কার হাতে উঠবে মাশরাফির ব্রেসলেট?
দুই-এক বছর নয়, দীর্ঘ ১৮ বছরের সঙ্গী। ডান হাতে সব সময়ই ব্রেসলেটটা পরে থাকেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। করোনাভাইরাস দুর্গতের সাহায্যে প্রিয় এই ব্রেসলেটটি নিলামে তুলছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই অধিনায়ক।
'অকশন ফর অ্যাকশনের' ফেসবুক পেজ থেকে নিলামটি অনুষ্ঠিত হবে। নিলাম শেষ হবে রোববার রাত সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া লাইভে। ব্রেসলেটটির ভিত্তিমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ টাকা। নিলাম থেকে পাওয়া পুরো অর্থ করোনাভাইরাস দুর্গতদের সাহায্যে খরচ করা হবে।
ক্যারিয়ারের শুরুতে এই ব্রেসলেটটি ছিল না মাশরাফির। তখন বাংলাদেশ লেখা রিস্ট ব্যান্ড পরতেন তিনি। এরপর ইস্পাতের (স্টিল) তৈরি এই ব্রেসলেটটি পরা শুরু করেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক। ব্রেসলেটটিতে খোদাই করে মাশরাফির নাম লেখা রয়েছে।
এ নিয়ে মাশরাফি তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লিখেছেন, 'বিশ্বের এই সঙ্কটময় সময়ে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নিলামে তুলতে যাচ্ছি আমার ১৮ বছরের পুরনো সাথী, আমার অতি প্রিয় ব্রেসলেট। যার অর্থ চলে যাবে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনে গরীব দুঃস্থ মানুষের সাহায্যের জন্য।'
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় শুরু থেকেই কাজ করে আসছেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি ও তার 'নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন'। সরকারি অনুদান ছাড়াও নিজ অর্থায়নে বিভিন্নভাবে সাহায্য করে আসছেন তিনি। করোনার প্রভাব বিস্তারে কয়েকদিনের মধ্যেই কর্মহীন হয়ে পড়েন নড়াইলের রিকশা-ভ্যানচালক, রাস্তার পাশের চা বিক্রেতা, হকাররা। এমন তিনশ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেন মাশরাফি।
এরপর কর্মহীন মানুষদের সাহায্যে বিসিবি থেকে পাওয়া এক মাসের বেতনের অর্ধেকটা দান করেন মাশরাফি। কদিন পর নিজ অর্থায়নে নড়াইলে ১ হাজার ২০০ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেন তিনি।
ডাক্তার ও সংবাদকর্মীদের সুরক্ষায় নিজ অর্থায়নে নড়াইলের ডাক্তার ও সংবাদকর্মীদের জন্য ৫০০ পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকশন ইক্যুয়েপমেন্ট) দেন মাশরাফি। এ ছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে তার নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম।
নড়াইল সদর হাসপাতালের গেটে জীবাণুনাশক কক্ষ স্থাপন করেছে মাশরাফির নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন। সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগী, চিকিৎসক, নার্স, সাংবাদিক, অ্যাম্বুলেন্স চালকসহ অন্যান্যদের সুরক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে এই জীবাণুনাশক কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।
নড়াইল কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বন্দীদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন মাশরাফি। তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে সাবান, মাস্ক, গ্লাভস এবং স্যানিটাইজার বিতরণ করেছেন তিনি। এরপর তামিম, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে মিলে টিম বয়দের এক লাখ টাকা করে দেন মাশরাফি। সর্বশেষ নিজের বহুদিনের সঙ্গী প্রিয় ব্রেসলেটটি মাতবতার সেবায় উৎসর্গ করলেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।