো চরিত্র দেশটিতে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখবে,' আরেকবার কৌতুক করেন 'মাই নেম ইজ রেড' গ্রন্থের লেখক।
'নাইটস অব প্লেগ'-এর কাল্পনিক দ্বীপটির নাম মিঙ্গেরিয়া। তবে এটির জন্য পামুক নির্ভর করেছেন বাস্তবে গ্রিসের ছোট্ট দ্বীপ কাস্টেলোরিজো দ্বীপের ওপর। ওই দ্বীপটাতে প্রায়ই ঘুরতে যান পামুক। 'লেখা, লেখা, লেখা, সাঁতার, সাঁতার, সাঁতার, আর দ্বীপটাকে ভালোমতো দেখা,' কাস্টেলোরিজোতে যাওয়ার উদ্দেশ্য এভাবে বর্ণনা করেন পামুক। অতীতকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করার অভিযোগ থেকে মুক্ত থাকতে নিজের উপন্যাসে কাল্পনিক দ্বীপের আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।
'নাইটস অব প্লেগ' কিছুটা রোমান্টিক, খানিকটা মার্ডার-মিস্ট্রি, আর একটু ঐতিহাসিক। ৭০০ পৃষ্ঠার এ বইটির গল্প বুবনিক প্লেগ (ব্ল্যাক ডেথ) নিয়ে। বলা বাহুল্য, উপন্যাসটির সময়বোধটুকুও অতি চমৎকার।
গত ৪০ বছরে প্লেগ নিয়ে অনেক লিখেছেন পামুক। সেই ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত উপন্যাস 'দ্য হোয়াইট কাসল' বইটিতেও প্লেগের উল্লেখ আছে। কিন্তু ২০১৬ সালে তিনি অনুধাবন করেন, কোনো একটি মহামারি আর নিপীড়নের সম্মিলন রিসেপ এরদোয়ানের 'ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্বমূলক' সরকারের জন্য দারুণ একটি রূপক হতে পারে।
'ভাবলাম, এখন তাহলে আমার প্লেগবিষয়ক উপন্যাসটা লেখা যাক,' বলেন পামুক। তারপর সাড়ে তিন বছর
উপন্যাসটি লেখা ও প্রয়োজনীয় গবেষণার কাজ করেছেন তিনি। এর মধ্যে দেখা দিল বৈশ্বিক করোনা মহামারি। 'পা-ুলিপিটা নিয়ে ধীরেসুস্থে কাজ করছিলাম। মহামারি শুরু হওয়ার পর মনে হলো, আমার ছোট পা-ুলিপিটা চারদিকে ছড়িয়ে গেল। মনে হলো, প্লেগটা বুঝি আমার পাণ্ডুলিপি থেকে একলাফে বেরিয়ে সারা বিশ্বকে জাঁকিয়ে ধরেছে,' বলেন পামুক।
২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হয়। পামুক এটিকে বলছেন 'মানবতার আতঙ্ক'। মার্চে তখন দিনে ১২ ঘণ্টাও লিখতেন তিনি। তখনো ইস্তাম্বুলে লকডাউন শুরু হয়নি। 'আমি ৫০ বছর ধরে লিখছি, সেটা আমার কাছে ৫০ বছরের লকডাউন,' বলেন পামুক। প্রথম যখন 'নাইটস অব প্লেগ' লেখা শুরু করেছিলেন, তখন তার বন্ধুরা বলেছিল, 'এ মধ্যযুগীয় বই কেউ পড়বে না, এখন আর প্লেগ নিয়ে কার আগ্রহ আছে?' কিন্তু প্যানডেমিকের পর অবশ্য তারা এখন নিজেদের সুর বদলেছেন।
করোনায় নিজের চাচিকে হারিয়েছেন পামুক। নিজেও মহামারি নিয়ে ভীষণ জড়োসড়ো ছিলেন। 'আমি উপন্যাস লিখছি আর এদিকে মানুষ মাছির মতো মরছে। কী পরিহাসের বিষয়। আচ্ছা, আমি কি মানুষ হিসেবে নিষ্ঠুর?' নিজের দীর্ঘদিনের সঙ্গী ও সদ্য পরিণীতা স্ত্রীর কাছে প্রায়ই প্রশ্ন করতেন তিনি।
ওরহান পামুক আশা করেছিলেন তার উপন্যাস লেখা শেষ হওয়ার কাছাকাছি সময়ে মহামারিও চলে যাবে। তবে তা হয়নি। ২০২১ সালের মার্চে তুরস্কে যখন উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিল, তখন ইস্তাম্বুলও লকডাউনে গিয়েছিল। তিনি একজন দেহরক্ষী নিয়ে শহরে হাঁটতে বেরোতেন। তখন ৬৫ বছরের বেশি বয়স্করা লকডাউনেও ঘর থেকে বাইরে বেরোতে পারত।
হাঁটার সময় এক বইয়ের দোকানের কাচের দরজা দিয়ে নিজের সদ্য প্রকাশিত বই দেখেছিলেন তিনি। তখন অবশ্য কারও কেনার সুযোগ ছিল না, লকডাউনের কারণে দোকানও বন্ধ ছিল। 'আমার কপালে ওটাই ছিল', হেসে বলেন পামুক।
পামুকের 'নাইটস অব প্লেগ' দৈববাণীর মতো আবির্ভূত হয়েছে। তবে এটাই প্রথমবার নয়। এর আগে 'স্নো' উপন্যাসটা যখন শেষ করছিলেন, তখন ৯/১১ ঘটল। 'স্নো'-এর বিষয়বস্তু ছিল আধুনিক তুরস্কে অসাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদীদের মধ্যকার সংঘাত। ওই বইতে কয়েক জায়গায় ওসামা বিন লাদেনকেও এনেছিলেন পামুক। কিন্তু প্রকাশনার আগে সেগুলো বাদ দেন তিনি। 'নাইটস অব প্লেগ'-এর ক্ষেত্রে বিশেষ কাটাছেঁড়া করেননি তিনি, তবে কোয়ারেন্টিনের বর্ণনা কিছুটা কমিয়ে এনেছিলেন।
এ উপন্যাসটা হচ্ছে 'স্বাধীনতা, ও কীভাবে সাম্রাজ্য ভেঙে জাতি গড়ে ওঠে তার গল্প,' পামুক জানান। 'স্নো'-এর পাশাপাশি সন্দেহাতীতভাবে এ বইটি পামুকের আরেকটি রাজনৈতিক বই। 'আমার ঔপন্যাসিক কারখানা, আমার মন, একই ধরনের পোশাক তৈরি করছে। তবে এবারের পোশাকটা একটু বেশি লম্বা,' পামুকের ভাষ্য। 'রাজনীতি এড়িয়ে তুরস্কে লেখালেখি করে খ্যাতি পাওয়া অসম্ভব ব্যাপার,' তিনি মনে করেন।
কামাল আতাতুর্ককে নিয়ে ব্যঙ্গ করার যে অভিযোগ, তা অনেকটা ধোপে টেকে না। বইয়ের চরিত্র মেজর কামিলকে সমালোচকেরা কামাল আতাতুর্ক হিসেবে ধরে নিয়েছেন। অথচ মেজরের চরিত্রটি বেশ সহানুভূতিশীল ও পাঠকদের ভালোবাসায় সিক্ত।
সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কে অটোমান সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক মহিমান্বিতকরণকে চ্যালেঞ্জ করছেন পামুক। 'আমি নিজেও অটোমান সাম্রাজ্যকে পছন্দ করি; তবে এর নিষ্ঠুরতা, অন্য দেশগুলোর ওপর আক্রমণ চালানোর মতো কাজকারবারগুলো নয়,' বলেন তিনি। 'নাইটস অব প্লেগ'-এ তিনি এ সাম্রাজ্যের শেষ দিনগুলোকে একটি 'স্মৃতিমেদুর ও বিষাদময়' আঙ্গিকে দেখতে চেয়েছিলেন। তবে এই সাম্রাজ্যের সহিংসতা আর সাংস্কৃতিক ক্ষরণগুলোকেও এড়িয়ে যাননি লেখক।
বসফরাস প্রণালির মতোই ঐতিহ্য আর আধুনিকতার সংঘাত একসঙ্গে এগিয়ে যায় পামুকের লেখায়। 'আমি পূর্ব-পশ্চিম দুই নিয়েই সমানে লিখি,' পামুক বলেন। 'কেউ বলেন তুরস্কের মূল পরিচয় নিহিত ঐতিহ্যে, আবার কারও মতে তুরস্কের আগাগোড়া আধুনিকতাকেই চয়ন করা উচিত। আমি যা বলি তা হলো কিছুটা আধুনিকতা আর কিছুটা ঐতিহ্যের সমন্বয়। কিন্তু মূল বিতর্কটা হলো: ঐতিহ্যের কোন অংশসমূহ আমরা আমাদের পাতে তুলে নেব?'
