বিশ্বকাপে আরব বসন্ত
আরব্য রজনীর গল্পের কথা শুনেছে কমবেশি সবাই। কিংবদন্তির সেই রূপকথার গল্পের কতটুকু সত্য সেটা নিয়েও তর্ক-বিতর্কের শেষ নেই। তবে এবার কাতার বিশ্বকাপে যা করে দেখালো সৌদি আরব, সেটা যে আরব্য রজনীর পাতায় আরেকটা পৃষ্ঠা যোগ করল, তাতে কিন্তু কোনো সন্দেহই নেই।
বিশ্বকাপের ফেভারিট আর্জেন্টিনাকে ২-১ ব্যবধানে হারানোর পরে আনন্দে ভাসছে গোটা সৌদি আরব, একদিনের সরকারি ছুটিও ঘোষণা করেছে তাদের সরকার। তবে শুধুমাত্র সৌদি আরবই নয়, আরব অঞ্চলের অধিভুক্ত অন্যান্য দেশগুলোও মেতেছে এই উল্লাসের জোয়ারে।
কাতার বিশ্বকাপে এবার অংশগ্রহণ করছে ৪ টি আরব দেশ। স্বাগতিকদের সাথে আছে সৌদি আরব, তিউনিশিয়া এবং মরক্কো। এর মধ্যে কাতার এবং সৌদি আরব পাশাপাশি দেশ। তিউনিশিয়া এবং মরক্কো আফ্রিকান অঞ্চলের। সৌদি আরবের জয়ের পাশাপাশি তিউনিশিয়াও রুখে দিয়েছে আরেক ইউরোপিয়া পরাশক্তি ডেনমার্ককে।
বিশ্বকাপের শুরুতেই আরব দেশগুলোর এমন সাফল্যে অভিভূত তাদের সমর্থকেরা। ৪ দলের প্রায় সবার গ্রুপেই তারা সবচেয়ে কম শক্তির দল। কোনো ম্যাচে জয়ের আশা না করেই তাদেরকে সমর্থন দিতে এসেছেন ভক্তরা। কোনো প্রত্যাশা ছাড়াই এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এবং ফলাফল দেখে আনন্দের মাত্রাটাও তাই একটু বেশিই তীব্র।
কাতারের পাশের দেশ হওয়ায় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে স্টেডিয়ামে সৌদি সমর্থকদের আধিক্য দেখা গেছে। ম্যাচের কোনো মুহূর্তে সৌদি আক্রমণ করলেই শোনা যাচ্ছিল তাদের গর্জন, আর দুই গোল করার পর তো কান পাতাই দায় ছিল।
ডেনমার্কের বিপক্ষে তিউনিশিয়াকে সমর্থন দিতে এসেছেন আলজেরিয়ানরাও। পাশের দেশ হওয়ার সাথে সাথে আরবীয় দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে ছুটে এসেছেন তারা। মরক্কোর বিশ্বকাপ শুরু হয়নি এখনও। স্বাগতিক কাতারই কেবল হতাশ করেছে তাদের সমর্থকদের।
তবে যেকোনো একটি দলের সাফল্যেই যেভাবে উদযাপন করছে পুরো আরব বিশ্ব, তাতে সামনের দিনগুলোতে আবারও কেউ অঘটন ঘটিয়ে দিলে সেটির মাত্রা কেমন হবে তা ভাবাই যাচ্ছে না! চলতে থাকুক আরবের এই জয়যাত্রা, অব্যাহত থাকুক ভক্ত- সমর্থকদের এই স্বপ্নের যাত্রা।