কাল থেকে অনুশীলন, ভাবতেই চনমনে তামিম-মিঠুনরা
পুরোপুরি মুক্তি না মিললেও বন্দি দশা শেষ। নিউজিল্যান্ডে সাতদিনের কড়া আইসোলেশন শেষ হয়েছে বাংলাদেশ দলের। তৃতীয় করোনা পরীক্ষায় সবাই নেগেটিভ হওয়ায় বুধবার থেকে জিম শুরু করেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। সাতটি গ্রুপে ভাগ হয়ে বৃহস্পতিবার থেকে ক্রাইস্টচার্চের লিনকন গ্রিনে অনুশীলন শুরু হবে। কাল থেকে অনুশীলন, এটা ভাবতেই চনমনে হয়ে উঠছেন ক্রিকেটাররা।
১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের ৭ দিন শেষ, বাকি আরও ৭দিন। এই সাতদিন নিয়ে অবশ্য ভাবছেন না বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। জিম করা যাবে, বাইরের খোলা বাতাসে অনুশীলন চলবে; এটা ভাবতে আগে থেকেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন তামিম, মুশফিক, মুস্তাফিজরা। মোহাম্মদ মিঠুন বলছেন, মাঠে যাওয়ার কথা ভাবতেই আলাদা ভালো লাগা কাজ করছে।
মেহেদী হাসান মিরাজ বলেছিলেন, আইসোলেশন তার কাছে মনে হয়েছে জেলখানা। কয়েকদিন পর বাইরে বেরিয়ে ওয়ানডে অধিনায়ক তামিমের মধ্যে আজব অনুভূতি কাজ করেছিল। অভিজ্ঞ ওপেনারের মনে হয়েছিল, কয়েক বছর পরপর সতীর্থদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
ক্রিকেটারের বর্ণনাতেই স্পষ্ট ৭ দিনের আইসোলেশন কতোটা কঠিন ছিল। অবশেষে পার হয়েছে কঠিন সময়। বুধবার জিম করে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলা বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা মাঠে ফেরার অপেক্ষায়। এক ভিডিও বার্তায় মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মিঠুন বলেছেন, 'এতোদিন আমাদের চলাফেরায় বাধা ছিল। আস্তে আস্তে বিষয়গুলো স্বাভাবিক হচ্ছে। আজ আমরা জিম করার সুযোগ পেয়েছি। প্রায় এক সপ্তাহ পরে জিম ব্যবহার করে ভালো লাগছে।'
মাঠের মানুষরা মাঠে ফিরতে পারলেই যেন বাঁচেন, মিঠুনের ভাষায়, 'মাঠে ফেরার ব্যাপারে অনেক বেশি রোমাঞ্চিত। কারণ ঘরের মধ্যে থাকা খুব কষ্টকর। ঘরে বেশি কিছু করার থাকে না। আমরা একটা সিরিজ খেলতে এসেছি, কাল থেকে আমরা মাঠে যেতে পারব। এই ব্যাপারটা ভাবতেই আলাদা ভালো লাগা কাজ করছে। কাল থেকে যখন ক্রিকেট অনুশীলনে ফিরব, আস্তে আস্তে আমরা সবকিছু মানিয়ে নিতে পারব।'
মাঠে ফেরার আগে নিউজিল্যান্ডের বাউন্সি উইকেটে নতুন বলের চ্যালেঞ্জের বিষয়টিও মাথায় আসছে মিঠুনদের। এমন কন্ডিশনে খুব বেশি খেলার সুযোগ হয় না বলে চ্যালেঞ্জটা যে কঠিন হবে, তা ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন মিঠুন, 'এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। এখানে ভিন্ন কন্ডিশন আমাদের থেকে। এই কন্ডিশনে আমাদের খুব বেশি খেলার সুযোগ হয় না। আমরা সবাই জানি নিউজিল্যান্ডে নতুন বলটা খুব চ্যালেঞ্জিং হয়।'
বাংলাদেশের লক্ষ্য নতুন বলে উইকেট না দিয়ে আসা। নতুন বলের চ্যালেঞ্জ পেরোতে পারলে আগের থেকে ভালো ফল করা সম্ভব বলে মনে করেন মিঠুন। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান বলেন, 'আমরা দল হিসেবে নতুন বলে যদি টিকে যেতে পারি, অবশ্যই আশা করছি আগের চেয়ে অনেক ইতিবাচক ফলাফল হবে। এটাকে আমরা অবশ্যই সুযোগ হিসেবে নিচ্ছি। কারণ আগে কী হয়েছে, এর চেয়ে সামনে কী করব, সেটাই বড়। এবার অনেক আগে এসেছি। অনেক অনুশীলনের সুবিধা পাব। দলের সবাই যতো দ্রুত সম্ভব নিজেদের দক্ষতা মানিয়ে নিতে পারে, ততোই ভালো।'
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে দুটি টেস্ট ও দুটি ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা আছে মিঠুনের। বিরুদ্ধ কন্ডিশনের মুখোমুখি হলেও অতীত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে উতড়ে যেতে পারবেন বলে বিশ্বাস তার। মিঠুন বলছেন, 'আগে আবাহাওয়ার জন্য যে লড়াইটা করতে হতো, আশা করি এবার এমন আবহাওয়া থাকলে তেমন হবে না।'
৭ দিনের আইসোলেশন শেষে মাঠে ফেরার সুযোগ হচ্ছে। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরার সুযোগ মিলবে। এই অপেক্ষাও আছে মিঠুনদের, '১৪ দিন পরে আমাদের যে স্বাভাবিক চলাফেরা শুরু হবে, অবশ্যই এটা ইতিবাচক দিক। সবাই জিনিসটা উপভোগ করবে। আমরা ১৪ দিন পর মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারব। সেটা ভেবে ভালো লাগছে। অন্তত ১৪ দিন কষ্ট হলেও পরে আমরা মুক্তভাবে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারব।'
কোয়ারেন্টিন শেষে কয়েকদিন অনুশীলনের পর কিউইদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। ২০ মার্চ ডানেডিনে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে শুরু হবে সিরিজ। ২৩ মার্চ ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ওয়ানডে। এই ম্যাচটি হবে দিবা-রাত্রির। ২৬ মার্চ ওয়েলিংটনে শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দুই দল। ম্যাচ তিনটি ২৮, ৩০ মার্চ ও ১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে।