গোল না করেও গোলের দাবি; সমালোচনার মুখে রোনালদো
কাতার বিশ্বকাপে উরুগুয়ের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে নিজ দল পর্তুগাল জয় পেলেও বিতর্কে জড়িয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে সতীর্থ ব্রুনো ফার্নান্দেসের ক্রসে মাথা ছুইয়ে গোল করার দাবি করলেও পরবর্তীতে দেখা যায় বলটি রোনালদো মাথা স্পর্শই করেনি।
উরুগুয়ে বনাম পর্তুগালের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচের প্রথমার্ধে দুই দল সর্বাত্মক চেষ্টা করলেও কোনো দলই গোলের দেখা পায়নি। দ্বিতীয়ার্ধের ৫৪ মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেসের ক্রসে রোনালদোর মাথার খুব কাছ দিয়ে বল চলে যায় উরুগুয়ের জালে। আর তখন রোনালদোর স্বভাবসুলভ গোল উদযাপন দেখে মনে করা হচ্ছিলো গোলটি ব্রুনোর ক্রসে নয়, বরং রোনালদোর হেডেই হয়েছে।
যদিও ফিফা প্রথমে গোলটি রোনালদোর বলেই তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে, কিন্তু বিড়ম্বনা বাঁধে যখন স্টেডিয়ামের টিভি মনিটরে গোলটি ব্রুনোর নামেই নিবন্ধিত দেখানো হয়। আর এ নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা, সমালোচনা। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, একটি গোল কোনো খেলোয়াড়ের নামে তখনই নিবন্ধিত হয় যখন সেই খেলোয়াড়ের স্পর্শে বলটি অভিমুখ পরিবর্তন করে প্রতিপক্ষের জালে জড়ায়। কিন্তু বিতর্কিত এ গোলটির রিপ্লেতে দেখা যায়, গোল হওয়ার আগে রোনালদো হেডের চেষ্টা করলেও তাতে বলের অভিমুখ পরিবর্তন না হয়েই প্রতিপক্ষের জালে জড়ায়। তাই পরবর্তীতে ফিফা অফিসিয়ালি গোলটি রোনালদো নয়, ব্রুনোর নামেই নিবন্ধিত করে।
ব্রুনোর গোলকে নিজের গোল দাবি করে রোনালদো এ উদযাপন নিয়ে দর্শকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। একজন ফুটবল সমর্থক লিখেছেন, "গোলটি কোনোভাবেই রোনালদোর গোল নয়। সে বলটি স্পর্শই করতে পারেনি। এটা ব্রুনোর গোল। গোলটি হওয়ার পর রোনালদো নিজের গোল দাবি করে যেভাবে উদযাপন করলো সেটি লজ্জার।" এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই গোলের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে রোনালদোকে নানাভাবে ট্রলও করা হচ্ছে। অন্যদিকে কিছু সংখ্যক দর্শক রোনালদোর পক্ষে দাঁড়িয়ে যুক্তি দিচ্ছেন যে, হেডের সময় বলটি হয়তো রোনালদোর চুলকে হালকা স্পর্শ করছে যা ক্যামেরায় বোঝা যাচ্ছেনা। এ নিয়ে রোনালদোর মত গ্রেট একজন খেলোয়াড়কে ট্রল করার কিছু নেই।
উরুগুয়ের বিপক্ষে ২-০ গোলে ম্যাচ জেতার ফলে ব্রাজিলের পর পর্তুগাল বিশ্বকাপের শেষ ষোলতে কোয়ালিফাই করলেও সবমিলিয়ে সময়টা ভালো যাচ্ছেনা ৩৭ বছর বয়সী রোনালদোর। বিশ্বকাপ শুরুর আগে পিয়ার্স মরগ্যানের বিতর্কিত সাক্ষাৎকারে দেয়ার পর রোনালদোর সাথে নিজ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে সম্পর্কের ইতি ঘটে। তারই ফলশ্রুতিতে বিশ্বকাপে নিজের কোন ক্লাব না থাকায় বীমা জটিলতায় পড়েন রোনালদো। পরবর্তীতে পর্তুগালের বোর্ডের সহায়তায় বীমা জটিলতার সমাধান করা হয়।
বিশ্বকাপে ঘানার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পেনাল্টিতে গোল পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে গোল ছাড়াই মাঠ ছাড়তে হয়েছে রোনালদোকে। অন্যদিকে তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে দুই গোল করে দারুণ ছন্দে রয়েছেন। বিশ্বকাপের পর টপ ক্লাবে যোগ দিতে রোনালদোর প্রয়োজন অসাধারণ এক বিশ্বকাপ; যার জন্য আপাতত অপেক্ষা করতে হবে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত।