জাপানের জয়ে এশিয়ার সূর্যোদয়, হেরেও নক-আউটে স্পেন
কাতার বিশ্বকাপ চমক দিতে কার্পণ্য করছে না। নক-আউট পর্বে যেতে স্পেনের বিপক্ষে জিতলে তো বটেই, ড্র করলেও জাপানের সুযোগ থাকতো। পিছিয়ে পড়েও দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২-১ গোলের ব্যবধানে জিতে নক-আউটে উঠেছে সূর্যোদয়ের দেশটি।
স্পেন এবং জার্মানির গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নক-আউট পর্বে উঠেছে জাপান! কাতারে এশিয়ার সূর্য উঠিয়েছে সূর্যোদয়ের দেশটি। দুই ইউরোপিয়ান পরাশক্তি এবং মিলিতভাবে ৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি ও স্পেনকে হারিয়েছে হাজিমে মরিয়াসুর দল।
ফুটবলটা যে দিনশেষে গোলেরই খেলা, তা আবারও প্রমাণিত হলো। নয়তো ম্যাচে ৮৩% সময় বল দখলে রেখে, ১০৫৮ টি পাস খেলে আর ১২ বার গোলের প্রচেষ্টা করা স্পেন কেন হারবে ২২৮ পাস আর ৬ বার গোলের চেষ্টা করা জাপানের কাছে!
কারণ এতো কিছু করেও জাপানের জালে একবারই বল জড়াতে পেরেছে স্পেন, বিপরীতে কাজের কাজ করে স্পেনের রক্ষণ দুইবার এলেমেলো করেছে জাপান। কাতারের খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথমার্ধে জাপানকে পাত্তা দেয়নি স্পেন, দলে কয়েকটি পরিবর্তন আনা সত্ত্বেও সাবলীল ফুটবল খেলতে থাকে লুইস এনরিকের দল।
পাসিং ফুটবলের পসরা সাজিয়ে বসে তারা, ফল স্বরূপ মাত্র ১১ মিনিটেই আজপিলিকুয়েতার ক্রস থেকে মাথা ছুঁইয়ে স্পেনকে এগিয়ে দেন আলভারো মোরাতা, গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই গোল করেন তিনি। প্রথমার্ধে জাপানের আক্রমণে তেমন ধার ছিল না। স্পেনের রক্ষণকে তেমন কোনো পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই যেন এক অন্য জাপান! একেবারে আকাশ-পাতাল পার্থক্য দেখা গেল তাদের খেলায়। শুরু থেকেই স্পেনকে চেপে ধরে ব্লু সামুরাইরা। ফলও পেয়ে যায় খুব দ্রুতই। স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমনের বাজে ক্লিয়ারেন্স থেকে বক্সের বাইরে বল পান জার্মানির বিপক্ষে সমতা ফেরানো দোয়ান। বল পেয়েই শট নেনে তিনি, সিমনের হাতে লেগে জালে জড়ায় সেটি, সমতায় ফেরে জাপান।
সমতায় ফিরেই যেন আরো ক্ষেপে উঠে জাপান, স্পেনকে রীতিমতো অতিষ্ঠ করে ফেলে তারা, জাপানের প্রেসিংয়ের মুখে আবারও বল হারায় স্পেন, এবার দোয়ানের ক্রস দাগের বাইরে যাওয়ার আগে কোনোরকম ভেতরে রাখেন মিতোমা, সেটিতে পা ছুঁইয়ে জাপানকে এগিয়ে দেন তানাকা। যদিও প্রথমে লাইসম্যান বল দাগের বাইরে চলে গিয়েছে ভেবে গোল দেননি, ভিএআর চেক করার পর গোলের সিদ্ধান্ত দেন রেফারি।
গোল খেয়ে বিপাকে পড়ে স্পেন, কারণ গ্রুপের অপর ম্যাচে জার্মানিকে হারাতে পারলে কোস্টারিকা হতো নক-আউটে জাপানের সঙ্গী। স্পেনের দরকার ছিল ড্র। আপ্রাণ চেষ্টা করেও আর গোল শোধ দিতে পারেনি লা ফুরিয়া রোজারা। অপর ম্যাচে জার্মানি কোস্টারিকাকে হারানোয় নিজেদের ম্যাচ হেরেও নক-আউটে উঠে স্পেন।
গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন জাপান নক-আউটে মোকাবেলা করবে ক্রোয়েশিয়াকে, অপরদিকে স্পেনের নক-আউটের প্রতিপক্ষ কাতারে আরব বসন্ত ঘটানো মরক্কো।