নিজেকে নিয়ে চিন্তিত সাইফউদ্দিন
দুই-এক মাস নয়, ছয় মাস ঘরবন্দি। মন যখন বিষিয়ে ওঠার অবস্থায়, তখনই এলো খুশির খবর। প্রথমবারের মতো ডাক পড়েছে টেস্ট স্কোয়াডে। স্কিল ক্যাম্পের জন্য ২৭ জনের যে স্কোয়াড দেওয়া হয়েছে, এটাই মূলত শ্রীলঙ্কা সফরের প্রাথমিক দল। এখানে নিজের নাম দেখে খুশিতে চনমনে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
দলীয় অনুশীলনে অংশ নিতে ফেনী থেকে ঢাকায় চলে আসেন তরুণ এই অলরাউন্ডার। কিন্তু এসেই বাধার মুখে। উপসর্গ আছে এমন দুজন ক্রিকেটাররের সংস্পর্শে যাওয়ায় করোনা পরীক্ষায় 'বর্ডার লাইন পজিটিভ' হন সাইফউদ্দিন। যে কারণে দলের সঙ্গে ২০ সেপ্টেম্বর সোনারগাঁও হোটেলে ওঠা হয়নি তার।
আরও ৭ জনের মতো একাডেমি ভবনে আইসোলেশনে থাকতে হয়েছে তাকে। মিরপুর স্টেডিয়ামের মূল মাঠে দলীয় অনুশীলন চললেও সাইফউদ্দিনকে প্রস্তুতিপর্ব সারতে হয়েছে একাডেমি মাঠে। অবশেষে বন্দিদশা কেটেছে। চারদিনের আইসোলেশন শেষে বুধবার দলীয় অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন তিনি।
এতোদিন পরে চিরচেনা মাঠে সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলন, শুরুর আগেই যেন মন ভরে যাচ্ছিল তার। বাংলাদেশ অলরাউন্ডার বলেছেন, '৬-৭ মাস পর দলের সাথে মিরপুর গ্রাউন্ডে, খুবই আনন্দিত আমি। প্রথমবারের মত সেন্টার উইকেটে বল করতে পেরে উচ্ছ্বসিত।'
'আরও কিছুদিন সময় পাব। তো যতটুকু ওভারকাম করা যায়, নিজেকে উন্নত করা যায়, এসব জিনিস নিয়ে কাজ করব। যেহেতু আমি প্রথমবারের মতো টেস্ট স্কোয়াডে ডাক পেয়েছি, খুবই আনন্দিত আমি। চেষ্টা করব নিজের সেরাটা দেওয়ার এবং যতটুকু পারি শেখার।' যোগ করেন সাইফউদ্দিন।
মাঠে ফেরার উচ্ছ্বাস কাজ করলেও আছে অস্বস্তিও। লকডাউনে ফেনীতে নিজ উদ্যোগে মাঠে রানিং করেছেন, নিয়মিত ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। ব্যাটিংও করেছেন কিছুটা। কিন্তু বোলিং অনুশীলন করা হয়নি। দুই-তিন দিন ধরে বোলিং করে অস্বস্তিই কাজ করছে তার মধ্যে। ছন্দ হারিয়ে কিছুটা হতাশই তরুণ এই ক্রিকেটার।
সাইফউদ্দিন বলেন, 'আমি ফেনীতে ছিলাম। ফিটনেসের কাজ করতে পেরেছি কিন্তু স্কিল নিয়ে অন্য খেলোয়াড়দের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছি। ব্যাটিংটা যতটুকু পেরেছি পাকার মধ্যে করেছি, বোলিংটা একদমই করতে পারিনি। যে কারণে আজকেও বোলিং করেছি, গত দুইদিনও বোলিং করেছি। ছন্দ পেতে আরও সময় লাগবে। কিছুটা অস্বস্তি বোধ করছি আমি। তারপরও আশাবাদী আরও কিছুদিন বোলিং করতে পারলে হয়তো আগের রূপে ফিরে আসতে পারব।'
সবার মতো সাইফউদ্দিনেরও স্বপ্ন বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট খেলা। দেশের হয়ে ২২টি ওয়ানডে ও ১৫টি টি-টোয়েন্টি খেলা এই ক্রিকেটার সাদা পোশাকে নিজের সেরাটা নিংড়ে দিতে চান। কিন্তু এ পথে স্কিল নিয়ে কিছুটা চিন্তায় তিনি। নিজেকে ফিট করে তোলাসহ স্কিলে নিজেকে উন্নত করার কাজে মন লাগাবেন তিনি।
সাইফউদ্দিন বলেন, 'প্রতিটা ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে টেস্ট ক্রিকেট খেলা, আমিও ব্যতিক্রম নই। সুযোগ পেলে চেষ্টা থাকবে ভালো কিছু করার। আমার এখন সবচেয়ে বড় লক্ষ্য নিজেকে ফিট করা, স্কিল উন্নতি করা। আমি কিছুটা চিন্তিত আমার স্কিল নিয়ে। আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটে ডমিনেট করতে যেভাবে অনুশীলন করতে হয়, প্রায় ৬-৭ মাস আমি সেভাবে বোলিং, ব্যাটিং করতে পারিনি। তারপরও যদি শ্রীলঙ্কায় যাই, সেখানে যে সময়টা পাব, নিজেকে মেলে দেওয়ার চেষ্টা করব।'