স্মরণীয় জয়ে বাংলাদেশের যতো রেকর্ড
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। প্রিয় ফরম্যাটে ঘরের মাঠে কিউইদের একবার হোয়াইটওয়াশও করেছে তারা। কিন্তু দেশটিতে সফরে গিয়ে সংগ্রাম করতে হয় বাংলাদেশকে, হারই হয়ে ওঠে অমোঘ নিয়তি। ২০২২ সালে কাটে গেরো, মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টেস্ট জেতে বাংলাদেশ। এবার স্বাগতিকদের বিপক্ষে ওয়ানডেতেও জয়ের স্বাদ নিলো সফরকারীরা।
শনিবার নেপিয়ারে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের প্রথম জয়। পেসারদের আগুনে বোলিংয়ে পাওয়া স্মরণীয় জয়ে বেশ কয়েকটি রেকর্ড হয়েছে বাংলাদেশের, এক নজরে সেসব দেখে নেওয়া যাক।
স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে জয়: নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে ভুগতে হয় সব প্রতিপক্ষকেই। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দলও আছে এই তালিকায়। বাংলাদেশকেও কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় বিরুদ্ধ এই কন্ডিশনে। নেপিয়ার জয়ের আগে স্বাগতিকদের বিপক্ষে টানা ১৮টি ম্যাচ হারে তারা। অবশেষে হারের বৃত্ত ভেঙে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে জিতলো বাংলাদেশ।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ও বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয় (উইকেটে): ৪৫ ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এটা বাংলাদেশের ১১তম জয়। কিউইদের বিপক্ষে ৯ উইকেটের জয়টিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় (উইকেট)। আগের বড় জয়টি ছিল ৭ উইকেটে, ২০০৮ সালে মিরপুরে। বিদেশের মাটিতে এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়। আগের জয়টিও অবশ্য ৯ উইকেটে। ২০২২ সালে সেঞ্চুরিয়নে ১৫৫ রান তাড়ায় ৯ উইকেটে জেতে তামিম ইকবালের দল।
বল হাতে রেখে জেতা: সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে জেতার দিক থেকে এটা বাংলাদেশের তৃতীয় বড় জয়, বিদেশের মাটিতে সরচেয়ে বড়। আজ ২০৯ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় সফরকারীরা। বল হাতে রেখে জেতার দিক থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, ২০০৯ সালে চট্টগ্রামে ২২৭ বল বাকি থাকতেই বিজয় নিশান ওড়ায় ঘরের মাঠের দলটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে, গত মার্চে সিলেটে বাংলাদেশ ১০ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে ২২১ বল হাতে রেখে।
দ্বিতীয়বারের মতো পেসারদের ১০ উইকেট: বাংলাদেশের পেসারদের আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে কিউইরা। শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব ও সৌম্য সরকার; বাংলাদেশের তিন পেসারই ৩টি করে উইকেট নেন। বাকি উইকেটটি নেন মুস্তাফিজুর রহমান। ওয়ানডেতে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিপক্ষের সব উইকেট নিলেন বাংলাদেশের পেসাররা। গত মার্চে প্রথমবারের মতো এই কীর্তি গড়েন তারা। সিলেটে আয়ারল্যান্ডকে ১০১ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পথে ১০ উইকেট শিকার করেন বাংলাদেশের তিন পেসার হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেন। হাসান ৫টি, তাসকিন ৩টি ও এবাদত ২টি উইকেট নেন। শরিফুল-তানজিমরা এবার চারজন মিলে নিলেন প্রতিপক্ষের সব উইকেট।
নিউজিল্যান্ডকে ১০০ রানের আগেই গুটিয়ে দেওয়া: ঐতিহাসিক জয় তুলে নেওয়ার দিনে নিউজিল্যান্ডকে ৯৮ রানেই গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ, পেস আগুনে দিক হারানো দলটি ৩১.৪ ওভারেই অলআউট হয়। কিউইদের এতো কম রানে কখনই অলআউট করতে পারেনি বাংলাদেশ। অর্থাৎ, ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটাই তাদের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। এরআগে তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ ছিল ১৬২। মিরপুরে বাংলাদেশের দেওয়া ২৬৬ রানের জবাবে হ্যাটট্রিক হিরো রুবেল হোসেনের তোপে বৃষ্টি আইনে ৪৩ রানে হেরেছিল কিউইরা। ওয়ানডেতে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো প্রতিপক্ষকে ১০০ রানের নিচের অলআউট করলো বাংলাদেশ। এর আগে জিম্বাবুয়েকে ৪৪ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬১ রানে গুটিয়ে দেয় তারা।