ইমরান খান-সাকিবদের রেকর্ড ডাকছে মিরাজকে
একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট; টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৪ বছরের ইতিহাসে এই কীর্তি মাত্র তিনজন অলরাউন্ডারের। তিনজনই কিংবদন্তি; ইয়ান বোথাম, ইমরান খান ও সাকিব আল হাসান। চার নম্বর নামটি হতে পারে মেহেদী হাসান মিরাজ। কিংবদন্তিদের এই তালিকায় নিজের নামটি তুলতে তরুণ এই অলরাউন্ডারের দরকার আর ৩ উইকেট।
যুব পর্যায়ে মিরাজ ছিলেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার। বাংলাদেশ দলে অভিষেকের পর পুরোদস্তর স্পিনার হয়ে ওঠেন তিনি। অভিষেক টেস্ট সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯ উইকেট নিয়ে স্পিন বিভাগের অপরিহার্য অংশ যান বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। এরপর যতোটা সময় গড়িয়েছে, মিরাজ যেন তার ব্যাটিং সত্ত্বা থেকে দূরে সরে গেছেন।
চার বছর পর এসে ব্যাটিং অলরাউন্ডার মিরাজের দেখা মিলেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টর প্রথম ইনিংসে আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১০৩ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। পরে বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে নেন ৪ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট নেওয়ার পর বোথাম, ইমরান, সাকিবদের পাশে নাম বসানোর সম্ভাবনা জেগে উঠেছে তার।
ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি ১৯৮০ সালে প্রথমবারের মতো দেখে ক্রিকেট বিশ্ব। ভারত সফরে মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত একমাত্র সেই টেস্টে ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার ইয়ান বোথাম সুপারম্যান হয়ে ওঠেন। সেঞ্চুরি ও ১৩ উইকেট নিয়ে ভারতকে একাই কোণঠাসা করে রাখেন তিনি।
প্রথমে বল হাতে ভারতের ইনিংসে ধস নামান বোথাম, তুলে নেন ৬ উইকেট। এরপর দলের বিপর্যয়ে খেলেন ১১৪ রানের ইনিংস। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট নিয়ে দলের ১০ উইকেটের সহজ জয় তুলে নেওয়ার পথ তৈরি করে রাখেন বোথামই।
এই রেকর্ডে তিন বছর একা ছিলেন বোথাম। ১৯৮৩ সালে তার এই রেকর্ডে ভাগ বসান পাকিস্তানের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার ইমরান খান। তার রেকর্ডটিও ভারতের বিপক্ষে। ফয়সালাবাদে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে সেঞ্চুরি (১১৭) ও ১১ উইকেট নিয়ে দলের ১০ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
এর ২১ বছর পর এসে ২০১৪ সালে বোথাম-ইমরানদের পাশে নাম বসান সাকিব। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নেন তিনি। অগ্রজের সেই পথেই আছেন মিরাজ। চট্টগ্রাম টেস্টের পঞ্চম দিনে ডানহাতি এই স্পিনার আর ৩টি উইকেট নিয়ে নিতে পারলে বাংলাদেশ হবে একমাত্র টেস্ট খেলুড়ে দেশ, যাদের দুজন অলরাউন্ডারের সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি থাকবে।
আরও একটি রেকর্ড ডাকছে মিরাজকে। এ জন্য অবশ্য তাকে নিতে হবে আরও ৪ উইকেট। ক্যারিবীয়দের চারজন ব্যাটসম্যানকে ফেরাতে পারলেই বাংলাদেশের দ্রুততম বোলার হিসেবে ১০০ টেস্ট উইকেটের মালিক হবেন তিনি। ২৫ টেস্টে ১০০ উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত দ্রুততম তাইজুল ইসলাম। এরপর আছেন সাকিব ও মোহাম্মদ রফিক। সাকিব ২৮তম ম্যাচে এবং রফিক ৩৩তম ম্যাচে ১০০ টেস্ট উইকেট পূর্ণ করেন।
কেবল বাংলাদেশের সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়াই নয়, দ্রুততম ১০০ উইকেট নেওয়ার তালিকায় মিরাজের নাম বসবে গ্লেন ম্যাকগ্রা ও শেন ওয়ার্নের নামের পাশে। অস্ট্রেলিয়ান এই কিংবদন্তিও ২৩তম টেস্টে ১০০ উইকেট পূর্ণ করেন। এই তালিকায় আছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি স্পিনার সাকলাইন মুশতাক, স্টিভেন হার্মিসন, গ্রায়েম সোয়ানরাও।