নিজেকে 'মডার্নাইজার' হিসেবে অভিহিত করেন পামুক। তুর্কি জাতীয়তাবাদী ও সংরক্ষণবাদীরা তাকে 'অতি পশ্চিমাপ্রেমের' জন্য সমালোচনা করেন। কিন্তু তারা প্রায়ই অনুধাবন করেন না যে পামুক অটোমান সাম্রাজ্যকে নিজের লেখায় কতটা স্মৃতিকাতরভাবে উপস্থাপন করেন। 'আমি আধুনিক তুরস্কের সন্তান। এ তুরস্ক অটোমান ভাষা, সংগীত, শিল্পের সমৃদ্ধ অংশগুলোও ছেঁটে ফেলে দিয়েছে,' পামুক বলেন। তার আগের প্রজন্মের বামপন্থী তুর্কি সাহিত্যিকেরা তুরস্কের ঐতিহ্যকে ভুলে থাকাটাই বেছে নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন পামুক।
শক্তিশালী নারী চরিত্র সৃষ্টি না করার জন্য অতীতে ওরহান পামুকের সমালোচনা করেছিলেন সমসাময়িক তুর্কি ঔপন্যাসিক এলিফ শাফাক ও অ্যাটউড। এ সমালোচনা মাথা পেতে নেন পামুক। নিদেনপক্ষে তার প্রথমদিককার লেখাগুলোর জন্য এ অভিযোগ তীব্রভাবে সত্য। 'আমি মানছি এটা একটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজ, কিন্তু সে সময় তুরস্কেও পুরুষ আধিপত্য বেশি ছিল,' পামুক বলেন। 'তারপর নিজেকে আমি সত্যিই পরিবর্তন করলাম।' 'নাইটস অব প্লেগ'-এ শক্তিশালী নারী চরিত্রের সংখ্যা কম নয়। আর গল্পটি তিনি বর্ণনা করেছেন অটোমান সম্রাট আবদুল হামিদের নাতনির মেয়ের মুখ দিয়ে।
পামুক বেশ সচ্ছল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন। তুরস্কের বেস্টসেলিং লেখকের তকমা অর্জনের সুবাদে আর্থিক সংগতিও হয়েছে তার। তবে এরদোয়ানের 'স্বাধীনতার অর্থনৈতিক যুদ্ধের' কারণে তুরস্কে কালি ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্রের দাম এত বেড়েছে যে পামুক পুরোনো ঝরনা কলমেই ফিরে গেছেন। লেখালেখিটা সব সময়ে কাগজে-কলমেই করেন তিনি। কম্পিউটারে কেবল ই-মেইল দেখা আর খবর পড়ার কাজটা করা হয়। ঘুম আসে বলে দিনের মাঝখানে কিছু খানও না।
পরবর্তী উপন্যাসটি নিয়েও কাজ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। ১৯৪২ সালের পারস্যসংশ্লিষ্ট কোনো প্রসঙ্গকে কেন্দ্র করে তৈরি হবে উপন্যাসটি। স্থান ও সময়ের মাঝে কল্পনার জগতে ঘুরে বেড়ানোতেই পামুকের আনন্দ। 'ভিন্ন ব্যক্তি, ভিন্ন সময়, একটি ঐতিহাসিক চরিত্র, একটি প্রাক্-আধুনিক মনন: এগুলোই উপন্যাস লেখার আনন্দ আর সীমাবদ্ধতা,' বলেন পামুক। একজন লেখক হিসেবে পামুক নিজেকে একটি 'অবিচল, আশাবাদী পিঁপড়া'র মতো বর্ণনা করেন, 'যে কিনা নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে এবং যে জানে শেষ পর্যন্ত সে তার দূরত্বটুকু অতিক্রম করবে।'
রুশদির ওপর হামলা ও সার্বিক উগ্রবাদকে 'স্বল্প উপস্থাপিত মানুষ, যাদের সমাজ এড়িয়ে যায়, যাদের মুখ আমরা দেখি না। তাদের ক্ষোভ' হিসেবে দেখেন ওরহান পামুক। ঔপন্যাসিকের কাজ হলো এ লোকগুলোকে তাদের সৃষ্টিতে তুলে ধরা, এদের কথা পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। 'একজন লেখককে বাক্স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের ধারণার পক্ষ নিতে হবে। এরপর যারা ওই ধারণাগুলোকে ধ্বংস করে, তাদেরও চিহ্নিত করতে হবে লেখককেই। আর এই চিহ্নিতকরণের কাজটা বেশির ভাগ সময় বৈধকরণের মতো দেখা যায়। এটাই সাহিত্যিকদের আপাত-বৈপরীত্য,' পামুক মনে করেন।
তবে এ বিশ্বকে নিয়ে বেশি নিরাশ হতে নারাজ ওরহান পামুক। 'মাখোঁ জিতেছে। ট্রাম্প হেরেছে,' স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। 'এ থেকেও তো একটা গল্প তৈরি করা যায়,' ডানপন্থী পপুলিজম ও কদর্যতা 'জীবাণুর' মতো ছড়িয়ে পড়ছে এ দৃষ্টিভঙ্গির বিপক্ষে পামুক। 'আমি অতটা নৈরাশ্যবাদী নই। আমি দেখছি এরদোয়ানের জনপ্রিয়তা নাটকীয়ভাবে কমে যাচ্ছে। তাহলে কেন আমি নৈরাশ্যবাদী হব?'
অনুবাদ: সুজন সেন গুপ্ত