জন্মদিনে চেনা রোনালদোর অজানা কথা
আজ ৩৫-এ পা রাখলেন ফুটবলের মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ফুটবল ইতিহাসের তিনিই একমাত্র খেলোয়াড়, ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ, স্প্যানিশ লা লীগা ও ইতালিয়ান সিরি আ- তিনটি শীর্ষ পেশাদার লীগে অন্তত ৫০টি করে গোল করার রেকর্ড রয়েছে যার। তবে কীর্তির শেষ নেই রোনালদোর। ক্যারিয়ারে এ পর্যন্ত করেছেন ৭২২ গোল। সিরি আ-তে করেছেন টানা ৯ ম্যাচে গোলের রেকর্ড। দুনিয়াজুড়ে শেষ নেই তার অনুরাগীরও। কিন্তু এই পর্তুগিজ ফুটবল জাদুকরের ব্যক্তিজীবনের কতটুকুই আমরা জানি?
রোনালদোর নিজের ভাষ্য, “আমার দিকে তাকিয়ে অনেকেই ভাবে, আমাকে চেনে; অথচ তারা চেনে না মোটেও। ‘আসল’ আমি একজন বিনয়ী ও অনুভূতিশীল মানুষ। অন্যের খোঁজ রাখা, অন্যের উপকারে আসতে চাওয়া মানুষ।”
চলুন ‘আসল’ রোনালদোর কিছু ঘটনা জানা যাক-
১. খেলার মাঠে তাকে মাঝে মধ্যেই রেগে যেতে দেখা যায়। এই রাগ তার সহজাত অভিব্যক্তি। তিনি যখন ১৪ বছরের কিশোর, কথাবার্তায় আঞ্চলিকতার টোন থাকায় স্কুলে এক শিক্ষক খুব হাসাহাসি করেছিলেন। মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারেননি রোনালদো। রাগে চেয়ার ছুড়ে মেরেছিলেন। পরিণামে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাকে। এজন্য অবশ্য মা মারিয়া ডলোরেস স্পিনোলা ডস সান্তোস তাকে শাস্তি দেননি। বরং মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, স্কুল নিয়ে অত মাথা ঘামানোর কিছু নেই। বরং তার আসল প্রতিভা ফুটবলেই। তখন থেকেই পেশাদার ফুটবলার হওয়ার দিকে রোনালদো পুরো মনোযোগ দেন।
২. অনেকের মতেই ফুটবলের সর্বকালের সবচেয়ে স্টাইলিশ ফুটবলার তিনি। অথচ তার শরীরে কোনো ট্যাটু নেই। কেন? ১৫ বছর বয়সে হার্ট সার্জারি হয়েছিল তার। তখনই বুঝতে পেরেছিলেন, হাসপাতালগুলোতে রক্তের কতটা দরকার পড়ে। সেই থেকে নিজে নিয়মিত রক্ত দেন, অন্যদেরও রক্তদানে অনুপ্রাণিত করেন। তাই ট্যাটু করেননি।
৩. রোনালদো যখন জন্মান, তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন অভিনেতা রোনাল্ড রিগ্যান। নিজের এই প্রিয় অভিনেতার নামেই ছেলের নাম ‘রোনালদো’ রাখেন বাবা জোসে ডিনিস আভেইরো। মাদকাসক্তির কারণে ৫২ বছরে মারা গেছেন জোসে। বাবাকে হারিয়ে কোনোদিন মদ না খাওয়ার শপথ নিয়েছেন রোনালদো।
৪. রান্না করতে খুব ভালোবাসেন তিনি। যদিও খেলা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটে, তবু এতটুকু অবসর বের করতে পারলে, ঘরে ফিরে পছন্দের কোনো খাবার নিজেই রেঁধে ফেলেন। তাকে তাই ‘শৌখিন রাঁধুনি’ বলা যেতেই পারে।
৫. ২০০৪ সালের প্রলয়ঙ্কারি সুনামিতে ইন্দোনেশিয়ায় কোনোমতে বেঁচে যাওয়া এক তরুণের ছবি চোখে পড়েছিল রোনালদোর। তরুণটির পরনে ছিল রোনালদোর জার্সি। ‘উপরে গরম ভেতরে নরম’ এই ফুটবল তারকা সেবার নিজের খেলার সামগ্রী নিলামে তুলে ৭৫ হাজার ইউএস ডলার সাহায্য পাঠিয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়ায়। এছাড়া পৃথিবীর নানা প্রান্তেই মানবতার সেবায় অকাতরে সাহায্য করার সুনাম আছে তার। তিনি বলেন, ‘দুনিয়াকে বদলে দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না, আপনার পক্ষেও না। তবে আমরা সবাই এ কাজে সাহায্য করতে পারি। ’